যে ৬ খাবারেই কমবে কোলেস্টেরল থেকে ডায়াবেটিস
মানুষের খাদ্যাভ্যাসের কারণে এবং অলস জীবনযাপনে শরীরে কোলেস্টেরল ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। কিছু রোগ রয়েছে কোলেস্টেরলের জন্য দায়ী, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ফাইবারযুক্ত খাবার বেছে নিতে হবে। ফাইবার পানির সঙ্গে দ্রবীভূত হয়ে যায় এবং জেল আকারে গঠিত হয়। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। পাশাপাশি ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে।
জেনে নিন ফাইবারযুক্ত খাবারের নাম-
- এক কাপ ওটসের মধ্যে ১.৯ গ্রাম ফাইবার রয়েছে। ওটস হলো বিটা-গ্লুটেনের সমৃদ্ধ উৎস, যা এক প্রকার দ্রবনীয় ফাইবার। এটি উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং হার্টের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।
- মুগ, ছোলা, মুসুর থেকে শুরু করে কাবুলি ছোলা, রাজমার মতো ডালেও ফাইবার রয়েছে। এক রাজমা ডালের মধ্যে ১৩৩ গ্রাম ফাইবার রয়েছে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ডাল। তার সঙ্গে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস হলো ডাল।
- ফাইবারের ঘাটতি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়ায়। ফ্ল্যাক্স সিডের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। পাশাপাশি শারীরিক প্রদাহ কমায় এবং পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখে। ১ চামচ ফ্ল্যাক্স সিডের মধ্যে ০.৬ থেকে ১.২ গ্রাম ফাইবার রয়েছে।
- ফ্ল্যাক্স সিডের মতো চিয়া সিডেও সলিউবল ফাইবার ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এই বীজ শারীরিক প্রদাহ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে। ১ চামচ চিয়া সিডের মধ্যে ২৪ গ্রাম ফাইবার রয়েছে।
- আপেল ফাইবারের সমৃদ্ধ উৎস। আপেলে থাকা ফাইবারকে পেকটিন বলা হয়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। একটি মাঝারি সাইজের আপেলে ১ গ্রাম ফাইবার রয়েছে।
- গাজর, ব্রকোলি, কড়াইশুঁটি, পালংশাকের মতো শাকসবজিতে ভরপুর পরিমাণে ফাইবার পেয়ে যাবেন। হজম স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে এবং কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে শাকসবজি খান বেশি করে।
মন্তব্য করুন
ইউরিক অ্যাসিডে কুমড়া খাওয়া কি ভালো
দেশে হোক বা বিদেশ, সব জায়গায় সহজলভ্য সবজির মধ্যে কুমড়া অন্যতম। এটি থেকে অনেক ধরনের খাবার তৈরি করা হয়। কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। ফলে স্বাস্থ্যের জন্য তা উপকারী বলাই চলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া এর ব্যবহারে শরীরের নানা ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এখন এমন পরিস্থিতিতে এই প্রশ্নটা নিশ্চয়ই অনেকের মনেই থাকতে পারে যে, তারা যদি ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাহলে কুমড়া খাওয়া নিরাপদ কি না, আসুন বিশেষজ্ঞদের মতামত জেনে নিই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরাও কুমড়ো খেতে পারেন। কুমড়াতে পিউরিন মেটাবলিজম ত্বরান্বিত হয়, যার কারণে শরীরে দ্রুত ডিটক্স হয়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ইউরিক অ্যাসিডে কুমড়া খাওয়া কতটা উপকারী—
রক্তে ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে কুমড়া।
কুমড়া আদপে ইউরিক অ্যাসিডের যম। কুমড়া খেলে তার ফাইবারের জন্য ইউরিক অ্যাসিড জমতে পারে না।
কুমড়ার প্রদাহনাশী উপাদানের কারণে কুমড়ো খেলে যারা গাঁটের ব্যথায় ভোগেন, তাদেরও অনেকাংশে আরাম মেলে।
বাতের ব্যথা হলে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন, চর্বিযুক্ত ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার উপদেশ দেন চিকিৎসকেরা।
কুমড়ার বীজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা হজমের এনজাইম বাড়ায় এবং প্রোটিন হজম করতে সাহায্য করে।
কিন্তু কুমড়া এই সময় খাওয়াই যায়। তবে সবই খেতে হবে তেল-মশলা ছাড়া। কুমড়োর তরকারি বা স্যুপ এক্ষেত্রে খুবই উপকারী।
তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের ক্ষেত্রে শুধু গাঁটের ব্যথা কমানোর জন্য কুমড়া বেশি বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে।
মিষ্টি কুমড়ায় শর্করা থাকায় তা আমাদের রক্তে শর্করা মাত্রা এক ধাক্কায় বাড়িয়ে দিতে পারে। আর তা ক্ষতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
হিমালয়ের ১৮ হাজার ফুট উঁচু থেকে লাফ দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড
বিশ্ব রেকর্ড করার জন্য নেপালের হিমালয় পর্বত থেকে স্কিইং করার সময় বিশাল লাফ দিয়েছেন ব্রিটেনের একজন নির্ভীক মানুষ। এই ব্যক্তির নাম জোশুয়া ব্রেগম্যান, বয়স ৩৪ বছর। এই ভয়ানক প্রচেষ্টা করার কারণে, জোশুয়া বিশ্বের সর্বোচ্চ স্কি-বেস জাম্পের জন্য একটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন।
যেভাবে এই অনন্য কীর্তিটি করলেন তিনি:
জোশুয়া, সবসময় দুঃসাহসিক কার্যকলাপ পছন্দ করেন এবং একটি ভ্যানেই জীবন কাটান। এই দুর্দান্ত প্রচেষ্টার জন্য, সহকর্মীদের সঙ্গে, দুই সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন জোশুয়া। স্কিইং করার সময় জোশুয়া যে পাহাড় থেকে লাফ দিয়েছিলেন তার নাম মেরা পিক। এর জন্য তিনি প্রথমে মেরা পিক পর্যন্ত হাইকিং করেন, উচ্চতায় পৌঁছে ক্যাম্পিং করেন। উল্লেখ্য, মেরা পিকের উচ্চতা ১৮ হাজার ৭৫৩ ফুট অর্থাৎ ৫ হাজার ৭১৬ মিটার। স্কি করার পর প্যারাসুট ব্যবহার করে মাটিতে নেমেছিলেন জোশুয়া। এই বিস্ময়কর কৃতিত্বের মাধ্যমে এখন গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছেন তিনি।
এসেছিল অনেক বাধা
জোশুয়া এবং তার সঙ্গীরা যখন প্রথম নিজেদের সম্ভাব্য স্কি স্পটে পৌঁছেছিলেন, তখন তারা একটি বড় পাথুরে ঢাল দেখতে পেয়েছিল। এর পরে জোশুয়ার মনে হয়েছিল যে তাঁর প্রচেষ্টা হয়ত ব্যর্থ হয়েছে। পরের বছর আবার চেষ্টা করতে হবে। তবে শীঘ্রই তিনি আশার আলো দেখতে পান। কিছু সময় পর, জোশুয়া স্কি করার জন্য সঠিক ঢাল খুঁজে পেয়ে, প্রথমে এটি পরিষ্কার করেছিলেন তিনি। জোশুয়া বলেছেন, এই রেকর্ড তৈরি করতে আমরা সবাই খুব পরিশ্রম করেছি। অক্সিজেনের অভাব, ক্রমাগত মাথাব্যথা এবং প্রায় ৬,০০০ মিটার উচ্চতায় ক্লান্ত শরীরকে দুর্বল করে দিয়েছিল। তবুও সব প্রতিকূলতা সামলে, দুই দিন পরে, জোশুয়া স্কিইং করার সময় লাফ দিয়ে ২০১৯ সালে তৈরি করা পুরনো রেকর্ড ভেঙে ফেলেছেন।
স্কি-বেস জাম্পিং কী
বেস জাম্পিংয়ের ঝুঁকির সঙ্গে স্কিইংয়ের রোমাঞ্চকে একত্রিত করে স্কি-বেস জাম্পিং। এর জন্য অনন্য বশক্তি এবং নমনীয়তার প্রয়োজন। এক কথায় বলতে গেলে, স্কি-বেসজাম্পিং হলো এমন একটি চরম খেলা, যেখানে উঁচু পাহাড় থেকে এক লাফে স্কি করতে হয়। বাতাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্যারাসুট নিয়ে মাটিতে অবতরণ করতে হয়।
জোশুয়া মানব পাচার সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন: জোশুয়া এই রেকর্ডের মাধ্যমে একটি চ্যারিটি সংস্থার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল নেপালে মানব পাচারের সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া।
জানা গিয়েছে, এই অনন্য রেকর্ড তৈরির পুরো খরচ জোশুয়া নিজেই বহন করেছিলেন। এর জন্য তিনি তার বন্ধুদের কাছ থেকে সেকেন্ড-হ্যান্ড স্কি সরঞ্জাম ধার নিয়েছিলেন এবং সস্তা পোশাকই পরতেন। এ প্রসঙ্গে জোশুয়া বলেছেন, ‘কিছু অর্জন করতে দামী জিনিস লাগে না, সাহস লাগে।’
সূত্র: অনলাইন
বন্যায় বিপদ এড়াতে প্রস্তুতি ও করণীয়
টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় কবলিত হয়েছে দেশের ১১ জেলা। তলিয়ে গেছে দেশের নিম্নাঞ্চলের অসংখ্য বসতবাড়ি। অসংখ্য মানুষের দিন কাটছে পানির নিচে। বন্যা হচ্ছে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগ কিছু অঞ্চলের জন্য প্রতিবছরই অবধারিত। কিন্তু এই বছর বন্যার চিত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশের একাংশ তলিয়ে গেছে পানির নিচে। অনাহার আর বিশুদ্ধ পানির অভাবে আঁকড়ে ধরছে রোগবালাইও। বন্যা পরিস্থিতি সবার জন্যই ভীতিকর হলেও এ সময় সবার শান্ত থেকে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বন্যা পরবর্তী সময়ে নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচাতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। যা স্বাস্থ্য সুরক্ষা আর জীবন বাঁচাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্যার সময় এবং বন্যা পরবর্তী সময়ে আমাদের করণীয় কিছু বিষয় নিয়ে জানুন এই আয়োজনে।
বন্যার সময় করণীয়—
বন্যার পানি বাড়িতে প্রবেশ করলেই বাড়ির শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, প্রতিবন্ধীদের দ্রুত বন্যামুক্ত নিরাপদ স্থানে কিংবা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রেখে আসুন।
দলিল, সনদপত্র, লাইসেন্সের মতো প্রয়োজনীয় ও জরুরি কাগজপত্র একাধিক পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে বন্যামুক্ত এলাকায় কোনো আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত ব্যক্তির কাছে রাখতে পারেন। বাড়ির উঁচু স্থানেও এসব কাগজ রাখা নিরাপদ নয়। কারণ, যেকোনো সময় বন্যা বড় আকার বাড়তে পারে। পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাড়িতে উঁচু স্থান থাকলে দামি এবং পানিতে নষ্ট হয়ে যাবে এমন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সেখানে দ্রুত সরিতে রাখুন। উঁচু স্থান না থাকলে একটি উঁচু মাচা তৈরি করতে পারেন। চাইলে বন্যামুক্ত এলাকায় সরিয়ে নিতে পারেন।
বন্যা মোকাবিলায় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য ব্যবহার করা। কারণ, বন্যায় অধিকাংশ রোগই পানি ও খাদ্যবাহিত। তাই বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি। পানি ছেঁকে কমপক্ষে আধাঘণ্টা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করুন। এই ব্যবস্থা না থাকলে ফিটকিরি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়েও পানি বিশুদ্ধ করা যায়।
এ সময় নোংরা পানি, আবহাওয়া, টানা বৃষ্টির কারণে নানা স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দেয়। সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় ডায়রিয়ার প্রকোপ। হাতের কাছে খাবার স্যালাইন রাখুন। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য স্যাভলন ও ব্যান্ডেজ রাখতে পারেন।
বন্যার পানি ধেয়ে আসলে ঘরের সকল বিদ্যুতের সুইচ এবং মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন। এতে বিদ্যুৎ ঘটিত সাম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে।
দুর্যোগের মধ্যেই রাত কাটাতে হবে। তাই হাতের নাগালে দেশলাই, মোমবাতি, হারিকেন, টর্চ লাইট রাখুন।
বন্যার সময় মনোবল শক্ত রাখুন। নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান। নিরাপদে থাকুন। জিনিসপত্রের কথা ভেবে ঘরে থেকে যাবেন না। হঠাৎ পানির স্রোত বাড়লে বিপদে পড়বেন।
বন্যার সময় বীজতলা গেলে নানানভাবে চারা উৎপাদনের ব্যবস্থা জানুন। কলাগাছের ভেলা বানিয়ে সেই ভেলার ওপর কাদামাটির প্রলেপ দিয়ে বীজ ছিটিয়ে দিন। বীজতলায় চারা থাকলে তা মাটিসহ তুলে উঁচু স্থানে নিয়ে যান।
বন্যার শঙ্কা থাকলে গবাদিপশুকে টিকা দিয়ে নিতে হবে। বন্যায় যদি কোনো গবাদিপশুর প্রাণহানি হয়, তবে তাকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া যাবে না। মাটিতে পুঁতে ফেলুন।
বন্যা পরবর্তী সময়ে করণীয়—
বন্যার চাইতে বন্যা পরবর্তী সময়টাই সবচেয়ে কঠিন সময়। তাই সে সময়ে কর্তৃপক্ষের কথা শুনুন। তারা অনুমতি দিলেই বা নিরাপদ বলার পরেই বাড়ি ফিরবেন।
একটি সারভাইভাল কিট প্যাক করুন। সেখানে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানি নিন। প্রত্যেকের জন্য একটি করে পোশাক, প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন।
জরুরি তথ্যের জন্য রেডিও, স্থানীয় পরিবর্তনকারী সিস্টেম বা সরকারী নির্দেশাবলী শুনুন।
বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্যার পানিতে হাঁটবেন না, সাঁতার কাটবেন না বা গাড়ি চালাবেন না। কারণ ৬ ইঞ্চি পানির স্তরেও আপনি নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন।
ভেজা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে দূরে থাকুন, এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে।
বাড়িতে ঢোকার আগে দেখে নিন কোনো কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে কি না।
বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিদর্শন করার আগে পাওয়ার চালু করবেন না।
সাপ ও বিভিন্ন প্রাণী আপনার বাড়িতে থাকতে পারে, তাই সতর্ক থাকুন। সম্ভব হলে গ্লাভস ও বুট পরুন।
বন্যা-দূষিত প্রতিটি ঘর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও শুকিয়ে নিন।
আপনার যদি কোনো বীমা থাকে তাহলে নিশ্চিত করুন যে বীমা দাবির নথি হিসেবে ছবি বা ভিডিও আছে কি না।
কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে সহজেই করুন ত্বকের পরিচর্যা
কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে পার্লারে গিয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করতে পিছপা হন না অধিকাংশই। তবে জানেন কি, ত্বকের হাল ফেরাতে সব সময়ই যে এত টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়ে তা কিন্তু নয়, কারণ আমাদের হাতের কাছে থাকা বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের গুণে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনা যায় নিমেষে। আর তাতে খরচ হয় নামমাত্র।
সেই সব উপকারী প্রাকৃতিক উপাদানের তালিকায় একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছে কর্নফ্লাওয়ার। এই উপাদানই ক্লিনজারের কাজ করে। ত্বকের যত্নের জন্য এই ময়দা যে খুব উপকারী একটি জিনিস, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। নরম, মোলায়েম, পেলব ত্বক পেতে সাহায্য করবে ময়দা। এর গুণে ত্বকের দাগছোপ মলিন হতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ত্বকে যাতে অতিরিক্ত মাত্রায় তেল নিঃসরণ না হয়, সেদিকেও নজর রাখে। এমনকী প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবেও কর্নফ্লাওয়ারের জুড়ি মেলা ভার। কর্নফ্লাওয়ারের উপস্থিত ভিটামিন বি ত্বকের অন্দরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে, যা জমে থাকা টক্সিনকে সহজেই বের করে দেয়। কিন্তু কর্নফ্লাওয়ার রুক্ষ-শুষ্ক ত্বকে ব্যবহার না করাই শ্রেয়। তাতে ত্বকের আরও বেশি মাত্রায় ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে তৈলাক্ত ত্বকে ময়দা ব্যবহার করলে হাজারও উপকার মিলবে।
জেনে নিন, সহজেই কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করার নিয়ম—
দুধ কিংবা পানির সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে তার মধ্যে দিন সামান্য পাতিলেবুর রস ও মধু। এই মিশ্রণ মিনিট ১৫ ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে। আলতো হাতে ম্যাসাজ করে নিন। তারপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিলেই হবে। সপ্তাহে তিনদিন এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন আপনি। ত্বক থাকবে মোলায়েম। সেই সঙ্গে দূর হবে ত্বকের কালচে দাগছোপও।
টকদই, সামান্য চিনি আর কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারবেন ফেস স্ক্রাব। এই মিশ্রণ আপনার ত্বক থেকে ডেড স্কিন সেল অর্থাৎ ত্বকের মরা কোষ ঝরিয়ে ফেলতে সাহায্য করবে। এর ফলে ত্বক দেখতে ঝকঝকে লাগবে। চোখের নীচের কালচে দাগও দূর করতে পারবে এই ফেস স্ক্রাব।
ত্বকের জন্য হলুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ। কর্নফ্লাওয়ারের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে নেওয়া যাবে। এই ফেসপ্যাক সপ্তাহে দু থেকে তিনদিন ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের যাবতীয় অ্যালার্জি, র্যাশ দূর করবে এই ফেসপ্যাক। ব্রণের সমস্যাও কমাবে। ত্বক উজ্জ্বল রাখতেও সাহায্য করবে এই ফেসপ্যাক। গোসলের আগে মিনিট ১০-১৫ এই ফেসপ্যাক লাগিয়ে রাখুন ত্বকে। তারপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন মুখ। গলার অংশে, কাঁধেও এই ফেস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
গ্রিন টি, মধু, কাঁচা ডিম, অ্যালোভেরা জেল- এই চারটি উপকরণ আলাদা আলাদা করে কর্নফ্লাওয়ারের সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন ফেসপ্যাক। এই ফেসপ্যাক সপ্তাহ দু থেকে তিনবার ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের অনেক সমস্যাই দূর হবে। ঝকঝকে, মোলায়েম, উজ্জ্বল ত্বক পাবেন আপনি।
ছাদ বাগান সাজিয়ে তুলবেন যেসব গাছে
বাড়ির ছাদ সুন্দর করতে অনেকেই ছাদ বাগান করতে চান। কিন্তু কী গাছ লাগাবেন, তা বুঝতে না পাড়লেই হয় বিপত্তি। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের অধিকাংশ বাড়ির ছাদের দিকে তাকালেই বিভিন্ন ধরনের বাগান দেখা যায়। অবশ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের ছাদে যেসব বাগান দেখা যায় তার অধিকাংশই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে বাড়ির ছাদে যেকোনো গাছ, এমনকি শাকসবজিও ফলানো সম্ভব।
নান ধরনের মৌসুমি ফল ছাড়াও কলমি শাক, কলা, ডাঁটা, লাউ ইত্যাদি অনায়াসে উৎপাদন করা যায়। কোন গাছের জন্য কী ধরনের মাটি উপযোগী তা নিশ্চিত হয়ে ছাদে বাগান করলে ভালো হয়। এ ছাড়া বেশি রোদ বা গরম সহ্য করতে পারে এমন গাছই ছাদে রোপণ করা উত্তম। ছাদে বাগান করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে নিয়মিত পানি সেচ দেওয়া। কারণ, বাগানের গাছগুলো যেহেতু সাধারণ মাটির সংস্পর্শ হতে দূরে থাকে তাই নিয়মিত পানি সেচ না দিলে গাছগুলো যেকোন সময় মারা যেতে পারে। সাধারণত দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে গাছ ভালো জন্মে। ছাদে বাগান করতে হলে এ ধরনের মাটি ব্যবহার করলে ভালো হয়।
ছাদে যে ধরনের গাছ রোপণ করা যায়:
বাড়ির ছাদে খুব নরম প্রকৃতির গাছ লাগাবেন না। ছাদের প্রখর রোদ নরম প্রকৃতির গাছ সহ্য করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে বড় গাছের বনসাই লাগানো ভালো।
যেকোনো রকম ফুল যেমন গোলাপ, বেলী, টগর, জুঁই, গন্ধরাজ, জবা, জারবেরা গাছ লাগাতে পারেন। এছাড়াও লাগাতে পারেন ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, কারিপাতার গাছ।
পেয়ারা, বারোমাসে লেবু (কাগজি, সিডলেস, এলাচি), মালটা, কমলা, বরই (টক ও মিষ্টি), ডালিম, ড্রাগন ফলের গাছ লাগাতে পারেন ছাদে।
ক্যাপসিকাম, শিম, শসা, উচ্ছে, পটল, লাউ, ব্রকলি গাছ ছাদে লাগানো যায়। পেঁয়াজ, রসুন, আদা, গোলমরিচ গাছও লাগাতে পারেন।
সব থেকে ভালো হলো ছাদে ঔষধিগুণ বিশিষ্টগাছ লাগানো। অ্যালোভেরা, তুলসি, থানকুনি, চিরতার মত গাছ ছাদে ভালো হয়।
ঘরজুড়ে বাজে গন্ধ দূর করুন ৭টি সহজ উপায়ে
বাহিরের রোদ-বৃষ্টির খেলায় ঘরের অবস্থা নাজেহাল, ঘরের ভিতর সব সময়ই একটা স্যাঁতসেঁতে গন্ধ! বুঝতেই পারছেন না কীভাবে দূর হবে? চটজলদি এই গন্ধ দূর করতে রুম স্প্রে ব্যবহার করছেন। কিন্তু সমস্যা দূর হচ্ছে না, চিন্তা নেই। খুব সহজেই ঘরোয়া কয়েকটি উপায়ে দূর করতে পারেন বর্ষার গন্ধ, জেনে নিন কীভাবে।
চলুন জেনে নিই—
১) ঘরের এককোণায় এক বাটি পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে রেখে দিন। এতে ঘরের মধ্যে ফ্রেশভাব বজায় থাকবে।
২) দিনের বেলা কমলালেবু, পুদিনা বা ফুলের যেকোনো সুগন্ধি আপনাকে তরতাজা করে রাখবে। ল্যাভেন্ডার, ক্যামোমাইল, ইউক্যালিপটাস, দারুচিনি ও চন্দন রাতের সুগন্ধি হিসেবে মানানসই।
৩) বাজারে সুগন্ধি মোমবাতি কিনতে পাওয়া যায়। সেই মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখুন। দেখবেন ঘর থেকে গন্ধ দূর হবে।
৪) জানলা-দরজার পর্দা থেকেও গন্ধ ছড়াতে পারে। বর্ষায় সপ্তাহে একবার করে পর্দা ধুয়ে নিন, অথবা ধোঁয়া পর্দা টানিয়ে নিন। প্রয়োজনে পর্দায় রুম স্প্রে ব্যবহার করুন। দেখবেন ঘরে সুন্দর গন্ধ খেলা করবে।
৫) স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ দূর করতে ঘরের একটি উঁচু জায়গায় বাটিতে কিছুটা ভিনিগার ঢেলে রেখে দিন। দেখবেন ভিনিগার ঘরের গন্ধ শুষে নেবে। ঘরে একটা ফ্রেশভাব আসবে।
৬) ঘর মোছার পানিতে কর্পুর ফেলে দিন। সেই পানি দিয়ে ঘর মুছলে ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর হবে।
৭) বৃষ্টির সময়ে জানলা বন্ধ রাখলেও থেমে গেলে জানলা খুলে দিন। ঘরে মুক্ত হাওয়া আসতে দিন। এতে বাইরের ঠান্ডা হাওয়া এসে ভ্যাপসা ভাবটা অনেকটা কেটে যাবে।
ঐতিহ্যবাহী পদ ইলিশ ভাতুরির রেসিপি
প্রতিদিন একই ধরনের খাবার খেতে খেতে একঘেয়ে লাগলে স্বাদ বদলাতে ভিন্নভাবে রান্না করেন অনেকেই। স্বাদে বদল আনতে মাঝে মাঝে চেনা মাছ দিয়ে ভিন্ন স্বাদের খাবার রান্না করে দেখতে পারেন। এ মৌসুমে ইলিশ দিয়েও রান্না করতে পারেন নতুন এক রেসিপি। আমাদের দেশের একেক অঞ্চলেতো ইলিশ একেকভাবে খাওয়া হয়। ইলিশের পাতুরি তো সবাই চেনেন, কিন্তু ঐতিহ্যবাহী পদ ইলিশ ভাতুরি আরও এক চমৎকার পদ। জেনে নিতে পারেন রেসিপিটি।
রইল রেসিপি—
উপকরণ:
বড় ইলিশ মাছ ৬-৮ টুকরা
কাঁচা মরিচকুচি ৫-৬টি
শর্ষের তেল ৩ টেবিল চামচ
লবণ পরিমাণমতো
হলুদগুঁড়া সামান্য
মিহি করে কাটা পেঁয়াজকুচি আধা কাপ
লেবুর রস ১ টেবিল চামচ
লাউপাতা ৬টি
চাল আধা কেজি
প্রণালি:
প্রথমেই ভাতের চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। ইলিশ মাছসহ বাকি উপকরণ (পাতা ছাড়া) একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। লাউপাতায় মাখানো মাছের একটি টুকরা রেখে পাতাটি ভাঁজ করে উল্টিয়ে দিন, যাতে খুলে না যায়। এভাবে সব কটি পাতায় মোড়ানো মাছ প্রস্তুত করে নিন।
এবার দেড় গুণ ফুটন্ত পানি দিয়ে ভাত বসিয়ে দিন। নিয়মমাফিক ভাত রান্না করে প্রায় হয়ে এলে হাঁড়ির মাঝখান থেকে কিছু ভাত সরিয়ে লাউপাতায় মোড়ানো মাছের টুকরাগুলো রেখে দিন। ওপরে সরিয়ে রাখা ভাত দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মৃদু আঁচে রাখুন। ১০ মিনিট এভাবে রেখে দিন।
ভাত সরিয়ে মাছগুলো সাবধানে তুলে পাতাসহ পরিবেশন করুন গরম ধোঁয়া ওঠা ঐতিহ্যবাহী পদ ইলিশ ভাতুরি।