যে ৩ খাবার নারীদের অবশ্যই খাওয়া উচিত
শরীর-স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়ার কথা প্রায় সময়ই বলা হয়ে থাকে। কিন্তু কখনো কোনো খাবারের কথা বলা হয় না। কোন খাবারটি খাওয়া উচিত, আর কোনটি খাওয়া উচিত নয় সেই কথা জানানোও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য শুধু স্বাস্থ্যের উন্নতির কাজ করে না। শরীরের বিভিন্ন অসুখ থেকে রক্ষা করতেও অবদান রাখে।
নারীদের শরীরের গঠন পুরুষদের থেকে ভিন্ন রকম এবং বেশি জটিল- এমনটাই বলা হয়ে থাকে। আর এ যদি সত্য হয় তাহলে নারীদের বিশেষ যত্ন নেয়া উচিত। এবার তাহলে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি খাদ্য সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।
- টমেটো : টমেটোকে সবজি হিসেবে বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এর গুণাবলি সম্পর্কে কতটুকু জানা আছে সবার। টমেটোতে লাইপোসিন থাকে। এটি স্তন ক্যানসারকে দূরে রাখতে বেশ কার্যকর। নিয়মিত টমেটো খাওয়ার ফলে হার্টের অসুখও কম হয়।
- ওটস : হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে টমেটোর কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে হার্টের সমস্যা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। পিএমএস থেকে মনে বিভিন্ন ধরনের চাপ পড়ে থাকে। নিয়মিত টমেটো খাওয়ার ফলে এই চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ অবদান রাখে টমেটো।
- পালংশাক : পালং শাকের মতো খাবার খুবই কম আছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই শাক। নিয়মিত পালং শাক খাওয়ার ফলে শরীরে ভিটামিন এবং ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি মিটে। এছাড়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পালং শাকের অবদান অতুলনীয়। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
এসআর/
মন্তব্য করুন
গরমে হিট অফিসারের পরামর্শ
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে জনজীবন হাঁসফাঁস। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রখর রোদে পথঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। কোথাও কোথাও সড়কের পিচ গলতে শুরু করেছে। গরমের কারণে বাড়ছে হিটস্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি। ডায়রিয়াতেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এরইমধ্যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পরিস্থিতি যখন এমন, তখন স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কী করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন?
তিনি জানিয়েছেন, দায়িত্ব পেয়ে বসে নেই তিনি। চেষ্টা করে যাচ্ছেন কেন ঢাকায় তাপমাত্রা বাড়ছে তা খুঁজে বের করার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেটার চেষ্টা করছেন।
তীব্র দাবদাহ মোকাবিলায় বুশরা জানান, এই অবস্থা থেকে সবাইকে বাঁচানোর জন্য তারা নিয়মিত ‘হিট অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন’ চালাচ্ছেন। তার মতে, ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা কমাতে আরও বেশি গাছ লাগানো জরুরি।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে রাস্তার ধারে ২ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়। শুধু গাছ লাগালেই হবে না, সেগুলোর উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণও করতে হবে। নগরে বনায়ন করা খুব জরুরি। এখানে যে ফাঁকা এবং পরিত্যক্ত জায়গাগুলো আছে সেখানে সবুজায়ন করার দিকেও আমরা নজর দিয়েছি। আমাদের এখানে আরও অনেক পার্ক এবং সবুজে ঘেরা জায়গা দরকার। তাতে তাপমাত্রা যেমন কমবে, তেমনই পাখিসহ নানা প্রাণীও ফিরে আসবে।
ব্যক্তি উদ্যোগেও নগরবাসীকে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন চিফ হিট অফিসার। বুশরা বলেন, তীব্র দাবদাহে আমরা নিজেরা যদি সচেতন থাকি। আমরা যদি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আমাদের ব্যাগে পানির বোতল, টুপি, ফ্যান, ছাতার মতো জিনিসপত্র সঙ্গে রাখি, তাহলে অনেকটাই নিরাপত্তা পেতে পারি।
যে কারণে হয় হিটস্ট্রোক, প্রতিরোধে যা করবেন
প্রচণ্ড গরমে মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। আর এই পরিস্থিতিতে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এ বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকলে সহজেই সেই পরিস্থিতি সামলানো যায়। হিটস্ট্রোক বা হাইপারথার্মিয়াতে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বাড়তে থাকে। আমাদের শরীর তখন আর এই হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া তাপমাত্রাকে কন্ট্রোল করে শরীরকে ঠান্ডা করতে পারে না। এই সময় শরীরের তাপমাত্রা মাত্র ১০-১৫ মিনিটে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটেরও বেশি হয়ে যায় একে হিটস্ট্রোক বলে। এ সময় শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোক-এ মারা যায়। অনেক সময় ধীরে ধীরে এটি ঘটে থাকে, যদিও হুট করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের দেশেও এই রোগ এখন প্রায়ই দেখা দেয় কারণ প্রতিনিয়তই পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। হিটস্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ ও বাঁচার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।
হিটস্ট্রোক-এর কারণ, লক্ষণ ও এর প্রতিকার-
হিটস্ট্রোক: হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোক এক ধরনের অসুস্থতা, যা অত্যধিক গরমের কারণে হয়ে থাকে। এই অসুখে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ᱸ ফারেনহাইট-এর বেশি এবং সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোক-এ মারা যায়। অনেক সময় ধীরে ধীরে এটি ঘটে থাকে, যদিও হুট করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের দেশেও এই রোগ এখন প্রায়ই দেখা দেয় কারণ প্রতিনিয়তই পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে।
হিটস্ট্রোক কয়েকটি কারণে হতে পারে। চলুন কারণগুলো দেখে নেই-
পারিপার্শ্বিক উচ্চ তাপমাত্রা
শরীরে পানিশূন্যতা বা মিনারেলসের অভাব
কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায়, যেমন- ডাই-ইউরেটিক্স, বিটা ব্লকারস, অ্যালকোহল
হার্টের বা স্কিনের অসুখে
লক্ষণ বা উপসর্গ- হিটস্ট্রোকে প্রাথমিক কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে। গরমে হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ধরতে পারলে অনেক জটিল অবস্থা থেকে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো হিটস্ট্রোক-এ দেখা যায়
শরীরের অত্যধিক তাপমাত্রা
মাথাব্যথা
দুর্বলতা
ঝিমুনি
বমি বমি ভাব
হার্টবিট বেড়ে যাওয়া
তবে রোগীর অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে গেলে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন-
চামড়ার রং লালচে হয়ে যাওয়া
মানসিক ভারসাম্যহীনতা
হাঁটতে অসুবিধা হওয়া
চোখের মণি বড় হওয়া
বমি হওয়া
ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া
খিঁচুনি
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
প্রাথমিক চিকিৎসা-
এই গরমে কড়া রোদ ও ভিড় এড়িয়ে চলুন। যেহেতু এটি একটি জরুরি অবস্থা, তাই এর চিকিৎসাও দ্রুত হওয়া প্রয়োজন। এই রকম পরিস্থিতিতে প্রথমেই যা করা দরকার তা হলো, রোগীর শরীর ঠান্ডা করা এবং খোলা বা ফাঁকা স্থানে নিয়ে যাওয়া। ভারি পোশাক পরে থাকলে সেটা চেইঞ্জ করে পাতলা সুতি কাপড়ের পোশাক পরিয়ে দিন। ঠান্ডা বাতাসের ব্যবস্থা করুন, প্রয়োজন মনে হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিন।
রোগীর সুস্থ হতে কয়েকদিন পর্যন্ত সময় লাগবে সেটা এর তীব্রতা বা ধরনের ওপর নির্ভর করে। যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয় তাহলে হিটস্ট্রোক রোগীর মস্তিষ্ক , পেশী, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গগুলোকেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা শুধুমাত্র শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য কিছু না করে বরং পানি বা লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণের ওপর জোর দিতে বলেন।
প্রতিকার-
হেলদি ও লিকুইড খাবার রাখুন ডায়েটে: আমাদের মধ্যে যারা বাইরে রোদে কাজ করি বা এক ঘন্টার বেশি ব্যায়াম করি তাদের হিটস্ট্রোক এড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশুদ্ধ পানির কোনো বিকল্প নেই। ডাবের পানি, ফ্রেশ জুস, ঠান্ডা শরবত এগুলোও পান করতে পারেন। ভাজাপোড়া, মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। লাইট ও হেলদি ফুড বেছে নিন যাতে হজমে সমস্যা না হয়।
ব্যায়াম ভোরবেলায় করুন: তাপদাহ বিদ্যমান থাকলে ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ অবশ্যই সূর্যোদয়ের আগে বা খুব ভোরে করতে হবে।
অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন: গরমের দিনগুলোতে অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কারণ, অ্যালকোহল বা সুগার ড্রিংকগুলো শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে।
অনেক সময় শরীরে লবণ বা মিনারেলস-এর ঘাটতি দেখা যায়। সেই সময়ের জন্য সবচেয়ে উপকারী হলো ওরস্যালাইন। রোগীর পরিস্থিতি খারাপ হলে মুখে খাওয়া সম্ভব না হলে শিরার মাধ্যমে দেওয়া হয়। কিন্তু হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের ক্ষেত্রে সবসময় এটা নিরাপদ নাও হতে পারে। কারণ, স্যালাইনের সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিন সঙ্গে সঙ্গেই।
শিশু ও বয়স্কদের জন্য টিপস-
সব বয়সী মানুষের ক্ষেত্রে হিটস্ট্রোক এক রকম হলেও, বয়স্ক ও শিশুদের প্রতি আলাদা নজর রাখা জরুরি। খেয়াল রাখতে হবে যেন তাদের শরীরে কোনভাবেই পানিশূন্যতা দেখা না দেয়। যেহেতু ১-২ বছর বয়সী শিশুরা নিজেদের শারীরিক অসুবিধাগুলোর কথা বলতে পারে না। তাই গরমের দিনে তাদের বার বার পানি বা শরবত দিতে হবে। শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়তে দেয়া যাবে না। তাদের খোলামেলা জায়গায় বা প্রচুর বাতাস আছে এরকম জায়গায় রাখতে হবে।
শিশুদের মতো বয়স্কদের জন্যও খোলামেলা স্থান বাছাই করা উচিত। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের শরবত বা মিষ্টি জুস না দিয়ে পানি, ডাবের পানি এগুলো দিতে হবে।
এই গরমে আমি বা আপনি যেকোনো সময়ে হিটস্ট্রোক-এ আক্রান্ত হতে পারি। তৎক্ষণাৎ প্রতিরোধের বা মোকাবেলার উপায়গুলো জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই এই পরিস্থিতি থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারি।
দুর্ঘটনা কমাতে ফ্রান্সে প্রচারণা- ‘নারীর মতো গাড়ি চালান’
ভিক্টিম অ্যান্ড সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশন বলছে, সমাজে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী পুরুষেরা নারীদের চেয়ে নিরাপদ চালক৷ কিন্তু ফরাসি সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে ভিন্ন চিত্র৷ ফ্রান্সে গাড়ি চালানোর বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে একটি প্রচারণা চালানো হচ্ছে৷
ভিকতিম এ সিতোয়ে অ্যাসোসিয়েশন পুরুষদের একজন নারীর মতো গাড়ি চালানোর অনুরোধ করেছে৷
ভিকতিম এ সিতোয়ে সড়ক দুর্ঘটনা কবলিতদের সহায়তা প্রদান করার পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজও করে থাকে৷
ফ্রান্সে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ কী?
ফরাসি সড়ক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সালে সংঘটিত ৮৪% ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় চালকের আসনে ছিলেন পুরুষ৷ বার্ষিক প্রতিবেদনটিতে ৯৩% দুর্ঘটনার জন্য পুরুষদের মদ্যপানকে দায়ী করা হয়৷ পুরুষদের নিরাপদ চালক ভাবার যে সেক্সিস্ট ধারণা, সেটিকেও ভিক্টিম অ্যান্ড সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশন প্রত্যাখ্যান করছে৷
তাদের মতে, নারীদের গাড়ি চালানোর কৌশল অবলম্বন করলে তা মানুষকে অন্তত বেঁচে থাকতে সাহায্য করবে৷
একজন নারীর মতো গাড়ি চালান! স্লোগানে প্রচারণাটি অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি শহরের পাতাল রেলস্টেশন ও ডিজিটাল বোর্ডেও দেখা যাচ্ছে৷