শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফের বাড়লো ছুটি (ভিডিও)
দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ফের বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ছুটি বাড়ানোর এ ঘোষণা দেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সীমিত পরিসরে এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা ভাবনা চলছে। সামনে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে তাদের জন্য এ চিন্তা ভাবনা।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের কারণে গেল ১৭ মার্চ থেকে দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ইতোমধ্যে প্রাথমিকের সমাপনী, জেএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষাও।
এসজে
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে যা জানালেন প্রতিমন্ত্রী
আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
শামসুন নাহার বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধের বিষয়ে আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তারপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে আগামীকাল শুক্রবার বা শনিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে, ২০ এপ্রিল চলমান তাপপ্রবাহে শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭ দিনের ছুটি ঘোষণা করে মাউশি। এর ফলে আগামী ২৮ এপ্রিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা।
এরপর তীব্র তাপদাহের কারণে বন্ধ ঘোষণা করা হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের ক্লাস। পরবর্তী তারিখ ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহে ক্লাস বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয়।
এ ছাড়া তীব্র গরমের কারণে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। এ ছাড়া জবি সব ধরনের পরীক্ষা চলতি সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে।
এদিকে সারাদেশে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এর মধ্যে আরও তিনদিন হিট অ্যালার্টের মেয়াদ ফের বাড়িয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পুরো এপ্রিল মাস জুড়ে তাপপ্রবাহ কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। বৃহস্পতিবার আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত তাপপ্রবাহ নিয়ে জারি করা এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
চার নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রজ্ঞাপন
টানা তাপপ্রবাহের কারণে ঘোষিত দীর্ঘায়িত ছুটি শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল)। চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যেই পুরোদমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চারটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন থেকে সপ্তাহের ছয় দিন খোলা থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই হিসেবে শনিবারও খোলা থাকবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অন্যান্য কর্মদিবসের মতোই পুরোদমে ক্লাসও চলবে এ দিনে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শনিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।
শনিবার শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার যুক্তিস্বরূপ এতে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ এবং অন্যান্য কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে যে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা পূরণ এবং নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী শিখন ফল অর্জনের জন্য পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহের শনিবারও শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।
শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার এ নির্দেশনা ছাড়াও প্রজ্ঞাপনের অন্য তিন নির্দেশনা হলো-
১. আগামী ২৮ এপ্রিল রোববার থেকে যথারীতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে এবং শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
২. তাপপ্রবাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে।
৩. শ্রেণি কার্যক্রমের যে অংশটুকু শ্রেণিকক্ষের বাইরে পরিচালিত হয়ে থাকে এবং শিক্ষার্থীদের সূর্যের সংস্পর্শে আসতে হয়, সেসব কার্যক্রম সীমিত থাকবে।
প্রসঙ্গত, পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষে গত ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। তবে দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দীর্ঘ ছুটি শেষেও খোলেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২১ এপ্রিল ছুটি বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার।
২৬ ও ২৭ এপ্রিল শুক্র ও শনিবার হওয়ায় আরও এক সপ্তাহ বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় আরও কিছুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি জানান অভিভাবকদের একটি অংশ। কেউ কেউ অনলাইনে ক্লাস চালুর দাবিও তোলেন।তবে সার্বিক দিক বিবেচনায় ২৮ এপ্রিল থেকে ক্লাস চালুর নির্দেশনা দিলো সরকার।
জানা গেল এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল মে মাসের ৯ থেকে ১১ তারিখের মধ্যে প্রকাশিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে তিনি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তপন কুমার সরকার বলেন, ‘ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ৯, ১০ ও ১১ মে-এই তিনটি তারিখের মধ্যে যে কোনো এক দিন ফল প্রকাশের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ওপর।’
সাধারণত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হয়ে থাকে। সে হিসাবে, মে মাসের ১১ তারিখের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার কথা।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
এবার সারা দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৮জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ জন। দেশের ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৩ হাজার ৭০০ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় এ বছর মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। ছাত্র ১ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫২৬ জন। সারাদেশের ৯ হাজার ৬৭৯টি মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীরা ৭১৮টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা দেয়।
এছাড়া বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ২০২৪ সালে মোট পরীক্ষা দিয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ৮৩১ জন, ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন। সারা দেশের ২ হাজার ৮৭৭টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৭০৯টি কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষা দিয়েছে।
সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা
তীব্র গরমের কারণে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
এর আগে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত দেশের সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসার ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরে আদালতের নির্দেশ মেনে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার যেসব জেলায় মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে
দেশের বেশির ভাগ এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। উল্টো বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে গরমের অনুভূতি আরও বাড়িয়েছে। এ কারণে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দেশের কয়েকটি জেলায় মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের জানান, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলা এবং রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর জেলার স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে।
এ ছাড়া ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলায় মঙ্গলবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ, রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে।
এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন জানিয়েছেন, সারাদেশে বহমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
এর আগে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি ঠেকাতে আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত দেশের সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসার ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে যেসব প্রতিষ্ঠানে এসি আছে এবং ‘এ’ লেভেল ও ‘ও’ লেভেলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই আদেশের বাইরে থাকবে বলে নির্দেশনায় জানানো হয়।
তাপপ্রবাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার (২৯ এপ্রিল) হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।
‘শুক্রবারেও ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত আসতে পারে’
সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবারেও ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখার সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের একেক অঞ্চলের তাপমাত্রা একেক রকম। এখন উত্তরপূর্বাঞ্চল ও হাওড় এলাকার তাপমাত্রা কম। তবে, অতি বৃষ্টিতে কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে বন্যার কারণে পাঠদান বন্ধ রাখতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ বিভিন্ন ছুটির কারণে সৃষ্ট লার্নিং গ্যাপ কমাতে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবারেও ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
তিনি বলেন, নির্বাহী বিভাগ বিভিন্ন এলাকার পাঠদানের বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। তবে, স্বপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত এলে আমাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটে। তবে, আমরা আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আপিল না করা পর্যন্ত আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলা হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ বিভিন্ন ছুটির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে শহরের চেয়ে প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর আগে সোমবার (২৯ এপ্রিল) স্বপ্রণোদিত হয়ে তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসার ক্লাস বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার স্কুল-কলেজ খোলা না বন্ধ, যা জানাল মন্ত্রণালয়
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল ও মাদরাসা বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে বুধবার (১ মে) বিকেল পর্যন্ত লিখিত আদেশ পায়নি বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীনের এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা খোলা থাকবে কি না, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো প্রশাসনিক আদেশ দেয়নি। ফলে তা নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি রয়ে গেছে।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ইস্কাটনের এজি চার্চ স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে আগামীকাল ছুটি ঘোষণা করেছে।
এ বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, হাইকোর্ট ২ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও শিক্ষা বিভাগ থেকে আপিল করা হয়নি, আবার নতুন কোনো আদেশও দেয়নি। তাই তারা বৃহস্পতিবার (২ মে) স্কুল বন্ধ রাখবেন।
এর আগে, চলমান তাপপ্রবাহে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মনির উদ্দিন। এই গরমের মধ্যে স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও এমন ঝুঁকির মধ্যে আছেন বলে আদালতকে জানান তিনি।
পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল-মাদরাসার ক্লাস আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এ ছাড়া যেসব স্কুলে এসির ব্যবস্থা আছে বা পরীক্ষা চলমান আছে সেসব স্কুলের জন্য এবং ও লেভেল, এ লেভেল পরীক্ষা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না বলেও আদেশে বলা হয়।
আদালতের এই আদেশের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধের কথা জানালেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণায় ভিন্নতা দেখা দেয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৭টি জেলার এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করে। বুধবার মে দিবসে (১ মে) সরকারি ছুটি রয়েছে। এখন পর্যন্ত আগামীকালের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। এদিকে বুধবার ও বৃহস্পতিবার আদালত বন্ধ। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যাচ্ছে না মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবারের বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো প্রশাসনিক আদেশ জারি করেনি, তাই আগামীকালও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা।
বন্ধের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের বলেন, এখন পর্যন্ত তারা আদালতের লিখিত আদেশ পাননি।
তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আপিল না করা এবং চুপ থাকা মানে আদালতকে সম্মান করা। এর মানে বোঝায় আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, যেহেতু বন্ধের বিষয়ে কোনো আদেশ হয়নি, তাই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ও নমনীয় থাকবে।