জ্বর থেকে দাঁত ব্যথা, সব সমস্যা দূর করবে লবঙ্গ
লবঙ্গ শুধু মসলাই নয়, এর বাইরেও বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে প্রাকৃতিক এই উপাদান। সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়ম মেনে লবঙ্গ ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়। এবার তাহলে লবঙ্গের সেই উপকারগুলো জেনে নেয়া যাক-
- দাঁতের ব্যথায় ভুগলে একটি লবঙ্গ মুখে নিন। এবার চিবুতে থাকুন। কিছুক্ষণ পর দেখবেন ব্যথা অনেকটাই কমে গেছে।
- নানা কারণে প্রায়ই বমি বমি ভাব হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে লবঙ্গ মুখে রাখলে বা একটি গ্লাসে কয়েক ফোঁটা লবঙ্গ তেল মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
- যাদের ভাইরাস জ্বর হয়ে থাকে তাদের জন্যও লবঙ্গ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। হাল্কা গরম পানিতে ১০ ফোঁটা লবঙ্গ তেল ও মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- সর্দি-কাশি সমস্যায় লবঙ্গ খাওয়ার ফলে আরাম পাওয়া যায়। যাদের কফ রয়েছে তারাও উপকার পেয়ে থাকেন। এমনকি নিঃশ্বাসে যাদের দুর্গন্ধ বের হয় তাদের জন্য এর বিকল্প কিছু নেই।
এসআর/
মন্তব্য করুন
ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে যা যা করবেন
সারা মাস রোজার পর ঈদুল ফিতর পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরেন সবাই। জীবনের শৈশব, কৈশোর যেখানে কেটেছে, সেই আপনজনদের সঙ্গেই ঈদ উদযাপনের জন্য ছুটে যায়। তখন ফাঁকা পড়ে থাকে বাসা। তাই বাড়ি যাওয়ার আগে কিছু কাজ গুছিয়ে নিলেই ঈদের ছুটি কাটাতে পারবেন নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে। কারণ, আপনি যে বাসায় থাকেন সে বাসার নিরাপত্তার দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। এই নিরাপত্তা ঈদযাত্রার প্রস্তুতিপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
জেনে নিন, ঈদযাত্রায় যাওয়ার আগে বাসার নিরাপত্তায় আপনার কী কী করে যেতে হবে-
কাজের একটি তালিকা করুন: সবার আগে একটি তালিকা তৈরি করুন। কার জন্য কী নিতে চান, ব্যাগে কী নিতে হবে, কোন কাজগুলো আগে সারতে হবে, ঈদে কোথায় কোথায় যেতে চান, সবকিছু একটি নোটে লিখে নিন। এখন সব স্মার্টফোনেই নোট করার সুবিধা থাকে। সেটি ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার কাজগুলো করা সহজ হবে। কোনোকিছু ভুলে গেলেও তালিকা দেখে মনে করে নেওয়া যাবে।
ব্যাগ গুছিয়ে নিন : বাড়িতে যাওয়ার আগে সময় করে ব্যাগ গুছিয়ে রাখুন। নয়তো শেষ মুহূর্তে এসে গোছাতে গেলে তাড়াহুড়োয় অনেক কিছুই ভুলে ফেলে যেতে পারেন। অতিরিক্ত জিনিসপত্র টানবেন না। যতটুকু দরকার, ততটুকুই নিন। ফোনের চার্জার, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও কাগজপত্র ইত্যাদি গুছিয়ে সঙ্গে রাখুন। প্রয়োজনের সময় যেন হাতের কাছেই পাওয়া যায়।
গ্যাসের চুলা বন্ধ করুন : অনেক সময় রান্না শেষে চুলা বন্ধ করার কথা আমরা ভুলে যাই। অথবা বন্ধ করলেও সেটি ভালোভাবে বন্ধ হয় না। তাই বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে আরেকবার ভালোভাবে দেখে নিন। কারণ কোনো কারণে গ্যাস লিক হলে বদ্ধ করে বিস্ফোরণের সম্ভাবনা থাকে। তাই সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে সতর্ক থাকুন।
পানির কল বন্ধ করুন : অনেক সময় কল চালু রাখা অবস্থায় পানি চলে গেলে পরে আর বন্ধ করতে মনে থাকে না। এ ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে পানি চলে এলে তা অপচয়ের ভয় থাকে, যদি বাড়িতে কেউ না থাকে। তাই সবগুলো পানির কল ভালোভাবে বন্ধ করুন। এতে আপনি বাসায় না থাকলেও পানির অপচয় হবে না।
সুইচ বন্ধ রাখুন : বাড়ির ইলেকট্রিক বাতি, ফ্যান, কম্পিউটার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদির সুইচ বন্ধ করে বের হবেন। সবগুলো প্লাগ খুলে রাখার চেষ্টা করবেন। যদি ফ্রিজ খালি থাকে তবে সেটিও পরিষ্কার করে বন্ধ করে রেখে যান। আর যদি খালি না থাকে তবে চালু অবস্থায়ই রাখতে হবে, নয়তো ভেতরে থাকা খাবার নষ্ট হবে।
ঘরের একটি ছবি তুলে নিন : সবকিছু শেষে বাড়ির সবগুলো কক্ষের একটি করে ছবি তুলে নিন। এতে কোনো ধরনের অসঙ্গতি থাকলে তা চোখে পড়বে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। তাই সতর্কতার অংশ হিসেবে বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে ছবি তুলে রাখুন।
ঘর ভালোভাবে তালাবদ্ধ করুন : শুধু বাড়ির প্রধান দরজায়ই নয়, সবগুলো দরজা ও জানালায় ভালোভাবে লক করুন। লক করা হলে আরেকটার টেনে দেখবেন ভালোভাবে লক হয়েছে কি না। সবগুলো তালার চাবি সঙ্গে রাখুন। খেয়াল রাখবেন যেন বেড়াতে গিয়ে চাবি হারিয়ে না যায়। নয়তো ফিরে এসে বিপদে পড়তে হতে পারেন।
পথের খাবার : একেবারে খালি পেটে ভ্রমণ করবেন না। আবার খুব ভরা পেটেও নয়। খেয়ে ভ্রমণের সময় তেল-মসলাযুক্ত না খেয়ে হালকা খাবার খান। পথে খাওয়ার জন্য (ইফতার বা সেহরি) রাস্তার খোলা খাবার কিনে না খেয়ে সঙ্গে রাখুন পানি, ফল ও হালকা বিস্কুট বা ক্র্যাকার্স।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়
দেশের অনেক জায়গায় বইছে তাপপ্রবাহ। হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। হঠাৎ তাপমাত্রার উর্ধ্বগতির এমন পরিস্থিতিতে হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এটি প্রতিরোধে কী কী করা উচিত, তা ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি।
প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য, হিট স্ট্রোকের সর্বোচ্চ ঝুঁকি আছে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, শ্রমজীবী ব্যক্তি (যেমন- রিকশাচালক, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক), অতিরিক্ত ওজন থাকা ব্যক্তি, শারীরিকভাবে অসুস্থ, বিশেষত হৃদরোগ বা উচ্চরক্তচাপ থাকা ব্যক্তির।
চিকিৎসকেরা বলেন, হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে শরীর হাইড্রেট রাখার কোনো বিকল্প নেই। তাপমাত্রা বেশি হলে ঢিলেঢালা এবং হালকা রঙের পোশাক পরে ঘরের বাইরে যেতে হবে। সূর্যের আলো থেকে চোখকে রক্ষা করতে সানগ্লাস ব্যবহার করার। রোদে থাকতে হলে প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
করণীয়:
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু করণীয় জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি, জেনে নিন করণীয়গুলো।
দিনের বেলায় যথাসম্ভব বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন, রোদ এড়িয়ে চলুন।
বাইরে বের হলে ছাতা, টুপি বা ক্যাপ বা কাপড় দিয়ে মাথা যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন।
হালকা রঙের, ঢিলেঢালা এবং সম্ভব হলে সুতির জামা পরুন।
প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং বাসি, খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
দিনের বেলায় একটানা শারীরিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন।
সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা নিন বা গোসল করুন।
প্রস্রাবের রঙের দিকে নজর রাখুন। তা হলুদ বা গাঢ় হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়ান।
ঘরের পরিবেশ যেন অতিরিক্ত গরম বা ভ্যাপসা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বেশি অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
গরমে হিট অফিসারের পরামর্শ
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে জনজীবন হাঁসফাঁস। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রখর রোদে পথঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। কোথাও কোথাও সড়কের পিচ গলতে শুরু করেছে। গরমের কারণে বাড়ছে হিটস্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি। ডায়রিয়াতেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এরইমধ্যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পরিস্থিতি যখন এমন, তখন স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কী করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন?
তিনি জানিয়েছেন, দায়িত্ব পেয়ে বসে নেই তিনি। চেষ্টা করে যাচ্ছেন কেন ঢাকায় তাপমাত্রা বাড়ছে তা খুঁজে বের করার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেটার চেষ্টা করছেন।
তীব্র দাবদাহ মোকাবিলায় বুশরা জানান, এই অবস্থা থেকে সবাইকে বাঁচানোর জন্য তারা নিয়মিত ‘হিট অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন’ চালাচ্ছেন। তার মতে, ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা কমাতে আরও বেশি গাছ লাগানো জরুরি।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে রাস্তার ধারে ২ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়। শুধু গাছ লাগালেই হবে না, সেগুলোর উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণও করতে হবে। নগরে বনায়ন করা খুব জরুরি। এখানে যে ফাঁকা এবং পরিত্যক্ত জায়গাগুলো আছে সেখানে সবুজায়ন করার দিকেও আমরা নজর দিয়েছি। আমাদের এখানে আরও অনেক পার্ক এবং সবুজে ঘেরা জায়গা দরকার। তাতে তাপমাত্রা যেমন কমবে, তেমনই পাখিসহ নানা প্রাণীও ফিরে আসবে।
ব্যক্তি উদ্যোগেও নগরবাসীকে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন চিফ হিট অফিসার। বুশরা বলেন, তীব্র দাবদাহে আমরা নিজেরা যদি সচেতন থাকি। আমরা যদি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আমাদের ব্যাগে পানির বোতল, টুপি, ফ্যান, ছাতার মতো জিনিসপত্র সঙ্গে রাখি, তাহলে অনেকটাই নিরাপত্তা পেতে পারি।
যে কারণে হয় হিটস্ট্রোক, প্রতিরোধে যা করবেন
প্রচণ্ড গরমে মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। আর এই পরিস্থিতিতে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এ বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকলে সহজেই সেই পরিস্থিতি সামলানো যায়। হিটস্ট্রোক বা হাইপারথার্মিয়াতে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বাড়তে থাকে। আমাদের শরীর তখন আর এই হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া তাপমাত্রাকে কন্ট্রোল করে শরীরকে ঠান্ডা করতে পারে না। এই সময় শরীরের তাপমাত্রা মাত্র ১০-১৫ মিনিটে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটেরও বেশি হয়ে যায় একে হিটস্ট্রোক বলে। এ সময় শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোক-এ মারা যায়। অনেক সময় ধীরে ধীরে এটি ঘটে থাকে, যদিও হুট করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের দেশেও এই রোগ এখন প্রায়ই দেখা দেয় কারণ প্রতিনিয়তই পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। হিটস্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ ও বাঁচার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।
হিটস্ট্রোক-এর কারণ, লক্ষণ ও এর প্রতিকার-
হিটস্ট্রোক: হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোক এক ধরনের অসুস্থতা, যা অত্যধিক গরমের কারণে হয়ে থাকে। এই অসুখে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ᱸ ফারেনহাইট-এর বেশি এবং সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোক-এ মারা যায়। অনেক সময় ধীরে ধীরে এটি ঘটে থাকে, যদিও হুট করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের দেশেও এই রোগ এখন প্রায়ই দেখা দেয় কারণ প্রতিনিয়তই পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে।
হিটস্ট্রোক কয়েকটি কারণে হতে পারে। চলুন কারণগুলো দেখে নেই-
পারিপার্শ্বিক উচ্চ তাপমাত্রা
শরীরে পানিশূন্যতা বা মিনারেলসের অভাব
কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায়, যেমন- ডাই-ইউরেটিক্স, বিটা ব্লকারস, অ্যালকোহল
হার্টের বা স্কিনের অসুখে
লক্ষণ বা উপসর্গ- হিটস্ট্রোকে প্রাথমিক কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে। গরমে হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ধরতে পারলে অনেক জটিল অবস্থা থেকে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো হিটস্ট্রোক-এ দেখা যায়
শরীরের অত্যধিক তাপমাত্রা
মাথাব্যথা
দুর্বলতা
ঝিমুনি
বমি বমি ভাব
হার্টবিট বেড়ে যাওয়া
তবে রোগীর অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে গেলে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন-
চামড়ার রং লালচে হয়ে যাওয়া
মানসিক ভারসাম্যহীনতা
হাঁটতে অসুবিধা হওয়া
চোখের মণি বড় হওয়া
বমি হওয়া
ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া
খিঁচুনি
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
প্রাথমিক চিকিৎসা-
এই গরমে কড়া রোদ ও ভিড় এড়িয়ে চলুন। যেহেতু এটি একটি জরুরি অবস্থা, তাই এর চিকিৎসাও দ্রুত হওয়া প্রয়োজন। এই রকম পরিস্থিতিতে প্রথমেই যা করা দরকার তা হলো, রোগীর শরীর ঠান্ডা করা এবং খোলা বা ফাঁকা স্থানে নিয়ে যাওয়া। ভারি পোশাক পরে থাকলে সেটা চেইঞ্জ করে পাতলা সুতি কাপড়ের পোশাক পরিয়ে দিন। ঠান্ডা বাতাসের ব্যবস্থা করুন, প্রয়োজন মনে হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিন।
রোগীর সুস্থ হতে কয়েকদিন পর্যন্ত সময় লাগবে সেটা এর তীব্রতা বা ধরনের ওপর নির্ভর করে। যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয় তাহলে হিটস্ট্রোক রোগীর মস্তিষ্ক , পেশী, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গগুলোকেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা শুধুমাত্র শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য কিছু না করে বরং পানি বা লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণের ওপর জোর দিতে বলেন।
প্রতিকার-
হেলদি ও লিকুইড খাবার রাখুন ডায়েটে: আমাদের মধ্যে যারা বাইরে রোদে কাজ করি বা এক ঘন্টার বেশি ব্যায়াম করি তাদের হিটস্ট্রোক এড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশুদ্ধ পানির কোনো বিকল্প নেই। ডাবের পানি, ফ্রেশ জুস, ঠান্ডা শরবত এগুলোও পান করতে পারেন। ভাজাপোড়া, মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। লাইট ও হেলদি ফুড বেছে নিন যাতে হজমে সমস্যা না হয়।
ব্যায়াম ভোরবেলায় করুন: তাপদাহ বিদ্যমান থাকলে ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ অবশ্যই সূর্যোদয়ের আগে বা খুব ভোরে করতে হবে।
অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন: গরমের দিনগুলোতে অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কারণ, অ্যালকোহল বা সুগার ড্রিংকগুলো শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে।
অনেক সময় শরীরে লবণ বা মিনারেলস-এর ঘাটতি দেখা যায়। সেই সময়ের জন্য সবচেয়ে উপকারী হলো ওরস্যালাইন। রোগীর পরিস্থিতি খারাপ হলে মুখে খাওয়া সম্ভব না হলে শিরার মাধ্যমে দেওয়া হয়। কিন্তু হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের ক্ষেত্রে সবসময় এটা নিরাপদ নাও হতে পারে। কারণ, স্যালাইনের সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিন সঙ্গে সঙ্গেই।
শিশু ও বয়স্কদের জন্য টিপস-
সব বয়সী মানুষের ক্ষেত্রে হিটস্ট্রোক এক রকম হলেও, বয়স্ক ও শিশুদের প্রতি আলাদা নজর রাখা জরুরি। খেয়াল রাখতে হবে যেন তাদের শরীরে কোনভাবেই পানিশূন্যতা দেখা না দেয়। যেহেতু ১-২ বছর বয়সী শিশুরা নিজেদের শারীরিক অসুবিধাগুলোর কথা বলতে পারে না। তাই গরমের দিনে তাদের বার বার পানি বা শরবত দিতে হবে। শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়তে দেয়া যাবে না। তাদের খোলামেলা জায়গায় বা প্রচুর বাতাস আছে এরকম জায়গায় রাখতে হবে।
শিশুদের মতো বয়স্কদের জন্যও খোলামেলা স্থান বাছাই করা উচিত। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের শরবত বা মিষ্টি জুস না দিয়ে পানি, ডাবের পানি এগুলো দিতে হবে।
এই গরমে আমি বা আপনি যেকোনো সময়ে হিটস্ট্রোক-এ আক্রান্ত হতে পারি। তৎক্ষণাৎ প্রতিরোধের বা মোকাবেলার উপায়গুলো জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই এই পরিস্থিতি থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারি।