আলট্রা-সাউন্ড ছাড়াই যেসব লক্ষণে বুঝবেন জরায়ুতে সিস্ট হয়েছে
পিসিওডি হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে ওভারি অস্বাভাবিকভাবে অ্যান্ড্রোজেন উৎপন্ন করে এবং এর জেরে ওভারি বা জরায়ুতে সিস্ট গঠিত হয়। আর এই অবস্থায় বাড়তে থাকে ওজন আর অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা। বয়স ১৫ হোক বা ২৫, বেশির ভাগ নারীরাই ভুগছেন এই পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে। এর পিছনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দায়ী অস্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল। চলুন জেনে নেওয়া যাক আলট্রা-সাউন্ড ছাড়াই যেসব লক্ষণগুলো দেখা দিলে বুঝবেন জরায়ুতে সিস্ট হয়েছে।
যেসব লক্ষণে বুঝবেন জরায়ুতে সিস্ট হয়েছে—
- বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পিসিওডি হলে দেহে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। মুখের লোমের আধ্যিক বাড়তে থাকে, ব্রণ হয়। হতে থাকে মুড সুইংও।
- অনেক নারীরাই প্রাথমিক স্তরে বুঝতে পারেন না যে, তাদের ওভারিতে সিস্ট তৈরি হচ্ছে। অনেক সময় প্রাথমিক পর্যায়ে পিসিওডি ধরা পড়ে না।
- পিসিওডি বা পিসিওএস-এ ভুগলে ওজন বেড়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক। এই সময় দেহে শর্করার মাত্রা ও কর্টিসল লেভেল ওঠা-নামা করে। এর জেরে ওজন বাড়তে থাকে।
- পিসিওএস হলে দেহে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্যহীনতাও দেখা দেয়। এর জেরে দেহে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে। পাশাপাশি মিষ্টি খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যায়।
- পিসিওএস-এ ভুগলে দেহে কর্টিসল ও থাইরয়েড হরমোন ভারসাম্য নষ্ট হয়। এতে শরীরও দুর্বল হয়ে পড়ে। কাজ করার এনার্জি কমে যায়। সুতরাং, পিসিওএস-এ ভুগলে শরীর দুর্বল হয়ে থাকে।
- পিসিওএস-এ আক্রান্ত হলে মারাত্মক চুল পড়ে। কোকোন শ্যাম্পু-তেল মেখেও চুল ঝরা বন্ধ করা যায় না। এ ছাড়া অনিয়মিত ঋতুস্রাব এবং ঋতুস্রাবের সময় মারাত্মক তলপেটে যন্ত্রণা রয়েছে। এগুলো দেখেই বুঝতে পারবেন যে, আপনি পিসিওএস-এর সমস্যায় ভুগছেন।
মন্তব্য করুন
যেসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত ডেঙ্গু টেস্ট করবেন
ডেঙ্গুর জ্বর নিয়ে অনেক মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। ডেঙ্গু রোগটি ভাইরাসজনিত। এই সময় ডেঙ্গু জ্বর বেড়ে যায়। সাধারণত, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মৃত্যুর সংখ্যা একেবারে কম নয়। চিকিৎসকরা বলছেন সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে পারলে এ রোগে মৃত্যু ঝুঁকি খুব একটা থাকে না। কিন্তু রোগটিকে অবহেলা করলে এটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। কোন শরীরে কোন লক্ষণ দেখলে আপনি বুঝবেন যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেক্ষেত্রে আপনার করণীয় কী হতে পারে, জেনে নিন।
কখন হাসপাতালে যেতে হয়:
ডেঙ্গু হলে কী ধরনের চিকিৎসা নেবেন, বাসায় না হাসপাতালে থাকবেন তা নির্ভর করে এর ধরন বা ক্যাটাগরির ওপর। ডেঙ্গু জ্বরের তিনটি ধরন বা ক্যাটাগরি আছে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’।
প্রথম ক্যাটাগরির রোগীরা স্বাভাবিক থাকে। তাদের শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী ‘এ’ ক্যাটাগরির। তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়াই যথেষ্ট।
‘বি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। কিছু লক্ষণ, যেমন পেটে ব্যথা, বমি, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অন্তঃসত্ত্বা, জন্মগত সমস্যা, কিডনি বা লিভারের সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই ভালো।
‘সি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু জ্বর সবচেয়ে খারাপ। এতে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য জেনে নিন:
১. ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো কী?
সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।
২. জ্বর হলেই কি চিন্তিত হবেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ বলছেন, এখন যেহেতু ডেঙ্গুর সময়, সেজন্য জ্বর হলে অবহেলা করা উচিত নয়। জ্বরে আক্রান্ত হলেই সঙ্গে-সঙ্গেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ।
তিনি বলছেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন, তারা জ্বরকে অবহেলা করেছেন। জ্বরের সঙ্গে যদি সর্দি- কাশি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কিংবা অন্য কোন বিষয় জড়িত থাকে তাহলে সেটি ডেঙ্গু না হয়ে অন্যকিছু হতে পারে। তবে জ্বর হলেই সচেতন থাকতে হবে।
৩. বিশ্রামে থাকতে হবে
সরকারের কমিউনিক্যাবল ডিজিজ কন্ট্রোল বা সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অন্যতম পরিচালক ড. সানিয়া তাহমিনা বলেন, জ্বর হলে বিশ্রামে থাকতে হবে। তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, জ্বর নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা উচিত নয়। একজন ব্যক্তি সাধারণত প্রতিদিন যেসব পরিশ্রমের কাজ করে, সেগুলো না করাই ভালো। পরিপূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন।
৪. কী খাবেন?
প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন - ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা যেতে পারে। এমন নয় যে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে, পানি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।
৫. যেসব ঔষধ খাওয়া উচিত নয়
অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ হচ্ছে প্রতিদিন চার গ্রাম। কিন্তু কোন ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
৬. প্ল্যাটিলেট বা রক্তকণিকা নিয়ে চিন্তিত?
ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্ল্যাটিলেট বা রক্তকণিকা এখন আর মূল ফ্যাক্টর নয় বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক তাহমিনা। তিনি বলেন, প্ল্যাটিলেট কাউন্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কোন প্রয়োজন নেই। বিষয়টি চিকিৎসকের উপর ছেড়ে দেয়াই ভালো। সাধারণত একজন মানুষের রক্তে প্ল্যাটিলেট কাউন্ট থাকে দেড়-লাখ থেকে সাড়ে চার-লাখ পর্যন্ত।
৭. ডেঙ্গুর জ্বরের সময়কাল
সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থাকে। কারণ এ সময়টিতে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের সময়কাল আরও এগিয়ে এসেছে। এখন জুন মাস থেকেই ডেঙ্গু জ্বরের সময় শুরু হয়ে যাচ্ছে।
৮. এডিস মশা কখন কামড়ায়
ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা অন্ধকারে কামড়ায় না। সাধারণত সকালের দিকে এবং সন্ধ্যার কিছু আগে এডিস মশা তৎপর হয়ে উঠে। এডিস মশা কখনো অন্ধকারে কামড়ায় না।
৯. পানি জমিয়ে না রাখা
অধ্যাপক আবদুল্লাহ বলছেন, এডিস মশা 'ভদ্র মশা' হিসেবে পরিচিত। এসব মশা সুন্দর-সুন্দর ঘরবাড়িতে বাস করে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এডিস মশা সাধারণত ডিম পাড়ে স্বচ্ছ পানিতে। কোথাও যাতে পানি তিন থেকে পাঁচদিনের বেশি জমা না থাকে। এ পানি যে কোন জায়গায় জমতে পারে। বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দার ফুলের টবে, নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন পয়েন্টে, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা টায়ার কিংবা অন্যান্য পাত্রে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।
ডেঙ্গুর পরীক্ষা কখন করাবেন:
প্রথম কথা হলো, জ্বর হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যেকোনো জ্বরই যে ডেঙ্গু, তা-ও নয়। ডেঙ্গু হয়েছে ধরে নিয়ে নিজে নিজে পরীক্ষা করাতে গেলে জ্বরের অন্য সাধারণ কারণ, যেমন নিউমোনিয়া, প্রস্রাবে সংক্রমণ, টাইফয়েড, ফ্লু ইত্যাদি অজানা থেকে যায়। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এ কথা আরও বেশি প্রযোজ্য। পরীক্ষার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রোগীর লক্ষণ, উপসর্গ, শারীরিক পরীক্ষার তথ্য-উপাত্ত। তাই আগে চিকিৎসককে বুঝতে দিন।
দ্বিতীয়ত, ডেঙ্গু জ্বরে প্রথম দিন থেকে পরবর্তী ১০ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ফলাফল ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। কাজেই নিজে নিজে পরীক্ষা করালে বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে চিকিৎসককে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে ঠিক কবে প্রথম জ্বর এসেছিল, মনে রাখুন। জ্বরের একেবারে প্রথম দিন থেকেই ডেঙ্গু এনএস১ অ্যান্টিজেন পজিটিভ হওয়ার কথা। তবে চতুর্থ বা পঞ্চম দিন থেকে এটি আবার নেগেটিভ হয়ে যায়। তাই যদি জ্বর চার-পাঁচ দিনের বেশি হয়ে যায়, তাহলে আর এই পরীক্ষা করে লাভ নেই। সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গু আইজিএম অ্যান্টিবডি টেস্ট করা যায়। এ সময় এটি পজিটিভ আসবে। আবার ৯-১০ দিনের মাথায় এটিও নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। তখন আইজিজি অ্যান্টিবডি পজিটিভ দেখায়। এই বিষয়গুলো জটিল, তাই কখন কোনটা করতে হবে, সে সিদ্ধান্ত চিকিৎসকের ওপর ছেড়ে দিন।
তৃতীয়ত, ডেঙ্গু এনএস১ নেগেটিভ হলেই যে ডেঙ্গু হয়নি, তা শতভাগ নিশ্চিত করে বলা কঠিন। লক্ষণ, উপসর্গ ও অন্যান্য পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনেকে একদিন একটা ল্যাবে এনএস১ পজিটিভ দেখে হয়তো পরদিন বা দুদিন পর আরেকটা ল্যাবে গিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট পান। এতে আরও বিভ্রান্তিতে পড়েন তাঁরা। মনে রাখতে হবে, এনএস১ পরীক্ষা প্রথমে পজিটিভ এবং দু-এক দিন পর নেগেটিভ হয়ে যাওয়া বিচিত্র নয়।
চতুর্থত, ডেঙ্গুর অ্যান্টিজেন বা অ্যান্টিবডির সঙ্গে অন্যান্য অনেক পরীক্ষা আছে, যা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন শ্বেতরক্তকণিকা, হিমাটোক্রিট, অণুচক্রিকা, রক্তের অ্যালবুমিন, যকৃতের এনজাইম এসজিপিটি ইত্যাদি। শুধু অ্যান্টিজেন টেস্ট করালে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অজানাই থেকে যেতে পারে।
সূত্র: অনলাইন
আরটিভি/এফআই
পূজায় ধুতি-পাঞ্জাবি সামলাবেন যেভাবে
পূজার কেনাকাটায় রকমারি ডিজাইন এবং সাজগোজের অপশন থাকে মহিলাদের ক্ষেত্রে, কিন্তু তা বলে ছেলেরাও পিছিয়ে থাকার পাত্র নয়। মেয়েরা যখন দুর্গাপূজায় বিভিন্ন ডিজাইনার শাড়িতে সেজে উঠবেন তখন পুরুষরাও নিজেদের সাজাবেন রকমারি স্টাইলের ধুতি পাঞ্জাবিতে। অনেকের পছন্দের তালিকাতেই ধুতি-পাঞ্জাবি রয়েছে। সামলানো ঝামেলা মনে করে পছন্দের তালিকায় থাকলেও সহসায় কেউ সাজতে চায় না। তবে এবারের পূজাতে ছেলেরা ধুতি পাঞ্জাবি যাতে সহজেই সামলাতে পারেন, চলুন জেনে নিই সে বিষয়ে কিছু টিপস।
জেনে নিন টিপস
বাঙালি পুরুষদের ঐতিহ্য ধুতি-পাঞ্জাবি। আর বিয়ে বা অন্য যে কোনও অনুষ্ঠানে এই ধুতি পাঞ্জাবি সব সময় মানিয়ে যায়। তবে এখন ধুতি-পাঞ্জাবি মানেই পুরনো দিনের ফ্যাশন না, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের ধুতি-পাঞ্জাবির আউটফিট তৈরি করেন ডিজাইনাররা।
আপনার সাইজ অনুযায়ী ধুতি পাঞ্জাবি কিনুন। অতিরিক্ত বড় কিনবেন না।
সাদা রঙের ধুতি প্যান্টের সঙ্গে কালো রঙের পাঞ্জাবি কিন্তু বেশ ভালো লাগে। প্রিয় মানুষটির পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করেও কিনতে পারেন পাঞ্জাবি।
যদি আপনি উচ্চতায় লম্বা হন সেক্ষেত্রে ধুতি প্যান্ট পরতে পারেন। প্রথমে গেঞ্জি পরুন এবং তারপর পাঞ্জাবি পরবেন।
ধুতির সঙ্গে কুর্তা না পরে ধুতির সঙ্গে টাক্সেডো পরে দেখতে পারেন, তাতেও কিন্তু দেখতে খুব সুন্দর লাগবে।
ধুতি পরার সময় খেয়াল রাখবেন, ধুতির হেম যেন পায়ের কয়েক ইঞ্চি ওপরে থাকে। নয়তো দুটিতে হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে যেতে পারেন।
আরটিভি/এফআই
যে গাড়ির দাম গোটা দেশের বাজেটের সমান
অনেকেই হয়তো দামি বাড়ি, দামি কাপড়, বা দামি গয়না দেখেছেন। কিন্তু কখনও কি এমন গাড়ি দেখেছেন, যার দাম একটি ছোট দেশের বাজেটের সমান? হ্যাঁ, এমন একটি গাড়ি আছে, যার দাম এত বেশি যে, তা কিনতে হলে অনেককেই পুরো পকেট খালি করতে হবে। এমনকি বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরাও এই গাড়ি কেনার আগে ১০০ বার ভাববেন!
তবে এত দামি হওয়ার পরেও, এই গাড়ি ব্যবহার করা একেবারে সহজ নয়। রাস্তায় কোথাও পার্ক করা থাকলে এবং কোম্পানির কেউ তা দেখে ফেললে, গাড়িটি সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হবে। এমনকি, গাড়ির মালিক যদি নিজের ইচ্ছামত কোনো পরিবর্তন আনতে চান, সেটাও সম্ভব নয়। যেন টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেও ভাড়া নেওয়ার মতো অবস্থা! কেন এমন বিশেষ অধিকার ধরে রাখে কোম্পানি? আজ জানাবো সে রহস্য।
রোলস রয়েস, যা সবসময়ই এক্সক্লুসিভ গাড়ির জন্য পরিচিত, এবার বাজারে এনেছে রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল। এটি ভেঙেছে সব রেকর্ড, কারণ এই বিলাসবহুল গাড়ির দাম ৩২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রায় ৩০০ কোটি টাকার সমান! তাই এটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ি। রোলস রয়েসের মতে, এই গাড়িটি এক গোলাপ ফুলের মতো, যা শুধু ধনীদের জন্যই তৈরি। কিন্তু সব ধনী ব্যক্তিরাও এটি কিনতে পারবেন না! কোম্পানি ক্রেতার স্ট্যাটাস যাচাই করে এবং নিশ্চিত হয় যে তিনি সত্যিই এই গাড়ি ব্যবহারে যোগ্য কিনা।
কিন্তু কেন এর মূল্য এত আকাশচুম্বী? রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল তৈরিতে ব্যয় করা হয়েছে হাজার হাজার ঘণ্টা। এর ডিজাইন অত্যন্ত আকর্ষণীয়, আর এতে আছে বিশেষ কিছু ফিচার। পেইন্টের পাশাপাশি গাড়ির সরঞ্জামেও রয়েছে বিলাসিতার ছোঁয়া। গাড়ির কাঠের কাজগুলোতে এমন বিশেষ পলিশ ব্যবহার করা হয়েছে, যা আলোতে চকচকে দেখায়।
গাড়িটির এক্সটেরিয়র ডিজাইন করতে ১৫০টির বেশি বৈচিত্র্য পরীক্ষা করা হয়েছে। ফ্রান্সের একটি বিশেষ গোলাপের সৌন্দর্যে অনুপ্রাণিত হয়ে গাড়িটি ডিজাইন করা হয়েছে, যার একটি গাঢ় লাল রং আছে, যা ছায়ার পড়লে কালো দেখায়। এই বিলাসবহুল গাড়িতে আছে দুটি দরজা ও দুটি আসন।
ইন্টেরিয়রের কথা বললে, গাড়িতে আছে ১,৬০০ এর বেশি হাত তৈরি কাঠের উপাদান। রোলস রয়েসের ইঞ্জিনিয়ার দল প্রায় ৫ বছর ধরে এই গাড়িটি ডিজাইন ও নির্মাণ করেছে। গাড়ির ড্যাশবোর্ডে আছে অডমার্স পিগুয়েট রয়্যাল ওয়াক কনসেপ্টের ঘড়ি। আর গাড়িটির গতি এত বেশি যে, এটি ০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছাতে সময় নেয় মাত্র ৫ সেকেন্ড।
এ ছাড়া, রোলস রয়েস গাড়ির কাস্টমাইজেশনের জন্য বিখ্যাত। গ্রাহক যে রকম চান, সেই অনুযায়ী গাড়িটি সাজিয়ে দেয় সংস্থা। এই গাড়ির এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম ৩০টি ফ্রিজের শক্তি সমান!
গাড়িটির ছাদে ব্যবহার করা হয়েছে ইলেক্ট্রোক্রোমিক কাঁচ, যা একটি বোতাম টিপেই স্বচ্ছ থেকে কালো হয়ে যায়। এতে রয়েছে একটি পরিবর্তনযোগ্য হার্ডটপ যা আধুনিক প্রযুক্তির এক প্রতীক। তবে, রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল শুধুমাত্র একটি গাড়ি নয়, এটি একটি স্টেটমেন্ট। ধনীরা মনে করেন এটি তাদের সম্পদ এবং সুনামের প্রতীক। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরাই সামর্থ্য রাখেন এমন চোখ ধাঁধানো গাড়ি কেনার। বিশ্বে মোট পাঁচটি রোলস রয়েস লা রোজ নোঁরে ড্রপটেইল বানানো হবে, যা গ্রাহকদের ইচ্ছা অনুযায়ী কাস্টমাইজ করে দেবে রোলস রয়েস।
আরটিভি / এএ
যেসব কারণে বাড়ছে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি
ব্রেস্ট ক্যানসার (স্তন ক্যানসার) এক ঘাতক ব্যাধি। নারীদের কাছে এ রোগ একটি আতংকের নাম। পুরুষের চেয়ে নারীদের স্তন ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে শতভাগ বেশি। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে রোগী ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যায়। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এখন নারীদের স্তন ক্যানসার মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। যদিও এর আগে জরায়ুর ক্যানসার শীর্ষস্থানে অবস্থান করছিল। নারীরা তাদের নিজেদের এই গোপন অঙ্গের রোগগুলো সহজে কারও কাছে বলতে চান না। ফলে তারা এ ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ব্রেস্ট ক্যানসারের কিছু নির্দিষ্ট ঝুঁকির কারণ রয়েছে, যেগুলোর জন্য এই ক্যানসারের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।
স্তন ক্যানসার কি, এর লক্ষণ ও করণীয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক—
স্তন ক্যানসার কি: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন বাংলাদেশে ক্যানসার আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের হারও। চিকিৎসকেরা বলছেন, স্তনের কিছু কোষ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে, ওই অনিয়মিত ও অতিরিক্ত কোষগুলো বিভাজনের মাধ্যমে টিউমার বা পিণ্ডে পরিণত হয়। সেটি রক্তনালীর লসিকা (কোষ-রস) ও অন্যান্য মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এই ছড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতাই ক্যানসার।
এর লক্ষণ
১. পারিবারিক ইতিহাস: যদি আপনার মা, বোন বা অন্য কোন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের স্তন ক্যানসার থাকে, তবে আপনার এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
২. জেনেটিক মিউটেশন: বিআরসিএ১ এবং বিআরসিএ২ জিনের মিউটেশন স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া টিপি৫৩ এবং পিটিইএন এর মতো অন্যান্য জেনেটিক মিউটেশনও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৩. হরমোনাল ফ্যাক্টর: দীর্ঘদিন ধরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের বেশি মাত্রায় প্রভাব থাকার ফলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যেমন, অল্প বয়সে মাসিক শুরু হওয়া এবং দেরিতে মেনোপোজ হওয়া।
৪. প্রজনন ও মাসিকের কারণ: সন্তান ধারণ না করা বা প্রথম সন্তানের জন্ম দেরিতে দেয়া (৩০ বছর বা তার পরে) স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৫. হরমোন থেরাপি: মেনোপোজ পরবর্তী হরমোন থেরাপি (যেমন ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন সমন্বিত থেরাপি) নেয়া হলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৬. জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস: অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং মদ্যপান ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৭. রেডিয়েশন থেরাপি: যদি পূর্বে বুকে রেডিয়েশন থেরাপি নেয়া হয়ে থাকে, তবে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
৮. ডেনস ব্রেস্ট টিস্যু: স্তনের টিস্যু যদি বেশি ঘন হয়, তবে ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ম্যামোগ্রামে ক্যানসার নির্ণয় করাও কঠিন হয়ে পড়ে।
৯. বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ, বিশেষ করে পলিউশন এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসা ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
১০. অ্যালকোহল ও ধূমপান: নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন ও ধূমপান স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
এগুলো ছাড়াও, কিছু কারণে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে যা এখনো পুরোপুরি প্রমাণিত নয়।
উপসর্গ
১. স্তনে চাকা দেখা দেওয়া।
২. স্তনের চামড়ার রং পরিবর্তন হওয়া বা চামড়া মোটা হওয়া। (কমলালেবুর খোসার মতো)
৩. নিপল বা স্তনের বোঁটা ভেতরে দেবে যাওয়া।
৪. নিপল দিয়ে রক্ত বা পুঁজ পড়া।
ডায়াগনোসিস বা শনাক্তকরণ পরীক্ষা
প্রথমেই বিশেষজ্ঞরা রোগীর রোগের history নিয়ে থাকেন। শারীরিক পরীক্ষা করেন। বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে ব্রেস্ট ক্যানসার শনাক্ত করা হয়। রোগীর বয়সের সঙ্গে সামাঞ্জস্য রেখেই বিশেষজ্ঞরা তা দিয়ে থাকেন। যেমন-
১. ম্যামোগ্রাফি * আলট্রাসনোগ্রাফি * এমআরআই * FNAC -চাকা থেকে * বায়োপসি/মাংস পরীক্ষা
চিকিৎসা
২. প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে শতকরা ৯০-৯৫ ভাগ রোগী সুস্থ হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন। এ ক্যানসারের চিকিৎসা প্রধানত কয়েক ভাগে বিভক্ত-
৩. সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি।
৪. হরমোন থেরাপি ও টার্গেটেড থেরাপি।
সার্জারি: স্তন ক্যানসারের যে কোনো পর্যায়েই রোগীর সার্জারি করা প্রয়োজন হতে পারে। সার্জারি করা যাবে কিনা বা কী ধরনের সার্জারি হবে তাই প্রাথমিক বিবেচ্য বিষয়। সিদ্ধান্ত নেবেন সার্জন এবং ক্যানসার বিশেষজ্ঞ দুজনে মিলে। অনেক সময় শুধু টিউমার কেটে ফেলা হয়। অনেক সময় পুরো বেস্টই ফেলে দেয়া হয়।
কেমোথেরাপি: প্রায় সব রোগীকেই কেমোথেরাপি নিতে হয়। সার্জারির আগে বা পরে এমনকি রোগ শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়লেও কেমোথেরাপি কাজ করে। যদিও কেমোথেরাপিতে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে তবুও রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য কেমোথেরাপির বিকল্প নেই। রোগীর শারীরিক অবস্থা, কেমোথেরাপির কার্যকারিতা, রোগীর আর্থিক অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়েই ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা উপযুক্ত পরামর্শ দেন। কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যাতে কম হয় তারও ব্যবস্থাপত্র দেন চিকিৎসকরা।
রেডিওথেরাপি: বিশেষ ধরনের মেশিনের মাধ্যমে রোগীদের রেডিওথেরাপি চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে অনেক কম। সাধারণ কেমোথেরাপির পরই রেডিওথেরাপি দেয়া হয়। শুধু স্তনে এ নয়, যদি ক্যানসার পড়ে তাহলেও সেখানে রেডিও থেরাপি দিয়ে হাড়ের ভাঙন বা ফ্র্যাকচার রোধ করা যায়।
হরমোন থেরাপি: সব ব্রেস্ট ক্যানসারের রোগীর জন্য হরমোনের দরকার নেই। ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই হরমোনের চিকিৎসা কাদের লাগবে তা শনাক্ত করেন।
টার্গেটেড থেরাপি: এ থেরাপি রোগীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। যেমন- Transtyuumab, Lapatinib, Bevacizumab ইত্যাদি।
করণীয়: ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য Breast Cancer Screening জরুরি। ক্যানসার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে সবারই জানা উচিত এবং এই program-এর আওতায় আসা উচিত। তাহলে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়বে এবং রোগী দ্রুত সুস্থ হবে।
আমাদের সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রা এবং জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন হলে (যা ক্যানসার রোগের কারণ) এ রোগের প্রকোপ অনেকাংশেই কমে আসবে এবং আমাদের সমাজে সুস্থ-সুন্দর জীবনের অধিকারী মানুষের অবস্থান সুদৃঢ় হবে।
যারা স্তন ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে আছেন
বয়স্ক নারী, যাদের স্তন ক্যানসারের পারিবারিক ইতিহাস আছে, যেসব নারীরা সন্তানকে বুকের দুধ পান করাননি BRCA-1, BRCA-2 নামক জিনের মিউটেশনের কারণে, অল্প বয়সে মাসিক শুরু হওয়া, দেরিতে মাসিক বন্ধ হওয়া, মদ্যপান করলে, স্তনের কিছু অসুখ যেমন atypical ductal বা lobular hyperplasia থাকলে। এছাড়া অন্য কোনো ক্যানসার যেমন- কোলন, ডিম্বাশয়ে ক্যানসার হলে।
এই রোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখা, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা, এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার পরিবারে স্তন ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র: অনলাইন
আরটিভি/এফআই
বৃষ্টির দিনে খিচুড়ির স্বাদ বাড়াতে সঙ্গে রাখতে পারেন যেসব পদ
বৃষ্টির দিন খিচুড়ি ছাড়া কী জমে, বৃষ্টি হলেই মনের কোণে যেন খিচুরি খাওয়ার বাসনা জেগে ওঠে। এমন দিনে মেন্যুতে ভুনা খিচুড়ি, ল্যাটকা খিচুড়ি বা সবজি খিচুড়ি রাখতে পারেন।
চলুন দেখে নিই সহজেই খিচুড়ি রান্নার রেসিপি—
উপকরণ: পোলাও চাল ১ কাপ, পাঁচ মিশালি ডাল ১ কাপের চার ভাগের এক ভাগ, গাজর, কুমড়ো, ফুলকপি, আলু মিলিয়ে এক থেকে দেড় কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ ৪-৫টি, আদা রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুড়ো ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ, জিরা গুড়ো আধা চা চামচ, তেল ১ চা চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: একটা হাড়িতে তেল গরম করে নিয়ে পেঁয়াজ কুচি ভাজুন। এরপর তাতে মসলা দিয়ে কসিয়ে চাল, ডাল ও সবজি কষান। এবার পরিমাণ মতো পানি ও স্বাদমতো লবণ দিন। খিচুড়ি রান্না হয়ে এলে কাঁচামরিচ ছিটিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে নামিয়ে নিন।
খিচুড়ির সঙ্গে খাওয়া যায় এমন মজাদার কিছু পদ—
টক আচার বা টক-মিষ্টি থাকলে সেটাও সাজিয়ে নিন খাবার টেবিলে বসার আগে। খিচুড়ির স্বাদ বেড়ে যাবে অনেক গুণ। খাওয়ার আগে এক চামচ ঘি ছড়িয়ে নিন খিচুড়ির ওপরে। দুর্দান্ত স্বাদ উপভোগ করুন বৃষ্টির এই দিনে।
বাসায় পটল থাকলে ছুরি দিয়ে বাইরের অংশ সামান্য চেঁছে নিন। খোসা ছাড়ানোর প্রয়োজন নেই। চেঁছে নেওয়া হলে মাঝখান দিয়ে অর্ধেক করে লবণ, হলুদের গুঁড়া ও মরিচের গুঁড়া মেখে তেলে ভেজে নিন। পেঁয়াজের বেরেস্তা ছিটিয়ে নিন ভাজা পটলের ওপরে।
টমেটো চাকা করে কেটে অল্প তেলে পোড়া পোড়া করে ভেজে নিন। গরম গরম খিচুড়ির সঙ্গে পরিবেশন করুন। টমেটো, গাজর ও শসা কুচি করে পেঁয়াজ ও মরিচ কুচি দিয়ে মেখে পরিবেশন করুন খিচুড়ির সঙ্গে।
বেগুন চাকা করে কেটে লবণ ও হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে ভেজে নিন তেলে। ঝটপট তৈরি করে ফেলা যায় মজার এই বেগুন ভাজা। খিচুড়ির সঙ্গে খেতেও লাগে দুর্দান্ত।ভর্তা খেতেও দারুণ লাগে খিচুড়ির সঙ্গে। রসুন ভর্তা, মরিচ ভর্তা, টমেটো ভর্তা, পেঁয়াজ-মরিচের ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা কিংবা যেকোনো সবজির ভর্তা পরিবেশন করতে পারেন খিচুড়ির সঙ্গে।
আরটিভি/এফআই-টি
হাঁটলে কি বাড়তে পারে হাঁটুর ব্যথা
বর্তমান সময়ে কম বয়সেই অনেকে হাঁটু ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে কষ্ট পাচ্ছেন। বিশেষত, মহিলাদের মধ্যেই এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। আর একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে সামান্য হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হয়। ব্যথা-যন্ত্রণা জর্জরিত হয়ে আক্রান্ত অনেকে হাঁটা বন্ধ করে দেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, হাঁটলে কি সত্যিই হাঁটু ব্যথা বাড়ে, এ বিষয়ে চিকিৎসকদের মতামত জেনে নেওয়া যাক।
হাঁটলে কি হাঁটুর ব্যথা বাড়ে: চিকিৎসকরা জানান, আমাদের হাঁটুর দুই হাড়ের মধ্যে থাকে সাইনুভিয়াল ফ্লুইড। এ বার অনেক সময় এই তরলের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে হাড়ে হাড়ে ঘঁষা লাগে, খুব ব্যথা হয়। আর এই সমস্যার নামই হলো অস্টিওআর্থ্রাইটিস। সমস্যা হলো, এই রোগে ভুক্তভোগীদের অনেকেই মনে করেন হাঁটলে বুঝি ব্যথা বাড়তে পারে। তবে বিষয়টা একবারেই তেমন নয়। বরং হাঁটু ব্যথা নিয়েই হাঁটতে হবে। তাতেই সুস্থ থাকবেন।
মেনে চলতে হবে যেসব নিয়ম: হাঁটুর ব্যথা নিয়ে হাঁটতে চাইলে সমতল জায়গায় হাঁটতে হবে। কোনও এবড়োখেবড়ো জায়গায় হাঁটলে সমস্যা বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা চেষ্টা করুন সিঁড়ি এড়িয়ে যাওয়ার। কারণ, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে হাঁটুর ওপর চাপ বাড়বে। যার জন্য ব্যথা-বেদনা বাড়তে পারে। তাই আপনারা সিঁড়ি ভাঙবেন না। এই নিয়মটা মেনে চললেই হাঁটু ব্যথা নিয়েও হাঁটতে পারবেন। কোনও সমস্যা হবে না।
যাদের হাঁটুতে ব্যথা নেই, তাদের দৈনিক ৪৫ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে হাঁটু ব্যথা থাকলে এই নিয়মে হাঁটা চলবে না। সেক্ষেত্রে একবারে নয়, বারবারে হাঁটতে হবে। ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পর্যন্ত, প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটতে পারেন। তাতেই ওজন কমবে। সেই সঙ্গে ডায়াবিটিস, প্রেশার এবং কোলেস্টেরলও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও মিলবে একাধিক উপকার।
শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে যান: আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই হাঁটু ব্যথা শুরু হওয়ার অনেক দিন পর চিকিৎসকের কাছে যান। তখন আর কিছু করার থাকে না। অনেক সময় হাঁটু প্রতিস্থাপনেরও প্রয়োজন পড়ে। তবে রোগের প্রথম পর্যায়েই যদি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে এতটা ঝামেলা পোহাতে হয় না। কিছু ওষুধ খেলেই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাই হাঁটু ব্যথা শুরু হলে ফেলে রাখবেন না। বরং ঝটপট বিশেষজ্ঞের কাছে যান, তার পরামর্শ নিন। তা না হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে সময় লাগবে না।
রোগ প্রতিরোধ জরুরি: আমাদের মধ্যে অধিকাংশই প্রতিদিন শরীরচর্চা করেন না। এমনকী হেঁটেচলে বেড়ানোর অভ্যাসও খুব কম। যেই কারণে বাড়ছে হাঁটু ব্যথার প্রকোপ। তাই যাদের এখনও হাঁটু ব্যথা হয়নি, তারা প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটুন। দিনে মাত্র ৪৫ মিনিট হাঁটলেই এই সমস্যা থেকে অনেকটা দূরে থাকা যায়। অন্যথায় হাঁটুর হাল বেহাল হয়ে যেতে পারে। এমনকী শরীরে বাসা বাধঁতে পারে একাধিক জটিল অসুখ। তাই আজ থেকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
আরটিভি/এফআই
ছানি অস্ত্রোপচারে দেরি হলে যেসব ক্ষতি হয়
চোখের ছানি বিষয়ে আমরা অনেকেই অবগত। চোখে এক ধরনের স্বচ্ছ লেন্স আছে, যা প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি। যা চশমার গ্লাস বা লেন্সের মতোই আমাদের দেখতে সাহায্য করে। এটি এক ধরনের উভতল বা কনভেক্স লেন্স। চোখের অভ্যন্তরভাগে সামনের অংশে এই লেন্সটির অবস্থান। কোনো কারণে যদি প্রাকৃতিক এই লেন্সটি তার স্বচ্ছতা হারিয়ে ফেলে অর্থাৎ ঘোলা হয়ে যায় তবে আলোকরশ্মি চোখের ভেতরে প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে দেখার কাজটি বিঘ্নিত হয়। লেন্সের এই ঘোলা অবস্থাটিকে বলা হয় ক্যাটারেক্ট বা ছানি। চোখের ছানি বলতে লেন্স অস্বচ্ছ হওয়াকেই বুঝায়। আর সঠিক সময়ে ছানি অস্ত্রোপচার না করলে চোখে বেশ কয়েকটি ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
ছানি অস্ত্রোপচারে দেরি করার বেশ কয়েকটি ত্রুটি রয়েছে, জেনে নিন-
>> ছানি অস্ত্রোপচারে দেরি করা ছানি গ্রেডের অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। ছানির ধরন এবং গ্রেডের ওপর নির্ভর করে, দেরি করে ছানি অস্ত্রোপচার একটি ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে পরিণত হতে পারে।
>> হার্ড লেন্স ইমালসিফাই করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এটি আশেপাশের কাঠামোর ক্ষতি করতে পারে।
>> ক্ষত পুড়ে যাওয়া, লেন্সের ক্যাপসুলার ব্যাগ ফেটে যাওয়া, অপারেশনের সময় বেড়ে যাওয়া, লেন্সের সমর্থন নষ্ট হওয়া ইত্যাদির মতো অন্যান্য ইন্ট্রা-অপারেটিভ সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
>> এছাড়াও, চোখের উচ্চ চাপ, কর্নিয়ার শোথ ইত্যাদির মতো কিছু পোস্টঅপারেটিভ জটিলতা ঘটতে পারে।
>> ছানির অগ্রগতি চোখের ভিতরে প্রদাহ এবং উচ্চ চাপ হতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে পরিচালিত না হলে উভয়ই দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ অপরিবর্তনীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে।
>> যাদের ছানি রয়েছে তাদের ম্লান আলোতে দৃষ্টিশক্তি কম থাকে। এ কারণে রাতে ওয়াশরুম ব্যবহার করার সময় তারা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বয়স্কদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ফ্র্যাকচার ছানি এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্বল দৃষ্টির কারণেই হয়।
ছানি অস্ত্রোপচারের পর রোগীর যা করণীয়:
বয়স বাড়লে, আঘাত লাগলে, চোখে অন্য কোনো প্রদাহ হলে, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ হলে, দীর্ঘদিন চোখে কোনো ড্রপ দিলে চোখে ছানি পড়তে পারে। ছানি তিন ধরনের হয় Ñ নিউক্লিয়ার, কর্টিক্যাল ও সাব ক্যাপসুলার।
ছানির চিকিৎসা : অপারেশনই ছানির একমাত্র চিকিৎসা। ওষুধ বা চশমা দিয়ে ছানির চিকিৎসা সম্ভব নয়। ছানি অপারেশনে চোখের ভেতরের অস্বচ্ছ লেন্স বের করে সেই স্থানে কৃত্রিম লেন্স বসাতে হয়। বিভিন্নভাবে ছানির অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে। যেমন- ফ্যাকো সার্জারি (সেলাইবিহীন ছানি অস্ত্রোপচার) ও প্রচলিত ছানি অস্ত্রোপচার (সেলাইযুক্ত)।
ফ্যাকো সার্জারি : চোখে কৃত্রিম লেন্স বসাতে ছানি গলিয়ে বের করে আনা হয়। এ অস্ত্রোপচার ফ্যাকো সার্জারি চিকিৎসাবিজ্ঞানের আশীর্বাদ। তুলনামূলক বিচার করলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। ফ্যাকো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লেন্স গলিয়ে বের করা হয়। এ পদ্ধতিতে রক্তক্ষরণ হয় না। আড়াই থেকে তিন মিলিমিটার ছিদ্র করা হয়। সেলাইয়ের প্রয়োজন হয় না। অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সঙ্গে রোগী বাড়ি যেতে পারেন। এ অস্ত্রোপচারের পর সাতদিন চোখে পানি না ব্যবহার করলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
ফ্যাকো সার্জারি : সেলাইবিহীন। দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব। ৩-৪ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যায় (গাড়ি চালানো, লেখাপড়া করা, টিভি দেখা, অফিস করা)। দীর্ঘদিন ভর্তি থাকতে হয় না। অপারেশনের পর বাসায় চলে যাওয়া যায়। যেসব রোগী সহযোগিতা করতে পারেন, তাদের শুধু ড্রপের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করা হয়। ইনজেকশন না দিলে এবং ডাক্তার উপযুক্ত মনে করলেঅস্ত্রোপচারের পর চোখে ব্যান্ডেজ না দিয়ে বাড়ি পাঠাতে পারেন। জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা নেই। অস্ত্রোপচারের পরপর স্বাভাবিক খাবার খেতে পারবেন।
অপারেশন করতে করণীয় : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অস্ত্রোপচার করার উপদেশ দিলে অস্ত্রোপচারের আগে ৩-৪টি পরীক্ষা করতে হবে। যেমন- ডায়াবেটিসের জন্য ব্লাড সুগার, ইসিজি, চোখে যে লেন্স বসানো হবে তার মাপের জন্য বায়োমেট্রিক, চোখের প্রেসার পরীক্ষা ও করোনাকালীন করোনার টেস্ট করাতে হবে।
ফোল্ডেবল লেন্স : এটি লেন্সের সর্বশেষ সংস্করণ। এটি নরম, ভাঁজ করা যায়। এ লেন্সের ক্ষেত্রে মাত্র ২.৫-৩ মিমি. কাটতে হয়। এ ক্ষেত্রে অপারেশনের পর লেন্সের পেছনে অস্বচ্ছ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। চোখ দ্রুত সেরে ওঠে।
সাধারণ লেন্স : সাধারণ প্রচলিত লেন্স শক্ত, ভাঁজ করা যায় না। এটির ক্ষেত্রে ৫.৫ মিলিমিটার কাটতে হয়। অপারেশনের পর লেন্স অস্বচ্ছ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ইনজেকশনের মাধ্যমে অবশ করতে হয়। স্বল্পপরিমাণ রক্তক্ষরণের আশঙ্কা থাকে।
অপারেশনের পর করণীয় : অস্ত্রোপচারের পর ছাড়পত্রে লিখিত ওষুধ নিয়মমাফিক ব্যবহার করতে হবে। সাতদিন চোখে সরাসরি পানি লাগানো যাবে না। অস্ত্রোপচারের পরের দিন, সাতদিন পর এবং একমাস পর মোট তিনবার ডাক্তারের কাছে আসতে হবে। এর মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। চোখের যত্ন নিন। চোখ ভালো থাকলে আপনিও ভালো থাকবেন।
তথ্যসূত্র: অনলাইন
আরটিভি/এফআই