মোবাইল চশমা ব্যাগ থেকেও ছড়াতে পারে করোনা
মোবাইল ফোন, চশমা বা বাজার বা পার্স ব্যাগের মাধ্যমে করোনা-সহ নানা ধরনের ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরেই হাত ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ফোনও খুব ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। আর মাছের বাজারের ব্যাগে যদি রক্তের দাগ লেগে থাকে, তাহলে বাড়িতে ফিরেই সেই ব্যাগটিকে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। আর ব্যবহারের পার্স ব্যাগও ধুয়ে মুছে নিন।
ভারতের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন, চশমার কাচ ও ফ্রেম ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর চশমা পরিষ্কার করার জন্য যে বিশেষ লোশন আছে, তা দিয়ে কাচ ও ফ্রেম খুব ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। যে কোনও কাপড় দিয়ে মুছলে হবে না। চশমার খাপে যে কাপড় দেয়া থাকে, তা দিয়েই মুছতে হবে।
এস
মন্তব্য করুন
যে অভ্যাসে নিয়ন্ত্রণে থাকবে উচ্চ রক্তচাপ
হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় উচ্চ রক্তচাপ। অনেকসময় তা উপসর্গহীন হতে পারে। সবসময় উল্লেখযোগ্য লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু তাতে ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ জরুরি। কিছু অভ্যাস আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারে। স্বাস্থ্যকর কিছু অভ্যাস আয়ত্ত করতে পারলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াকার ফ্যামিলি কেয়ারের চিকিৎসক ডা. রজার্স ওয়াকার। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই অভ্যাস সম্পর্কে-
ফল, শাকসবজি খাওয়া : ফল এবং শাকসবজি খুবই উপকারী। উদ্ভিদে ভিটামিন, ফাইবার, ফাইটোকেমিক্যালস এবং বায়োফ্ল্যাভোনয়েডসহ অনেক যৌগ থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন কোয়েরসেটিন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বায়োফ্ল্যাভোনয়েড যা আপেল, পেঁয়াজসহ আরও অনেক ফল এবং সবজিতে রয়েছে। কোয়েরসেটিন রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া ফল ও সবজি প্রচুর ফাইবার সরবরাহ করে। ফাইবার রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। মটরশুঁটি, নাশপাতি এবং মসুর ডালে পাবেন পর্যাপ্ত ফাইবার।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন : প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরি। আপনি এটিকে সারা দিনে ১০ মিনিটের ছোট অংশে ভাগ করে নিতে পারেন। ব্যায়াম কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এমনটাই বলছে, আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন। সুস্থ থাকতে নিয়মিত রুটিন করে হাটতে হবে।
লবণ এড়িয়ে চলুন : রক্তচাপ বাড়ায় এমন খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাত এবং ভারী মিহি খাবার উল্লেখযোগ্য। সুপারশপগুলোতে থাকা স্বাস্থ্যকর টিনজাত স্যুপেও থাকতে পারে বাড়তি লবণ। এ ধরনের খাবার কেনার আগে সবসময় উপাদান লেবেল চেক করুন। লবন খাওয়া কমিয়ে দিন। টোকা লবনতো নয়ই।
বেশি করে পানি পান করা জরুরি : পানির অপর নাম জীবন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানে যেমন শরীর ভালো থাকে, তেমনি রক্তচাপ স্বাভাবিক করতেও সহায়তা করে। পানি পানের অভ্যাস আপনাকে সুস্থ রাখবে। বাইরে বের হওয়ার সময় পানির বোতল সঙ্গে রাখার অভ্যাস করুন। অফিসে কাজের ডেস্কেও পানি ভর্তি বোতল রাখুন। কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করুন। দেখবেন শরীর সতেজ লাগছে।
পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা জরুরি : ঘুম কোনও বিলাসিতা নয়। শরীরের প্রতি রাতে ঘুমের প্রয়োজন, যদি আপনি ক্রমাগত কম ঘুমিয়ে থাকেন তবে এটি আপনার রক্তচাপকে অনিয়ন্ত্রিত করে দিতে পারে। প্রতি রাতে সাত থেকে নয় ঘন্টা ঘুমানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। একটি ঘুমানোর রুটিন তৈরি করুন।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা : স্ট্রেস নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়। এতে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, ধ্যান, বই পড়া বা প্রকৃতিতে সময় কাটানোর মতো কাজগুলো করে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।
রোজায় যে নিয়মে খাবেন ইসবগুলের ভুসি
সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে এক গ্লাস ইসবগুলের শরবত রোজাদারকে শক্তি দেয়। ইসবগুলের শরবত শরীরের নিস্তেজ ভাব দূর করতে সাহায্য করে। সারা দিনের ক্লান্তি দূর করার জন্য স্বাস্থ্যসচেতন রোজাদাররা নিয়মিত ইসবগুলের শরবত খেয়ে থাকেন। এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ আরও বিভিন্ন রোগ সারিয়ে তোলে।
চলুন জেনে নিই ইসুবগুলের উপকারিতা সম্পর্কে-
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ: ইসবগুলে রয়েছে অনেকগুলো পুষ্টি উপাদান। সেসব উপাদান শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। ১ টেবিল চামচ ইসবগুলে থাকে ৫৩ শতাংশ ক্যালোরি, শূন্য শতাংশ ফ্যাট, ১৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১৫ গ্রাম শর্করা, ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, শূন্য দশমিক ৯ মিলিগ্রাম আয়রন।
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে: ইসবগুলের ভুসি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে। এতে উপস্থিত অদ্রবণীয় ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের মল নরম করে দেয়। ফলে খুব সহজেই ইলিমিনেশন সম্ভব হয়। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি ও ১ গ্লাস কুসুম গরম দুধ পান করতে পারেন। কেউ যদি রোগটি পুষে রাখেন, তাহলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ : ডায়রিয়া প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে ইসবগুল। এটি দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দইয়ে থাকে প্রোবায়োটিক যা পাকস্থলীর ইনফেকশন সারাতে কাজ করে। এদিকে ইসবগুল তরল মলকে শক্ত করতে সাহায্য করে। ফলে ডায়রিয়া দ্রুতই সেরে ওঠে। ডায়রিয়া হলে দিনে দুইবার ভরা পেটে তিন টেবিল চামচ দই ও দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খাবেন। ইসবগুলের ভুসি খেলে তা আমাশয় থেকেও আপনাকে মুক্তি দেবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে : ইসবগুলের ভুসিতে রয়েছে জিলাটিন নামক একটি উপাদান। যা দেহে গ্লুকোজের শোষণ ও ভাঙার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে রক্তে সহজে সুগারের পরিমাণ বাড়তে পারে না। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এ ভুসি খুবই উপযুক্ত।
রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে : ইসবগুলের ভুসি খেলে অন্ত্রে একধরনের স্তর তৈরি হয়। যা কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দান করে। ফলে আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তাই হৃদরোগীদের জন্য দারুণ একটি খাবার এটি।
ওজন নিয়ন্ত্রণে : ইসবগুলের ভুসিতে ফাইবার উপস্থিত থাকায় হজম প্রক্রিয়া অনেক ধীরগতিতে হয়। তাই ক্ষুধা লাগে অনেক কম। এটি খেলে ওজন কমানো অনেক সহজ হয়ে যায়।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে : গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার অন্যতম ঘরোয়া উপায় হতে পারে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া। এটি পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালে প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে। যে কারণে অ্যাসিডিটির বার্ন থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা পায়। এটি হজম ঠিক রাখার জন্য পাকস্থলীর বিভিন্ন এসিড নিঃসরণে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য এক গ্লাস ঠান্ডা দুধে দুই চা চামচ ইসবগুল মিশিয়ে খাবেন। এভাবে নিয়মিত খেলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করে: প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকে অনেকের। তাদের ক্ষেত্রে উপকারী একটি খাবার হলো ইসবগুলের ভুসি। এটি নিয়মিত খেলে কমবে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ার সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে আখের গুড়ের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। এটি সকাল ও বিকালে খেতে পারেন। এভাবে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাবেন।
হার্ট ভালো রাখতে: হার্ট ভালো রাখার জন্য নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ এতে থাকা খাদ্যআঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে। এটি পাকস্থলীর দেয়ালে এক ধরনের পাতলা স্তর সৃষ্টি করে। যা খাদ্য হতে কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়; বিশেষ করে রক্তের সিরাম কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এছাড়াও এটি রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল সরিয়ে দিতে কাজ করে। ফলে ধমনীতে ব্লক সৃষ্টির ভয় থাকে না।
আমাশয় থেকে রক্ষা করে: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসবগুল আমাশয় রোগের জীবাণু নষ্ট করতে পারে না। তবে আমাশয়ের জীবাণু পেট থেকে বের করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। সেহরি ও ইফতারে দুবার করে ইসবগুলের শরবত খেলে আমাশয় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ইসবগুলের শরবত খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
খাওয়ার সঠিক নিয়ম-
ইসবগুল আপনি পাউডার বা হাস্ক যেভাবেই খান না কেন, বেশ কিছু জার্নালে বলা হয়েছে পাঁচ থেকে ১০ গ্রাম পর্যন্ত। অর্থাৎ এক থেকে দুই চা চামচ পর্যন্ত সারা দিনে রেকমেন্ডেশন (পরামর্শ) রয়েছে, তবে এটি অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শে হতে হবে।
যারা ডক্টরের পরামর্শ ছাড়া খাচ্ছেন, তাদের জন্য ফাইভ গ্রাম বা এক চা চামচই যথেষ্ট এবং নিয়ম হচ্ছে আপনাকে ২৪০ মিলিলিটার পানি, অর্থাৎ বড় এক গ্লাস পানির মধ্যে খুব ভালো করে মিলিয়ে এটি খেতে হয়।
ইসবগুল একধরনের ডায়েটারি ফাইবার, যার কিছু পানিতে দ্রবীভূত হয়, কিছু হয় না। অন্ত্রের ভেতরে থাকাকালীন ইসবগুলের ভুসি প্রচুর পরিমাণ পানি শোষণ করে, কোনো কিছুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে বিষ তৈরি করে না এবং অন্ত্রের দেয়াল পিচ্ছিল করে দেয়। যেহেতু এটা কার্যকারিতার জন্য অন্ত্র থেকে পানি শোষণ করে, তাই দুই চা-চামচ ভুসি, পানি বা দুধে গুলিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই খেয়ে ফেলা ভালো। দীর্ঘক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে এটা বাইরে থেকেই পানি শোষণ করে নেবে, অতএব কার্যকারিতাও কমে যাবে।
আপনার চারপাশের ‘টক্সিক’ ব্যক্তিদের চিনবেন যেভাবে
যে কোনো কিছুতে অসম্মত হওয়ার প্রবণতাকে টক্সিক পারসোনালিটি বলে। এ ধরণের মানুষ আশেপাশে থাকলে তাদের জীবন থেকে এড়িয়ে চলাই উত্তম। কারণ এ ধরণের মানুষের ব্যবহার আপনার মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, এমনকি সামাজিকভাবেও হেয় করে। টক্সিক পারসোনালিটির মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। টক্সিক পারসোনালিটির মানুষকে এড়িয়ে চলতে পারাটাই নিজের জন্য মঙ্গল।
কথায় বলে, আপনি আপনার আশপাশের সবচেয়ে কাছের পাঁচজন মানুষের গড়। এর মানে হলো আপনার জীবনে গুরুত্ব পাওয়া মানুষগুলো আপনার চিন্তা, জীবনসঙ্গী বাছাই, পছন্দ, অপছন্দ, রুচি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এ সবকিছুতে প্রভাব ফেলে। আপনি এই মানুষগুলোর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হন। এই মানুষগুলো আপনাকে ক্রমাগত পিছিয়ে দেয়। এমনকি জীবন থেকে ছিটকেও পড়তে পারেন।
তাই ‘টক্সিক’ এই মানুষগুলো থেকে দূরে থাকার জন্য আপনি আগে জীবন থেকে এই মানুষগুলোকে বিদায় করুন, নিজে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন।
১. ‘টক্সিক’ মানুষেরা সাধারণত কোনো কিছুর দায়িত্ব নিতে চায় না। যেকোনো কিছুর দায়ভার অন্যের কাঁধে চাপাতে তারা ওস্তাদ। তাদের নিজেদের দুরবস্থার জন্য আপনাকে বা অন্যদের দায়ী করে। অন্যদিকে কৃতিত্ব নিজের দিকে টেনে নেওয়ার বেলায় পটু।
২. এরা সহানুভূতিশীল নয়। ‘টক্সিক’ এই মানুষেরা কখনো আপনার জুতায় নিজের পা গলিয়ে আপনার অবস্থা বা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করবে না। এই মানুষদের আপনি আপনার অনুভূতি বোঝাতে ব্যর্থ হবেন।
৩. সমালোচনা, কথা লাগানো তাদের অবসরের প্রিয় কাজ। বিয়ের পর মানুষের ব্যক্তিগত সম্পর্ক, চরিত্রের বিশ্লেষণ, নেতিবাচক চর্চা-এগুলোতে তারা কখনোই ক্লান্ত হয় না। আপনি মনে রাখবেন, আপনার কাছে অন্যের সম্পর্কে এই ধরনের কথা বলছে। এর অর্থ হলো আপনার সম্পর্কে এই ধরনের কথা বলতেও তাদের নীতিতে আটকাবে না।
৪. সম্পর্ক মানেই বিশ্বাস, ভরসা আর স্বস্তির একটি জায়গা। তা হোক বন্ধুত্বের সম্পর্ক কিংবা ভালোবাসার। কিন্তু এই সম্পর্ক যদি আপনাকে তিনটি উপাদানের একটি দিতেও ব্যর্থ হয় তবে বুঝতে হবে, কোথাও সমস্যা আছে।
৫. ব্যক্তিভেদে সম্পর্কের ধরন ভিন্ন হয়, সম্পর্কের সংজ্ঞাও একেকজনের কাছে একেক রকম। তবে আপনার সঙ্গী যদি প্রতিনিয়ত আপনাকে ছোট করে কথা বলে, যেকোনো কাজে জবাবদিহিতা চায় এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, সবসময় আপনাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে এমন সম্পর্ককে টক্সিক বলা যায়।
৬. আপনাকে আপনার পরিবার বা কাছের মানুষদের থেকে দূরে সরিয়ে নিতে পারে এই টক্সিক মানুষেরা। এসব টক্সিক মানুষ আপনাকে ‘একঘরে’ করে ফেলতে পারে।
৭. এসব ‘টক্সিক’ মানুষদের সঙ্গে কথোপকথনের পর আপনার হালকা অনুভূত হয় না। বরং আবেগীয়ভাবে ভার ভার লাগে। আমাদের আশপাশেই রয়েছে অনেক ‘টক্সিক মানুষ’। এই মানুষদের সঙ্গে কথা বলার পর আপনার ওপর ‘নেতিবাচক এনার্জি’ ভর করে। মাঝেমধ্যে বিরক্তি, হতাশা আর রাগ আপনাকে গ্রাস করে।
৮. আসলে আমাদের জীবনে বাড়ির বাস্তুর প্রভাব খুব বেশি করে পড়ে।
৯. নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করতেও পিছপা হয় না তারা।
যে যত্নে দূর হবে চোখের নিচের ফাইন লাইনস ও রিংকেল
ছোটবেলা থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত আমাদের ত্বক নানান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে আমাদের ত্বক হারায় তার দৃঢ়তা ও জেল্লা। আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় সবার মাঝে একটি সাধারণ সমস্যা দেখা দেয়। সেই সমস্যাটি হলো–চোখের নিচে ভাঁজ পড়ে যাওয়া কিংবা কুঁচকে যাওয়া, একেই ফাইন লাইনস ও রিংকেল বলে। আমাদের প্রতিদিনকার জীবনাচরণ, কম ঘুমানো, স্ট্রেস, ব্যাস্ততা,পরিবেশদূষণ, সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্নি, বংশগত কারণ ইত্যাদি কারণগুলো চোখের নিচের কালো দাগ হওয়ার জন্য দায়ী।
এটা আমাদেরকে জানান দেয় যে খাদ্যাভাস, বয়স বা জীবনযাত্রায় হচ্ছে অনিয়ম। এজিং সাইনগুলো সাধারনত সবচেয়ে প্রথমে চোখের নিচেই দৃশ্যমান হয়। কারন আমাদের চোখের নিচে প্রিঅরবিটাল হলো নামক অংশের চামড়াতে থাকা রক্তের শিরাগুলো তুলনামূলক পাতলা হয়। আগে থেকেই এ ব্যাপারে সচতন থাকতে হবে, সময় করে যত্ন নিতে হবে চোখের।
যে কারণে হয় ফাইন লাইনস ও রিংকেল:
রিংকেল এবং ফাইন লাইন হবার পেছনে এমন কিছু ফ্যাক্টর কাজ করে, যা আমরা চাইলেই কন্ট্রোল করতে পারি না। যেমন-
বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ত্বকের ইলাস্টিসিটি এবং নমনীয়তা কমতে থাকে। ধীরে ধীরে আমাদের শরীরে ফ্যাট কিংবা তেল উৎপাদন কমে যায়,যা ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। যে কারণে ত্বকের চামড়া ঝুলে যেয়ে ত্বকে ফাইন লাইন অর্থাৎ বলিরেখা এবং রিংকেলের সৃষ্টি করে।
সূর্যের আলো কিংবা আলট্রা ভায়োলেটের প্রভাব: ত্বকে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্নির প্রভাবে এজিং শুরু হয়, যা রিংকেল হওয়ার একটি প্রাথমিক কারণ। ইউভি রশ্নির সংস্পর্শে আমাদের ত্বকের গভীরের কানেক্টিভ টিস্যু- কোলাজেন এবং ইলাস্টিন ফাইবারকে নিস্তেজ করে দেয়। যার কারণে ত্বকে ভাজ অর্থাৎ রিংকেল দেখা যায়।
এ ছাড়াও ধূমপান, খাদ্যাভ্যাস এবং আমাদের প্রতিদিনকার বিভিন্ন ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন (যেমন- চোখ কুঁচকে রাখা, কিংবা হাসার সময় চোখ ছোট করে ফেলা) ইত্যাদিও এই রিংকেল বা ফাইন লাইনের জন্য দায়ী।
চোখের নিচে রিংকেল কিংবা ফাইন লাইনসের প্রতিকারের জন্য কিছু টিপস-
সানস্ক্রিন: সূর্যের আলো থেকে যতটা পারা যায় স্কিনকে সুরক্ষা দিতে হবে। সরাসরি সূর্যের আলো পড়ার সম্ভাবনা থাকলে সানগ্লাস, ছাতা এবং লং-স্লিভ অর্থাৎ লম্বা হাতাওয়ালা জামা পরতে হবে। আর এক্ষেত্রে স্কিনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে- সানস্ক্রিন। বাসা থেকে বের হওয়ার ২০ মিনিট আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন দিতে হবে। সানপ্রটেকশন যুক্ত স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে, যাতে ন্যূনতম এসপিএফ ৩০ থাকে। বয়স ভেদে সানস্ক্রিনের এসপিএফের মাত্রা ১৫ থেকে ৫০ পর্যন্ত হতে পারে। সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে তা ক্লিন করার জন্য অবশ্যই ডাবল ক্লেনজিং করতে হবে।
ময়েশ্চারাইজার: স্কিন ড্রাই কিংবা শুস্ক থাকলে সহজেই ফাইন লাইনস এবং রিংকেল দেখা দেয়। তাই শুষ্কতা থেকে বাঁচতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। কয়েক সপ্তাহ ব্যবহারেই আপনি ত্বকে পরিবর্তন লক্ষণ করতে পারবেন।
আই-ক্রিম: আমাদের চোখের নিচের ত্বক ফেইসের অন্যান্য অংশের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে বেশি সংবেদনশীল। তাই এর পরিচর্যাতেও দরকার এক্সট্রা কেয়ার। ত্বকের ধরণ ও বয়স ভেদে মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের আই-ক্রিম পাওয়া যায়। রিংকেল ও ফাইনলাইনসের মতো সমস্যা এড়াতে আই-ক্রিম খুবই কার্যকরী।
হেলদি ডায়েট: আমমাদের ত্বকের জন্য কিছু কিছু ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৫ সহ ইত্যাদি। এই প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলো আমাদের ত্বকের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটিয়ে ত্বককে সুরক্ষা দেয়। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল থেকে আমরা এ ভিটামিনগুলো পেয়ে থাকি।
জেনে নিন রিংকেল দূর করার জন্য কিছু প্রাকৃতিক প্যাক-
একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে ত্বকের এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে থাকে। তাই আমাদের উচিত স্কিনকেয়ারের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং ত্বক অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট স্কিন-কেয়ার রুটিন ফলো করা। তাহলে এই সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। রিংকেল বা ফাইন লাইনস রোধে কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে তৈরি হোম রেমেডির কথা বলা যাক। আপনি সহজেই বাসায় বসে বানিয়ে নিতে পারবেন কার্যকরী এই প্যাকগুলো।
শসা এবং দইয়ের প্যাক: চোখের সৌন্দর্য চর্চায় শসা প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। শসায় এমন উপাদান আছে, যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি কে ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে টানটান রাখে। যার ফলে রিংকেল এবং ফাইনলাইনসের মতো সমস্যাগুলো এড়ানো যায়।
এই প্যাকটি বানানোর জন্য শসা ভালোভাবে ব্লেন্ড করে পরিমাণ মতো টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর চোখের নিচে ১৫ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২ বার প্যাকটি ব্যবহার করলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে।আপনি চাইলে দিনের সকল কাজ শেষে ২ টুকরো শসা চোখের উপরে দিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেন। এতে আপনি বেশ রিফ্রেশ ফিল করবেন এবং একই সাথে ত্বকের যত্নও হবে।
কফি বিন প্যাক: অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কফি এবং কোকোয়া পাউডার রিংকেল এবং ফাইনলাইনস কমাতে সাহায্য করে। কোকোয়া পাউডার এবং মধু একসাথে মিশিয়ে আপনি সহজেই আপনি প্যাকটি তৈরি করে ফেলতে পারবেন। চোখের নিচে এবং পুরো ত্বকে প্যাকটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করলে ধুয়ে নিতে পারেন।
নারকেল তেল এবং হলুদের প্যাক: নারকেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-ই, যা ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এক টেবিল চামচ নারকেল তেলে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে সহজেই প্যাকটি তৈরি করে ফেলতে পারবেন আপনি। নারকেল তেলের সঙ্গে আমন্ড ওয়েল এবং ক্যামোমাইল ওয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।
অলিভ অয়েল ম্যাসাজ: চোখের নিচে ফাইন লাইন কিংবা রিংকেলের জন্য অলিভ অয়েল ম্যাসাজ বরাবরই কার্যকরী একটি পদ্ধতি। ভিটামিন ই, কে এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অলিভ অয়েল ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
অ্যালোভেরা ফেইস প্যাক: ত্বকের পরিচর্যায় অ্যালোভেরা খুবই উপকারী। অ্যালোভেরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং ভিটা ক্যারোটিন। যা আমাদের ত্বককে সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখে।
পেঁপে এবং মধুর ফেইস প্যাক: চোখের নিচের রিংকেল, ফাইনলাইনস এবং আইব্যাগের জন্য এই প্যাকটি খুবই কার্যকরী। ত্বকের সুরক্ষা এবং ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে মধুও ব্যবহার হয়ে থাকে। পরিমাণ মত পেঁপে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে কয়েক ফোঁটা মধু মেশাতে হবে। সাথে কিছুটা টকদই মিশিয়ে লাগিয়ে নিন, ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে কয়েকদিন ব্যবহারেই চোখের নিচের রিংকেলস কমতে দেখা যাবে।
ঈদের ছুটিতে নিরাপদে ভ্রমণের জন্য কিছু সতর্কতা
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই লম্বা ছুটিতে কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার, কেউ বা প্ল্যান করছে পরিবার নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরে আসার। উভয় ক্ষেত্রেই একটু স্মার্ট চিন্তার অভাবে বহু প্রত্যাশিত ভ্রমণটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই ভ্রমণের পূর্ব প্রস্তুতিসহ চলুন জেনে নিই ঈদের ছুটিতে নিরাপদে ভ্রমণের কিছু দরকারি তথ্য।
ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের পূর্ব প্রস্তুতি-
গন্তব্য সুনির্দিষ্টকরণ: বেড়াতে যাওয়ার আগে সর্বপ্রথম ঠিক করতে হয় গন্তব্য। আর এর উপর নির্ভর করেই পরবর্তীতে নির্ধারিত হয় ভ্রমণের সময়, বাজেট, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি। গত বছরের ন্যায় এবারের ঈদও বেশ গরমের মধ্যেই পড়তে যাচ্ছে। তাই যে জায়গাগুলোতে অত্যধিক কায়িক পরিশ্রম হবে সে জায়গাগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া উত্তম। যেমন-পাহাড় ও ঘন বনাঞ্চলের স্থলে গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে সাগর, নদী, হাওড় এবং হালকা গাছ-গাছালি ঘেরা উদ্যান বা এরকম কোনো খোলামেলা জায়গা।
যে জায়গাটিকে গন্তব্য হিসেবে ঠিক করা হবে তার ব্যাপারে স্থানীয় বা আগে কেউ সেখানে গেছে এরকম কারো কাছ থেকে তথ্য নেওয়া উত্তম। এছাড়াও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে ভ্রমণ বিষয়ক বিভিন্ন পরিচিত-অপরিচিত জায়গাগুলোর তথ্য অনায়াসেই পাওয়া যায়।
পরিবহন ব্যবস্থা বাছাই: প্রতি ঈদে গ্রামের বাড়ি যাওয়া এবং ঢাকার বাইরে পরিজন নিয়ে ঈদের ছুটি কাটানো উভয়ের ক্ষেত্রেই পরিবহন ঠিক করা বেশ ঝামেলার কাজ। বিশেষ করে যারা মাঝারি ধরনের পাবলিক পরিবহনগুলোতে যাতায়াত করে থাকেন, তাদের জন্য এই সময়টা রীতিমত বিভীষিকাময়। প্রতি ঈদে পরিবহনগুলোর সিট বুকিংয়ের লাইনে প্রচুর মানুষের ভিড়ে হাজারো ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই টিকেট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই যত আগে সম্ভব সিট বুক করে নেওয়া উত্তম।
তাছাড়া প্রত্যহ যানজট অত্যধিক হারে বৃদ্ধি পাবার ফলে স্থলপথে যাতায়াত এখন সমূহ হয়রানির নামান্তর। তাই যারা শুধুমাত্র প্রমোদ ভ্রমণে ঢাকা ছাড়ছেন তাদের জন্য ঈদের দিন দিবাগত রাত বা পরদিন রওনা হওয়া ভালো। এছাড়া একই গন্তব্যের যাত্রীরা ৬ থেকে ৭ জন হলে একসঙ্গে একটা মাইক্রোবাস ভাড়া করেও যাওয়া যায়। বড় গ্রুপের পর্যটকরাও এভাবে ঈদের মৌসুমে যে কোনো সময় যাতায়াত করতে পারেন।
থাকা-খাওয়ার পূর্ব পরিকল্পনা: ঈদের ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এই বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই ভেবে রাখা ভালো। কি ধরনের আবাসিক হোটেল ঠিক করা হচ্ছে, সাথে বা আশেপাশে খাবারের হোটেল আছে কিনা প্রভৃতি ব্যাপারগুলো ঢাকা থেকেই ঠিক করে যাওয়া উচিত। বিশেষ করে ২ থেকে ৩ দিনের ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণ সঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনা করে বাজেট অনুযায়ী একটি উপযুক্ত লোকেশনে আবাসন ঠিক করতে হবে।
এই লোকেশন থেকে খাবারের হোটেল এবং দর্শনীয় স্থানসমূহের দূরত্বের ব্যাপারটা খেয়াল রাখতে হবে। কেননা এই বিষয়টি বাজেটের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। যেহেতু ঈদের সময় যাওয়া হচ্ছে সেহেতু অত্যধিক হোটেল ভাড়া বিবেচনার মধ্যে রাখতে হবে।
অভিজাত রেস্টুরেন্ট এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। এক্ষেত্রে স্থানীয় কারো থেকে অথবা ট্রাভেল ব্লগগুলোর মাধ্যমে খাবার খরচের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যেতে পারে।
ভ্রমণের জন্য ব্যাগ গোছানো: এই গোছগাছের ব্যাপারটির সঙ্গে কি ধরনের জায়গায় যাওয়া হচ্ছে এবং কতদিন থাকতে হবে তা জড়িত। যারা বাড়িতে ঈদ করতে যান তাদের লাগেজটা স্বভাবতই একটু বড় হয়। আর পর্যটকদের জন্য বেশ মাপজোখ করেই ব্যাগ গোছাতে হয়। উভয় ক্ষেত্রেই যতটা সম্ভব অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দেওয়া উচিত।
ঈদে ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা-
ভ্রমণ পথ ও গন্তব্যের ব্যাপারে যথাযথ তথ্য নেওয়া: যে কোনো গন্তব্যে যাওয়া আগে তার ব্যাপারে যত বেশি জেনে নেওয়া যায় ততই ভালো। প্রথমেই সেখানকার আবহাওয়া এবং আইনশৃঙ্খলার অবস্থা জেনে নিতে হবে। নিকটস্থ থানা, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সের নাম্বার, আবাসিক হোটেল, এবং ভ্রমণকারীর যে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে তার শাখা লোকেশন ও যোগাযোগ নাম্বার মোবাইলে সংরক্ষণ করতে হবে।
এছাড়া যে রুট ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌছবে সে রুটেও কোনো ঝামেলা চলছে কি-না আগে থেকেই যাচাই করে নিতে হবে। মোবাইলে নূন্যতম একদিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনে নেওয়া যেতে পারে। এতে করে যাত্রাপথে যে কোনো জায়গায় নিকটস্থ অ্যাম্বুলেন্স ও থানার নাম্বার খুঁজে বের করা যাবে।
নিকট বন্ধু ও আত্মীয়দের জানিয়ে রাখা: বাড়িতে বাবা-মার সঙ্গে ঈদ করার জন্য ঢাকার ছাড়ার সময় ঢাকার অন্তত একজন নিকট আত্মীয় বা বন্ধুকে প্রস্থানের বিষয়টি জানিয়ে রাখা উচিত। সেই সঙ্গে রওনা হওয়া সময়টিও জানাতে হবে গন্তব্যের লোকদের। বিশেষত পৌছতে গভীর রাত হয়ে গেলে তারা যেন গাড়ির ব্যবস্থা করতে সহায়তা করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় গ্রামের বাড়িটি বাস বা ট্রেন ষ্টেশন থেকে অনেক ভেতরে। একই কথা খাটে যারা প্রতিনিয়ত ঢাকাতে ঈদ করেন তাদের জন্যও।
ওষুধপত্র ও ফার্স্ট এইড বক্স সঙ্গে রাখা: যাত্রাপথে বা গন্তব্যে পৌঁছে বিভিন্ন সময় ছোট-খাট দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই চট জলদি প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্স্ট এইড কিট সঙ্গে রাখা জরুরি। জ্বর, বমি, মাথা ব্যথা, পেট খারাপের ওষুধ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক সঙ্গে রাখা জরুরি। সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে মশা নিরোধক ওডোমোস। সাথে বাচ্চা থাকলে তাদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
খাবার পানীয় নেওয়া: ভয়াবহ দাবদাহে ঈদ উৎসবে শক্ত সমর্থ থাকতে বিশুদ্ধ পানি পানের কোনো বিকল্প নেই। শুধু দীর্ঘ মেয়াদের ভ্রমণেই নয়; রোদের মধ্যে ঘন্টাখানেক হাটার ক্ষেত্রেও সঙ্গে পানি বা জুসের বোতল বহনে অভ্যস্ত হওয়া উচিত।
ভ্রমণের সময় খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা: ভ্রমণের সময় খাবারের মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে খাবারটি কিভাবে প্রস্তুত হচ্ছে তা দেখা জরুরি। কিন্তু সেটা সম্ভব না হলে খাবারটি যথেষ্ট রান্না হয়েছে কি-না সেদিকে নজর দিতে হবে। কোনো খাবারে অ্যালার্জি থাকলে সেটি সেখানকার বিখ্যাত খাবার হলেও এড়িয়ে যাওয়া উচিত। ব্যাকটেরিয়া থেকে দূরে থাকতে শুধুমাত্র যেগুলো খোসা ছাড়িয়ে খেতে হয় সে ফলগুলো খাওয়া যেতে পারে।
ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুম: ভ্রমণের সময় দীর্ঘ দূরত্ব না থাকা সত্ত্বেও প্রায়ই যানজটের জন্য দীর্ঘক্ষণ রাস্তাতেই কেটে যায়। এমতাবস্থায় শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে শক্তির যোগানের জন্য ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। এছাড়াও ট্রেনে মোশন সিকনেস থেকে রক্ষা পেতে যানবাহন চলাকালে অল্প কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ রাখা অথবা সম্ভব হলে ঘুমিয়ে নেওয়া ভালো।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: শুধু এই ঈদের জন্য নয়; দেশের ভেতরে যে কোনো ভ্রমণকালে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে থাকা উচিত। বর্তমানে কোভিড টিকা কার্ডও একটি অবিচ্ছেদ্য সংযোজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর প্রতিটির স্ক্যান কপি অনলাইনে তথা- ড্রপবক্স, গুগল ড্রাইভ, ওয়ান ড্রাইভ অথবা অফলাইনে মোবাইলের ফাইল ম্যানেজারে সংরক্ষণ করা উচিত, যেন মোবাইলের মাধ্যমে দ্রুত দেখা যায়।
ঈদের ছুটিতে বাড়িতে না থেকেও যেভাবে পানি পাবে টবের গাছ
ঈদের ছুটিতে অনেকেই শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যান বেশ কয়েকদিনের জন্য। কিন্তু ঘরে থাকা গাছ নিয়ে পড়েন দুশ্চিন্তায়। গাছে পানি দেবে কে এই চিন্তায় শহর ছেড়ে বেড়াতে বা ভ্রমণে যাওয়াটা এক রকম চিন্তার বিষয় হয়ে যায়। তবে এ সমস্যার সমাধানে কিছু পদ্ধতি রয়েছে যা ঠিকমতো প্রয়োগ করতে পারলে বাড়িতে কেউ না থাকলেও গাছ পানির অভাবে অন্তত মারা যাবে না।
চলুন জেনে নিই পদ্ধতিগুলো-
বোতলবন্দি: গাছে পানি দিতে বোতলকে অনেক ভাবেই কাজে লাগানো যায়। প্রথমে একটি বোতল নিয়ে তার গলা পর্যন্ত পানি ভরে নিতে হবে। সেই পানিতে কিছু সার গুলে দিতে পারেন। তারপর বোতলের মুখ বুড়ো আঙুল দিয়ে চেপে ধরে উলটে দিন। ধীরে-ধীরে বোতলের মুখ গুঁজে দিন টবের মাটিতে। বোতলটা উলটে থাকবে। এক দিকে একটু হেলে থাকলেও অসুবিধে নেই। এবার বোতলের পিছন দিকে পানির মাত্রায় দাগ দিয়ে দিন। কয়েক ঘণ্টা বাদে দেখুন পানি সেই লেভেল থেকে নীচে নেমেছে কি না। তা হলে বুঝতে পারবেন পানি পাস করছে। কিন্তু পানির মাত্রা যদি না নামে, তার মানে বোতলের মুখে মাটি জমে পানির পথ আটকাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বোতল তুলে নিয়ে তার মুখটা পরিষ্কার করে আবার গুঁজে দিতে হবে টবের মাটিতে।
অথবা বোতলের গায়ে দু’-চারটে ফুটো করে, বোতলে পানি ভরে নিন। এবং পুরো বোতলটাই মাটির মধ্যে পুঁতে দিন। বোতলে পানি ভরে আর অল্প মাটি দিয়ে তার মধ্যেও গাছ বসিয়ে রাখতে পারেন। তবে সব গাছ কিন্তু এই পদ্ধতিতে বাঁচে না।
রশির বাঁধনে: একটা বড় গামলায় পানি ভরে নিতে হবে। এবার যে গাছগুলোতে পানি দিতে চান সেই গাছের টব এনে গামলার চারপাশে রাখুন। কয়েকটা দড়ি নিয়ে তার এক প্রান্ত গামলার পানির নীচ পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে ডুবিয়ে দিন। দড়ির অন্য প্রান্ত টবের মাটির মধ্যে গুঁজে দিন। খেয়াল রাখবেন, যাতে দড়িটি টবের নীচ পর্যন্ত চলে যায়। তবেই গাছ ভালো করে পানি পাবে। পানিভর্তি গামলার মুখ যেন টবের চেয়ে বেশি উচ্চতায় থাকে। এই পুরো পদ্ধতি শুরু করার আগে টবের মাটি পানি দিয়ে ভালো করে ভিজিয়ে নিতে হবে। না হলে টবের মাটি প্রথমেই অনেকটা পানি শুষে নেবে।
পানিভর্তি টাব: একটা বড় গামলা বা বাথটাব থাকলে তার মধ্যে পানি ভরে ফেলুন। তারপর সেই পানিনিকাশি বন্ধ করে দিতে হবে। সেই পানিভর্তি টাবের মধ্যে একে একে সব গাছ বসিয়ে দিন। খেয়াল রাখবেন, গাছের টবের নীচে যেন পানি পাস করার ফুটো থাকে। এই পদ্ধতিতে গাছেরা বেশ কিছুদিন পর্যন্ত পানি পাবে এবং ভালো থাকবে।
টুকরো টিপস-
• বাড়ির বাইরে থাকাকালীন গাছে পানি দেওয়ার যে কোনও পদ্ধতি বাছতে পারেন। কিন্তু যে পদ্ধতিই প্রয়োগ করুন না কেন, গাছকে প্রত্যক্ষ সূর্যালোকে রাখবেন না। তা হলে গাছের গোড়ার পানি গাছের কাজে লাগার আগেই বাষ্পীভূত হয়ে যাবে। তাই এমন কোনও জানালার ধারে গাছের টবগুলো রাখতে হবে যাতে গাছ আলো পায়, কিন্তু রোদ যেন না লাগে।
• এই পদ্ধতিতে চারদিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত গাছে পানি সরবরাহ করা যায়। আর গাছ তার নিজের আপনিধারণ ক্ষমতায় আরও তিনদিন হয়তো বাঁচতে পারে। কিন্তু তার বেশি দিনের জন্য যদি বাইরে থাকতে হয়, সে ক্ষেত্রে গাছের দায়িত্ব কোনও প্রতিবেশী বা বন্ধুকে দিয়ে যাওয়াই ভালো।
• গাছে পানি দেওয়ার উপকরণ সাজিয়ে আগে দেখে নিন, সেই পদ্ধতিতে গাছের পানির চাহিদা মিটছে কি না। বাড়িতে থাকাকালীন সময়েই পদ্ধতিগুলো পরখ করে দেখে নিন, আপনার গাছের জন্য কোন পদ্ধতি সহায়ক।
বাড়িতে কোনও প্রাণী থাকলে তার যতটা যত্নের প্রয়োজন, গাছেরও ততটাই। তাই দরজায় তালা দিয়ে বেরোনোর আগে কিছুটা সময় দিন। তা হলে আপনার সাধের বাগানও আর শুকিয়ে যাবে না।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়
দেশের অনেক জায়গায় বইছে তাপপ্রবাহ। হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। হঠাৎ তাপমাত্রার উর্ধ্বগতির এমন পরিস্থিতিতে হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এটি প্রতিরোধে কী কী করা উচিত, তা ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি।
প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য, হিট স্ট্রোকের সর্বোচ্চ ঝুঁকি আছে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, শ্রমজীবী ব্যক্তি (যেমন- রিকশাচালক, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক), অতিরিক্ত ওজন থাকা ব্যক্তি, শারীরিকভাবে অসুস্থ, বিশেষত হৃদরোগ বা উচ্চরক্তচাপ থাকা ব্যক্তির।
চিকিৎসকেরা বলেন, হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে শরীর হাইড্রেট রাখার কোনো বিকল্প নেই। তাপমাত্রা বেশি হলে ঢিলেঢালা এবং হালকা রঙের পোশাক পরে ঘরের বাইরে যেতে হবে। সূর্যের আলো থেকে চোখকে রক্ষা করতে সানগ্লাস ব্যবহার করার। রোদে থাকতে হলে প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
করণীয়:
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু করণীয় জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি, জেনে নিন করণীয়গুলো।
দিনের বেলায় যথাসম্ভব বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন, রোদ এড়িয়ে চলুন।
বাইরে বের হলে ছাতা, টুপি বা ক্যাপ বা কাপড় দিয়ে মাথা যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন।
হালকা রঙের, ঢিলেঢালা এবং সম্ভব হলে সুতির জামা পরুন।
প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং বাসি, খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
দিনের বেলায় একটানা শারীরিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন।
সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা নিন বা গোসল করুন।
প্রস্রাবের রঙের দিকে নজর রাখুন। তা হলুদ বা গাঢ় হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়ান।
ঘরের পরিবেশ যেন অতিরিক্ত গরম বা ভ্যাপসা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বেশি অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।