আলুর খোসার এত গুণ!
আমাদের প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই কম বেশি আলু খাওয়া হয়। আর আলু কাটার সময় খোসাগুলো ফেলে দেয়া হয়।
তবে জানেন কী আলুর খোসার গুণ সম্পর্কে? আলুর খোসার গুণ সম্পর্কে জানলে আপনি আর কখনও আলুর খোসা ফেলে দেবেন না।
দেখে নেয়া যাক আলুর খোসার কী কী গুণ রয়েছে-
- আলুর খোসায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং মিনারেল রয়েছে। যা শরীরের রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। পটাশিয়াম আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে সচল রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী। এক একটি আলুর খোসা থেকে আমরা ৬০০ গ্রাম পটাশিয়াম পেতে পারি। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- আমরা অনেকেই জানি না আমাদের প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১৬ মিলিগ্রাম করে নিয়াসিন শরীরের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু এই নিয়াসিন আমাদের শরীর পাবে কোথা থেকে। তার সমাধানও আলুর খোসায়। আলুর খোসা থেকে প্রয়োজনীয় নিয়াসিন আপনি পেতে পারেন। যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- আলু থেকে আমরা প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং কার্বোহাইড্রেট পাই। আলুর খোসা থেকেও আমরা একই উপাদান পাই। তাই যদি আমরা আলুর খোসা না ছাড়িয়ে খাই তাই এই প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং কার্বোহাইড্রেট আমরা বেশি করে পাব। যা শরীরকে আরো শক্তিশালী ও রোগ প্রতিরোধক করবে।
- আয়রন হলো শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আয়রন রক্তের কণিকার স্বাভাবিক কার্যপ্রণালীকে সক্রিয় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রত্যেক দিন ৩-৫টি খোসা আমাদের শরীরকে ৪ মিলিগ্রাম লোহা বা আয়রনের যোগান দেয়।
- যাদের হজমশক্তি দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে আলুর খোসা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। কারণ, আলুর খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। ফাইবার আমাদের শরীরের হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। আলুর খোসা গুরুপাক খাবারও সহজে হজম করতে সাহায্য করে।
- আলুর খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার ফলে হজমশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি আরো একটি উপকার হয়। আর তা হলো শরীরের অতিরিক্ত গ্লুকোজ শুষে নেয়। আলুর খোসার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যদিও ডায়াবেটিস রোগীদের আলু খেতে মানা করে। তবে আলু যদি খোসা সমেত সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিয়ে রান্না করা হয় বা খাওয়া হয় তাতে খুব একটা ক্ষতি হয় না।
সূত্র : লুক@মি
আরকে/জেবি
মন্তব্য করুন
হিট স্ট্রোক কেন হয়, প্রতিরোধে যা করবেন
দেশের সবচেয়ে তাপপ্রবাহের মাস এপ্রিল শুরু হয়েছে। প্রতিদিন পারদ স্তম্ভ বেড়েই চলছে। অধিক তাপমাত্রা জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ওপর প্রভাব বেশি পড়ে। তীব্র গরমে জনদুর্ভোগের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
শনিবার (২০ এপ্রিল) প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।
এমন বৈরী পরিবেশে প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয় মানুষ। হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যান কেউ কেউ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ চুয়াডাঙ্গা ও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় মোট ২ জন হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।
হিটস্ট্রোকের প্রধান লক্ষণগুলো নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, প্রচণ্ড গরমে যখন শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, শরীর থেকে পানি, তরল পদার্থ ও লবণও বেরিয়ে যায়, তখন আমাদের শরীরের রক্তের চাপ কমে যায়। সেই সঙ্গে নাড়ির গতি বেড়ে যায়। শরীর অবসন্ন লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে। এ কারণে বমি-বমি ভাব লাগে ও বমিও হতে পারে। অনেকে চোখে আবছা দেখে। মাথা ঘুরতে থাকে। কেউ কেউ অসংলগ্ন কথা-বার্তাও বলে। এগুলো হচ্ছে হিট স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণ।
তিনি বলেন, হিট স্ট্রোক হলে কেউ কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারেন। জ্ঞান হারালে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, এই গরমের মধ্যে যারা বাইরে বের হবেন, তারা যদি সঙ্গে একটু খাবার পানি রাখেন এবং যাদের রোদের মধ্যে বেশিক্ষণ থাকার বাধ্যবাধকতা আছে, তারা যদি ওরস্যালাইন নিয়ে বের হন তাহলে ভালো হয়। এক্ষেত্রে একটু পর পর তারা পানি ও ওরস্যালাইন খাবেন এবং প্রস্রাবের রঙ ও পরিমাণের দিকে লক্ষ্য রাখবেন। প্রস্রাবের রঙ বদলের পাশাপাশি পরিমাণ কমে গেলে পানিসহ তরলজাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
ডা. লেনিন জানান, তাপপ্রবাহের সময়টাতে টাইট জামাকাপড় না পরে ঢিলেঢালা সুতি জামাকাপড় পরতে হবে। এ সময় ছাতা নিয়ে বের হলে ভালো হয়। আর যারা শ্রমজীবী, টানা রোদের মধ্যে কাজ করেন তাদের কিছুক্ষণ পর পর বিশ্রামের সঙ্গে পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। তবে রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় যে সরবত, পানি বিক্রি হয় তা খাওয়া যাবে না। কারণ এই সরবত যে পানি কিংবা বরফ দিয়ে বানানো হয় সেটা কোনোমতেই সুপেয় না।
তিনি বলেন, এর বাইরে বয়স্ক মানুষ, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশু ও দীর্ঘমেয়াদী রোগে ভুগতে থাকা সংবেদনশীল মানুষদের নিতান্তই প্রয়োজন না পড়লে বাইরে বের না হওয়া ভালো।
লেনিন চৌধুরী বলেন, গরমের ভেতর তৃষ্ণা নিবারণে ঠান্ডা পানি খাওয়া একেবারেই উচিত না। কারণ, আমাদের গলায় শ্বাসনালীর ওপরের অংশে কিছু সুবিধাবাদী জীবানু বাস করে। সুবিধাজনক অবস্থা পেলেই এরা আক্রমণ করে। যখন চারপাশে গরম তখন হঠাৎ করে ঠান্ডা পানি গলায় গেলে গলার তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। এই জীবাণুগুলো তখন সক্রিয় হয়ে ওঠে।
গরমে প্রশান্তি দেবে আম-পাবদার ঝোল
কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন নাজেহাল হয়ে পড়েছে। গরমের অস্বস্তিতে কোনকিছুই ভালো লাগে না। খাওয়া, ঘুম কোনকিছুতেই নেই শান্তি। এ দুর্বিসহ গরমে চুলার কাছেও বেশিক্ষণ থাকা যাচ্ছে না। তাই ঝটপট রান্না করা যায় এরকম রেসিপির খোঁজ করছেন। তাহলে তৈরি করতে পারেন আম পাবদা। এখন বাজারে গেলেই দেখা মিলবে কাঁচা আমের। পাবদা আর আমের মেলবন্ধনে জমে যাবে দুপুরের ভোজ। খুব সামান্য উপকরণ দিয়েই তৈরি করে নিন জিভে জল আনা এই পদ। রইল রেসিপি।
উপকরণ:
পাবদা মাছ ৫টি
পোস্ত বাটা ২ টেবিল চামচ
কাঁচা মরিচ বাটা ১ টেবিল চামচ
সরিষা বাটা ২ টেবিল চামচ
রসুন বাটা আধ চা চামচ
কাঁচা আম ১টি
সরিষার তেল ১ কাপ
লবণ স্বাদমতো
কালোজিরা ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ
প্রণালী:
লবণ, হলুদ মাখিয়ে সরিষার তেলে পাবদা মাছগুলো হালকা করে ভেজে নিন। সেই তেলেই কালো জিরা দিন। ফোড়নের মধ্যে রসুন বাটা দিয়ে ভেজে নিন। এ বার সরিষা বাটা, পোস্ত ও কাঁচা মরিচ বাটা আর সামন্য হলুদ দিয়ে কষিয়ে নিন। মশলা থেকে তেল বেরোতে শুরু করলে কাঁচা আম বাটা ও লবণ দিতে হবে। গ্রেভি ফুটে উঠলে মাছ দেওয়ার পালা। মিনিট পাঁচেক কম আঁচে ঢাকনা দিয়ে রান্না করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে আম পাবদা। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন ভিন্ন স্বাদের মাছের এই পদটি।
গরমে হিট অফিসারের পরামর্শ
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে জনজীবন হাঁসফাঁস। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রখর রোদে পথঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। কোথাও কোথাও সড়কের পিচ গলতে শুরু করেছে। গরমের কারণে বাড়ছে হিটস্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি। ডায়রিয়াতেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এরইমধ্যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পরিস্থিতি যখন এমন, তখন স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কী করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন?
তিনি জানিয়েছেন, দায়িত্ব পেয়ে বসে নেই তিনি। চেষ্টা করে যাচ্ছেন কেন ঢাকায় তাপমাত্রা বাড়ছে তা খুঁজে বের করার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেটার চেষ্টা করছেন।
তীব্র দাবদাহ মোকাবিলায় বুশরা জানান, এই অবস্থা থেকে সবাইকে বাঁচানোর জন্য তারা নিয়মিত ‘হিট অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন’ চালাচ্ছেন। তার মতে, ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা কমাতে আরও বেশি গাছ লাগানো জরুরি।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে রাস্তার ধারে ২ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়। শুধু গাছ লাগালেই হবে না, সেগুলোর উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণও করতে হবে। নগরে বনায়ন করা খুব জরুরি। এখানে যে ফাঁকা এবং পরিত্যক্ত জায়গাগুলো আছে সেখানে সবুজায়ন করার দিকেও আমরা নজর দিয়েছি। আমাদের এখানে আরও অনেক পার্ক এবং সবুজে ঘেরা জায়গা দরকার। তাতে তাপমাত্রা যেমন কমবে, তেমনই পাখিসহ নানা প্রাণীও ফিরে আসবে।
ব্যক্তি উদ্যোগেও নগরবাসীকে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন চিফ হিট অফিসার। বুশরা বলেন, তীব্র দাবদাহে আমরা নিজেরা যদি সচেতন থাকি। আমরা যদি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আমাদের ব্যাগে পানির বোতল, টুপি, ফ্যান, ছাতার মতো জিনিসপত্র সঙ্গে রাখি, তাহলে অনেকটাই নিরাপত্তা পেতে পারি।
গরমে মেঝেতে ঘুমালে স্বাস্থ্যের ওপর যে প্রভাব পড়ে
এই তীব্র গরমে অনেকেই মাটিতে শুয়ে পড়েন, এতে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু শরীরের জন্য এটি কেমন, এতে শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে, সেটি জেনে রাখা দরকার। একটা সময় ছিল যখন অনেকেই মাটিতে বা মেঝেতে ঘুমাতেন। তবে এখন খাট আর ম্যাট্রেসেই বেশির ভাগ মানুষ ঘুমান। কিন্তু মেঝেতে ঘুমালে শরীরে বেশ কিছু প্রভাব পড়ে।
জেনে নিন মেঝেতে ঘুমালে শরীরে যে প্রভাব পড়ে-
পিঠের ব্যথা কমতে পারে: অনেকেই বলেন, মাটিতে ঘুমালে মেরুদণ্ড ভালোভাবে সোজা হয়ে থাকে। এতে যাদের পিঠে ব্যথার সমস্যা আছে, তারা কিছুটা উপকার পেতে পারে। এমনকি কোমরের ব্যথাও এতে কমতে পারে। তাই এঠি মোটেই খারাপ অভ্যাস নয়।
ঘুমের সমস্যা কমতে পারে: গরমে অনেকেরই ভালো করে ঘুম হয় না। মাটিতে ঘুমালে ইনসোমনিয়া বা ঘুম না হওয়ার সমস্যা কিছুটা প্রতিরোধ করা যায়। তাই গরমকালে এটি মোটেই খারাপ অভ্যাস নয়।
ঘাড়ে ব্যথাও কমতে পারে: ঘাড় সোজা করে না ঘুমালে ঘাড় ও পিঠে ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে আকাবাঁকা হয়ে ঘুমালে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। তবে মেঝেতে ঘুমালে এই ব্যথা এড়ানো যায়। কারণ, এক্ষেত্রে ঘাড় সোজা থাকে।
রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়: মেঝেতে ঘুমালে রক্ত সঞ্চালন অনেক ভালো হয়। শরীর ভালো রাখতে ভালো রক্ত সঞ্চালন জরুরি। তাই মেঝেতে শুলে সেই হিসাবেও শরীর ভালো থাকে।
তবে এর পাশাপাশি শরীরে কিছু সমস্যাও হতে পারে। সেই বিষয়েও ভালো করে জেনে রাখা দরকার। বিশেষ করে যাদের কিছু শারীরিক সমস্যা আছে, তাদের মেঝেতে ঘুমানো উচিত নয়।
জেনে নিন কারণগুলো-
অ্যালার্জির সমস্যা বাড়তে পারে: মেঝেতে প্রায়শই বেশি ধুলোবালি ও ময়লা জমে। বিশেষ করে কার্পেটের ওপর ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে এর থেকে হাঁচি, সর্দি, চুলকানি, চোখ লাল হওয়া, শ্বাসকষ্ট ও কাশির মতো অ্যালার্জির সমস্যা বাড়তে পারে।
ঠান্ডা লেগে যেতে পারে: গরমে ঠান্ডা মেঝেতে ঘুমালে আরাম পেতে পারেন, তবে ঠান্ডায় ঘুমোনোর কারণে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে শরীরের তাপ দ্রুত কমাতে পারে ও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভূত হয়। ফলে জ্বর হতে পারে।
তাই মেঝেয় ঘুমানো আপনার জন্য ঠিক কি না, তা নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেবেন না। আর আরাম পেতে গিয়ে কোনো ভুল কাজ করবেন না। প্রয়োজনে অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তার থেকে ভালো করে জেনে নিয়ে তবেই মেঝেতে ঘুমাবেন।
এসি ছাড়াই যে কাজে ঘরের তাপমাত্রা কমবে ৫ ডিগ্রি
এই গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। সারারাত ঘুম হচ্ছে না। তার মধ্যে লোডশেডিংও বাড়ছে। এ অবস্থায় ঘরের মধ্যেও টেকা যাচ্ছে না। তার ওপর দিনের বেলায় ক্লান্তি মারাত্মক বাড়ছে। এ রকম অবস্থা সামাল দিতে অনেকেই সারাদিন এসি চালিয়ে রাখছেন। কিন্তু তাতে বিদ্যুতের খরচ অনেক বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু জানেন কি, কয়েকটি সহজ রাস্তা অবলম্বন করলে, ঘরের তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
মনে রাখবেন, কয়েকটি সাধারণ নিয়ম মেনে চললেই ঘরের তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কমানো যেতে পারে। জেনে নিন, এমনই সহজ কয়েকটি রাস্তা। এগুলো মেনে চললে হয়তো আপনার রাতের ঘুম আর একটু ভালো হতে পারে।
জেনে নিন ঘর ঠান্ডা রাখার কয়েকটি টিপস-
শোওয়ার ঘরে কেমন আলো: মনে রাখবেন, আলো ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা হলেও বাড়িয়ে দেয়। তা যদি এলইডি হয়, সেটিও তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই শোওয়ার ঘরে যতটা কম পাওয়ারের আলো লাগান। এতে ঘর ঠান্ডা থাকবে। সম্ভব হলে একদম কম পাওয়ারের আলো জ্বালান এই ঘরে।
ভারী পর্দা ব্যবহার করুন: শোওয়ার ঘরের দরজা এবং জানলায় ভারী পর্দা লাগান। দরজা-জানলা খোলা রাখা অবস্থায় এই পর্দা টেনে দিন। এতে বাতাস চলাচল করবে ঠিকই, কিন্তু তাপ কম আসবে। এতে ঘর কিছুটা হলেও ঠান্ডা থাকবে।
বরফের ব্যবহার: একটি পাত্রে কিছুটা বরফ নিন। সেটি ফ্যানের নিচে বা টেবিল ফ্যানের সামনে রেখে দিন। এতে গরমে ঘরের বাতাস কিছুটা ঠান্ডা হতে পারে। তবে এর সামনে বসবেন না। সেক্ষেত্রে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
সকালে দরজা খোলা, জানলা বন্ধ: দিনের বেলা ঘরের দরজা খুলে রাখুন। কারণ, দরজা বন্ধ রাখলে ঘর গুমোট হয়ে যাবে। আর জানলা রাখুন বন্ধ। রাতের বেলা জানলা খুলে দিন, এতে বাতাস আসবে। রাতে সম্ভব হলে দরজাও খুলে রাখুন। তাতে ঘর আরও কিছুটা ঠান্ডা থাকবে।
অ্যাডজাস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন: ছোট ফ্ল্যাট হলে বাথরুম আর রান্নাঘরে দরকার মতো এগজস্ট পাখা চালিয়ে রাখুন। এতে বাড়ির ভিতরে হাওয়া চলাচল ভালো হবে। তাতে গরমের অনুভূতি কিছুটা কমবে।
সুতির চাদর: ঘরে সুতির চাদর ব্যবহার করুন। এই ধরনের চাদরই বিছানায় পাতুন বা সোফার কভার হিসাবে ব্যবহার করুন। এই নরম চাদর তাপ এখটু কমায়। এতে ঘর ঠান্ডা থাকতে পারে সামান্য হলেও।
লাউয়ের খোসায় ত্বকের উজ্জ্বলতা ফেরানোর টিপস
বৈশাখের এই গরমে বেশিরভাগ বাড়িতেই অল্প তেল, মসলা যুক্ত খাবার রান্না করা হয়। আর এ তালিকায় লাউ অথবা লাউয়ের খোসা বাটাও রান্না হয়। গরমের দিনে দুপুরের ভাতপাতে সেই লাউ রান্না হাপুশ-হুপুশ করে খেয়ে ফেলেন অনেকেই। তবে, জানেন কি এই লাউয়ের খোসা দিয়ে ত্বকেও উজ্জ্বলতা আনা যায়। গরমের দিনে রোদে পুড়ে ত্বকে খুব সহজেই ট্যান পড়ে যায়। আবার গরমের মধ্যে খুব সহজেই আসে ক্লান্তি। এই পরিস্থিতিতে ত্বকে ক্লান্তির ছাপ কাটিয়ে উজ্জ্বলতা আনতে আর ট্যানের সমস্যা কাটাতে লাউয়ের খোসা কীভাবে ব্যবহার করবেন জেনে নিন।
দেখে নিন লাউয়ের খোসা দিয়ে রূপ চর্চার কিছু টিপস-
উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে- গরমের দিনে মুখে চোখে সহজেই ক্লান্তির ছাপ পড়ে। সেক্ষেত্রে ত্বককে সজীব রাখতে সাহায্য করে লাউয়ের খোসা। এছাড়াও উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে লাউয়ের খোসা দিয়ে বানাতে পারেন একটি মিক্স। যা আপনাকে সহায়তা করবে। লাল চন্দনের সঙ্গে লাউয়ের খোসা বেটে নিয়ে তার মিশ্রণ বানান। মুখে লাগিয়ে তা ১০ মিনিট পর ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার এইটি করলে মিলবে সুফল।
ট্যানিং থেকে বাঁচতে- গরমের রোদে ট্যানিং থেকে বাঁচতে লাউয়ের খোসা দিতে পারে অনেক উপকার। লাউয়ের খোসা শুধু মুখে ঘষে নিতে পারেন। এছাড়াও তা ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে পারেন। তা মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। তারপর তা ধুয়ে ফেলুন।
দাগ ছোপ দূর করতে- ত্বকের দাগ ছোপ দূর করতে লাউয়ের খোসা দারুন উপকারী। খোসা বেটে নিয়ে তার সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে নিন। সেই পেস্ট গোসলের আগে মেখে নিন। তবে মুখ এক্ষেত্রে ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এতেই মুখ থেকে সরে যাবে দাগ ছোপ।
ওজন কমাবে ফাইবার সমৃদ্ধ এই ৫ খাবার
ওজন কমানোর জন্য যারা নিয়ম করে খাওয়াদাওয়ার দিকে নজর দিয়েছেন, তারা অবশ্যই মেনুতে যুক্ত করুন ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। কারণ এ জাতীয় খাবার অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে; যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
জেনে নিন ফাইবার সমৃদ্ধ ৫ খাবারের নাম-
আমন্ড: আমন্ড খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে সবসময়েই ভালো। এটি একটি হেলদি স্ন্যাকস। অনেকেই সকালবেলা খালি পেটে ভেজানো আমন্ড খান। আগের দিন রাতে আমন্ড পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে খোসা ছাড়িয়ে সেই আমন্ড খেয়ে নিন। দিনে দুই থেকে চারটি আমন্ড খেতে পারেন আপনি। আমন্ডের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে হেলদি ফ্যাট। ওজন কমানোর পাশাপাশি আমন্ড আমাদের শরীরে এনার্জির জোগান দেয় এবং মস্তিষ্ক প্রখর ও সক্রিয় করে।
ব্রকলি: সবুজ রঙের ফুলকপির মতো দেখতে এই সবজির রয়েছে অনেক গুণ। ভেজিটেবল স্যালাড হোক বা অন্যান্য অনেক সুস্বাদু পদ তৈরি করা যায় ব্রকলি দিয়ে। কাঁচা খেতে যাবেন না এই সবজি। অন্তত হাল্কা সেদ্ধ করে নেওয়া প্রয়োজন। কম ক্যালোরি যুক্ত ব্রকলির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এই সবজি খেলে অনেকক্ষণ আপনার পেট ভর্তি থাকবে। এর পাশাপাশি ওজন কমাতেও সাহায্য করে এই সবজি।
আপেল: আপেল একটি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস রয়েছে এই ফলের মধ্যে। মিষ্টি স্বাদের এই ফল খেলে অনেকক্ষণ আপনার পেট ভর্তি থাকবে। সহজে খিদে পাবে না। আপেল খেলে অনেক উপকার পাবেন আপনি। ডায়েট করার সময় যদি সুইট ক্রেভিংস হয় তাহলে খেতে পারেন মিষ্টি স্বাদের এই ফল। এছাড়াও একাধিক পুষ্টি উপকরণ রয়েছে আপেলের মধ্যে। তার ফলে আপনার শরীরে সঠিক মাত্রায় পুষ্টির জোগান দেবে এই ফল।
কাবলি ছোলা: কাবলি ছোলা দিয়ে অনেক ধরনের সুস্বাদু পদ তৈরি করা যায়। এটি একটি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। ওজন কমাতে তাই পাতে রাখুন কাবলি ছোলা দিয়ে তৈরি রকমারি পদ। কাবলি ছোলা সেদ্ধ করে খেতে পারেন। কিংবা তৈরি করে নিতে পারেন কাবলি ছোলার ঘুগনি। এগুলি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। শুধুমাত্র ফাইবার নয়, কাবলি ছোলার মধ্যে রয়েছে ভরপুর প্রোটিন। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের নিউট্রিয়েন্টস বা পুষ্টি উপকরণ। তাই কাবলি ছোলা দিয়ে তৈরি খাবার খেলে যেমন আপনার পেট ভরবে, ওজন কমবে, তেমনই আপনি ভরপুর পুষ্টিও পাবেন।
ওটস: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো ওটস। আজকাল অনেকেই সকালের খাবারে ওটস খেয়ে থাকেন। এর সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ফল কিংবা ড্রাই ফ্রুটস। ওটস দিয়ে তৈরি স্মুদিও একটি পুষ্টিকর খাবার যা দীর্ঘক্ষণ আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে। অনেকে টকদই কিংবা ইয়োগার্ট মিশিয়েও ওটস খেয়ে থাকেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে তৈরি করে নেওয়া যায় মশলা ওটস। ফাইবার সমৃদ্ধ ওটসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। ওটস খেলে আপনার ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সঠিক মাত্রায় বজায় থাকবে কোলেস্টেরল। ফলে ভালো থাকবে আপনার হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য।