ট্যুরিস্ট ভিসা চালুর ঘোষণা ভারতের
ভারতে করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ট্যুরিস্ট ভিসা আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে চালু হতে যাচ্ছে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, দেড় বছর পর বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভারতীয় সীমান্ত খুলে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটন খাতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভিসা পুনরায় চালুর ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে বিদেশিদের নতুন করে পর্যটন ভিসা দেওয়া শুরু করবে ভারত।
দেড় বছর পর ট্যুরিস্ট ভিসা চালুর বিষয়ে দেশটির কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়, পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং রাজ্য সরকারের মতো অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি
এফএ/টিআই
মন্তব্য করুন
বড় পরিবর্তনের হাওয়া, সড়কে টোল কাটবে স্যাটেলাইট
বিভিন্ন সড়ক ও সেতু নির্মাণের পর টোল প্লাজাও স্থাপন করা হয় সেগুলোতে। ওইসব সড়ক ও সেতুতে যানবাহন থেকে টোল আদায় হয় এইসব টোল প্লাজার মাধ্যমেই। উন্নয়নশীল থেকে উন্নত বিশ্বের প্রায় সবখানেই এমন পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত মোটামুটি সবাই। কিন্তু এবার বড় ধরনের পরিবর্তনের হাওয়া লাগছে দীর্ঘদিনের প্রচলিত এ পদ্ধতিতে।
সড়কে টোল আদায় পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে চলেছে ভারত সরকার। স্যাটেলাইট ভিত্তিক টোল কালেকশন সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ, এবার টোল আদায়ের জন্য সড়ক-মহাসড়কে টোল বুথের সামনে লম্বা লাইনের ঝামেলা পোহাতে হবে না যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্যাটেলাইটই কেটে রাখবে নির্ধারিত টোল।
পরিকল্পনাটিকে বাস্তব রূপ দিতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ভারতের সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়। কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে টোল সংগ্রহ করা হবে দেশটিতে। কীভাবে কাজ করবে এই সিস্টেম সেই তথ্যও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকরি।
তিনি জানিয়েছেন, নতুন টোল সিস্টেমে জিপিএস এবং ক্যামেরার ব্যবহার করা হবে। এর ফলে টোল বুথ ও ব্যারিয়ারগুলোর প্রয়োজন পড়বে না। জিপিএস ও ক্যামেরার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে গাড়ি। সরাসরি গাড়ি চালকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে যাবে টোল ট্যাক্স। কত কিলোমিটার ভ্রমণ করেছে সেই গাড়ি, তার উপর নির্ভর করবে টোল ট্যাক্সের পরিমাণ।
টোল আদায়ে বর্তমানে সর্বাধুনিক যে ব্যবস্থা দেখতে পাওয়া যায় তা কাজ করে আরএফআইডি (RFID) প্রযুক্তির ভিত্তিতে। এটি হল রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন ট্যাগ। যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে গাড়িগুলো শনাক্ত করতে এবং ট্র্যাক করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশেও এই সিস্টেম চালু আছে।
এ পদ্ধতিতে একটি ক্যামেরা বসানো থাকে টোল প্লাজায়। যা গাড়ির ফাস্ট্যাগ আইডি ট্র্যাক করে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা কেটে নেয়। তবে নতুন জিপিএস ভিত্তিক সিস্টেম বসলে এই আইডির প্রয়োজন কমে যাবে। ভারত সরকারের মতে, নতুন টোল সিস্টেম টোল সংগ্রহ প্রক্রিয়া দ্রুত এবং স্বচ্ছ করে তুলবে।
এই মুহূর্তে প্রত্যেক টোল প্লাজাতে ট্যাক্সের পরিমাণ নির্ধারিত রয়েছে। যত কিলোমিটারই ভ্রমণ করেন না কেন যে টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে সেটাই জমা দিতে হয়। তবে নতুন ব্যবস্থা যোগ হলে এই টাকার অঙ্কে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে।
ভারতে মিলল অদ্ভুত গাছ!
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের আলুরি সীতারামা রাজু জেলার পাপিকোন্ডা ন্যাশনাল পার্কে বন কর্মকর্তারা ইন্ডিয়ান লরেন্স নামের একটি গাছের ছাল কেটে ফেলেন, তখন সেখান থেকে ফিনকি দিয়ে পানি বের হতে থাকে। এই গাছটিকে ইন্ডিয়ান লরেল ট্রি বলা হয়, যেটি গ্রীষ্মকালে নিজের ভিতরে পানি জমা করে রাখে। বৌদ্ধ ধর্মের লোকেরা গাছটিকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। বিশেষ করে গোদাবরী অঞ্চলের পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী উপজাতি গোষ্ঠী কোন্ডা রেড্ডি সম্প্রদায় এই গাছ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিল। তারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এর বাকল কেটে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে।
শনিবার (৩০ মার্চ) একটি ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ছাল কাটার সঙ্গে সঙ্গে তা থেকে পানি বেরোতে শুরু করেছে। ওই সময় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি জি নরেন্দ্রন বন বিভাগের দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নরেন্দ্রন বলেন, ‘যখন আমরা জাতীয় উদ্যানে ভারতীয় লরেল গাছের ছাল কেটে ফেলি, তখন সেখান থেকে পানি বেরিয়ে আসে। কোন্ডা রেড্ডি উপজাতি গাছটি সম্পর্কে তাদের আদিবাসী জ্ঞান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শেয়ার করেছিল। গ্রীষ্মকালে, ভারতীয় লরেল গাছে পানি জমে যা তীব্র গন্ধযুক্ত এবং টক স্বাদযুক্ত। ভারতীয় বনের গাছগুলোতে একটি আশ্চর্যজনক অভিযোজন দেখা গেছে।’
উল্লেখ্য, ভারতীয় লরেলের কাঠ সিলভার ওক নামেও পরিচিত। এর উচ্চ বাণিজ্যিক মূল্য রয়েছে। যে কারণে বন কর্মকর্তারা এসব গাছের প্রজাতি সংরক্ষণের ব্যবস্থা হিসেবে গাছগুলোর সঠিক অবস্থান প্রকাশ করেননি। সহজ ভাষায় একে কুমিরের ছাল গাছও বলা হয়। এই গাছের উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট লম্বা হতে পারে এবং এটি বেশির ভাগ শুষ্ক ও আর্দ্র বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। এই গাছের সবচেয়ে বিশেষ বিষয় হলো এর কাণ্ড পানিতে ভরা, যেখানে অন্যান্য গাছের তুলনায় এর কাণ্ড ফায়ার প্রুফ। এই গাছের অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা একে বোধিবৃক্ষ নামেও ডাকে। তারা বিশ্বাস করে যে, এই গাছের নিচে তপস্যা করার সময় বোধিসত্ত্ব জ্ঞান লাভ করেছিলেন।
যোগগুরু রামদেবকে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের কড়া হুঁশিয়ারি
নিজের প্রতিষ্ঠিত আয়ুর্বেদিক পণ্যের সংস্থা পতঞ্জলির বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি শুনেছেন ভারতীয় যোগগুরু বাবা রামদেব। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সেলিব্রিটি এ যোগগুরুকে কঠিন পদক্ষেপের জন্য তৈরি থাকতে বলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন রামদেবের সঙ্গে আদালতে হাজিরা দেন তার সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণও। এর আগে ভুল বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত মামলায় আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল রামদেব এবং আচার্য বালকৃষ্ণকে। কিন্তু কোনও জবাব না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ২ এপ্রিল তাদের দুজনকে হাজিরা দিতেই হবে জানিয়ে কড়া নির্দেশ দেন আদালত। সেই নির্দেশ মেনেই আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দেন তারা।
প্রসঙ্গত, ভুল বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত উক্ত মামলায় পতঞ্জলির বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ ছিল, অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এবং চিকিৎসকদের অপমান করেছে রামদেবের সংস্থা। এছাড়া কোভিড ১৯-এর ভ্যাকসিন নিয়েও এই সংস্থা ভুল প্রচার করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, পতঞ্জলির করা দাবিগুলো আদৌ সত্য বলে প্রমাণিত নয় এবং তা ১৯৫৪ সালের ড্রাগস অ্যান্ড আদার ম্যাজিক রেমেডি আইন এবং ২০১৯ সালের উপভোক্তা সুরক্ষা আইনের মতো আইনগুলোকে সরাসরি লঙ্ঘন করে।
সঠিক সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পুরো বিষয়টি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারেরও সমালোচনা করেন সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতে পুলিশের অভিযানে ১৩ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত
লোকসভা নির্বাচন শুরু হতে বাকি মাত্র কয়েক সপ্তাহ৷ এমন সময়ে ছত্তিশগঢ়ে পুলিশের এক অভিযানে মারা গেছে ১৩জন মাওবাদী বিদ্রোহী৷
ভারতে নির্বাচনের প্রচার এখন তুঙ্গে৷ তার মধ্যেই ছত্তিশগঢ়ে মাওবাদী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ৷ ১৪ ঘণ্টা ধরে চলে অভিযান৷ এই অভিযানে ১৩ জন নিহত হওয়ায় চলতি বছর পুলিশের অভিযানে মোট ৫০জন মাওবাদী নিহত হলো৷
পুলিশের দাবি, ছত্তিশগঢ়ের বিজাপুর জেলায় মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়৷
বার্তা সংস্থা এএফপিকে স্থানীয় পুলিশ প্রধান পি সুন্দারা বলেন, নিহত মাওবাদীদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি৷ নিহতদের মধ্যে তিনজন নারীও ছিলেন৷ এই অভিযানের পর পুলিশ বেশ কিছু রাইফেল, মেশিন গান, গ্রেনেড লঞ্চার ও গোলাগুলি বাজেয়াপ্ত করে৷
মাওবাদী বিদ্রোহী বা নকশালপন্থিরা দাবি করেন যে, তারা ভারতের প্রান্তিক গরিব মানুষের অধিকারের জন্য লড়েন৷ এই গোষ্ঠীর উত্থান পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ি গ্রাম থেকে৷ ১৯৬৭ সালে সেখানেই শুরু হয়েছিল মাওবাদীদের সরকারবিরোধী আন্দোলন৷ সেই থেকে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী নানা ধরনের গেরিলা হামলা চালিয়ে আসছে বলেই ভারত সরকার তাদের নিরাপত্তার ঝুঁকি হিসাবে চিহ্নিত করে৷
ভারত সরকারের মতে, এমন বিদ্রোহীরা ২০২৩ সালে দেশের ৪৫টি জেলায় সক্রিয় ছিল৷ ২০১০ সালে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সক্রিয়তা লক্ষণীয় ছিল ৯৬টি জেলায়৷ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য অঞ্চলের মাওবাদী-অধ্যুষিত রেড করিডোর-এ হাজার হাজার সামরিক বাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে৷ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন অংশে সব মিলিয়ে সাতটি দফায় ভোট গ্রহণ চলবে ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত৷
বাংলাদেশে পণ্য বর্জনের ডাক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত
‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক’ দিয়ে দেশে গত প্রায় তিন মাস ধরে যে প্রচারণা চলছে, তা নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত সরকার।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
তিনি জানান, বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা নষ্ট করতে পারবে না। দুই দেশের সম্পর্কের ব্যাপ্তি সর্বগামী, এই সম্পর্ক এমনই থাকবে।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘বাংলাদেশে গত বেশ কিছুদিন ধরে তথাকথিত ‘ইন্ডিয়া আউট’ নামে একটি ক্যাম্পেইন চলছে, যাতে মূলত ভারতের পণ্য বয়কট করার ডাক দেওয়া হচ্ছে। সে দেশের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন বিরোধীদলীয় নেতাও সেটাতে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। এই আন্দোলন নিয়ে কি আপনি কোনো মন্তব্য করতে চাইবেন? আর দ্বিতীয়ত, এর ফলে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানির পরিমাণে কি কোনো প্রভাব পড়ছে?’
জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘দেখুন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আসলে খুব শক্তিশালী ও গভীর। আমাদের দুই দেশের মধ্যে আসলে একটি কম্প্রিহেনসিভ পার্টনারশিপ আছে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত। অর্থনীতি থেকে শুরু করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ থেকে শুরু করে উন্নয়ন সহযোগিতা, কানেক্টিভিটি থেকে শুরু করে পিপল-টু-পিপল কনট্যাক্ট–মানবজীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো একটা বিষয়ের নাম নিন, দেখবেন সেটা কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের সামগ্রিক সম্পর্কের অংশ। আমাদের দুই দেশের অংশীদারিত্ব ঠিক এতটাই প্রাণবন্ত। আর এই ধারা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।’
ভারতের ৩ অঞ্চলে দেখা গেছে চাঁদ
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ এবং কেরালায় পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে সেসব অঞ্চলে আগামীকাল বুধবার ঈদুল ফিতর পালিত হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ ও কেরালায় শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেছে। তবে দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ বেশিরভাগ অঞ্চলে চাঁদ দেখা যায়নি। যেসব অঞ্চলে চাঁদ দেখা গেছে সেসব অঞ্চলে আগামীকাল বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় চাঁদ দেখা যায়নি সেখানে ঈদ পালিত হবে বৃহস্পতিবার।
ভারতের রাজধানী দিল্লির জামে মসজিদের ইমামরা এবং ফতেহপুর মসজিদ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়, যেহেতু চাঁদ দেখা যায়নি ফলে বৃহস্পতিবার ঈদ পালিত হবে।
এদিকে পাকিস্তানেও দেখা গেছে শাওয়ালের চাঁদ। ফলে আগামীকাল বুধবার দেশটিতে ঈদ উদযাপন করা হবে। পাকিস্তানে এবং ভারতের কিছু অঞ্চলে চাঁদ দেখা গেলেও বাংলাদেশে দেখা যায়নি। তাই বাংলাদেশের মুসলিমরা এবার ৩০টি রোজা পালন করবেন। আর ঈদ পালন করবেন আগামী বৃহস্পতিবার।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
বাংলাদেশ ও আমিরাতে ভারতের পেঁয়াজ কূটনীতি
ভারতে বেশ কিছুদিন ধরেই পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটানের মতো কয়েকটি দেশে এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পেঁয়াজ পাঠানো হচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পেঁয়াজের দাম বাড়লেও ভারত থেকে ওই দেশগুলোতে কম দামে পেঁয়াজ রপ্তানিকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ ভারতের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, ভারতীয় কৃষকদের এক কেজি পেঁয়াজের জন্য ১২ থেকে ১৫ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই একই পেঁয়াজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছালে তার দাম কেজি প্রতি ১২০ টাকা হয়।
এখন প্রশ্ন হলো- রপ্তানি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কেন ভারত সরকার নির্বাচিত দেশগুলোর কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করছে? পেঁয়াজ রপ্তানি কি তাহলে ভারতের কাছে কূটনীতির একটা অংশ হয়ে উঠেছে?
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রীতি একেবারে নতুন নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ভারত তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রে খাদ্যপণ্য, প্রয়োজনীয় সামগ্রী রপ্তানি করেছে এবং পরিষেবা দিয়েছে। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পেঁয়াজ এবং তার দাম ভারতে বেশ সংবেদনশীল একটি বিষয়। বিভিন্ন সময়ে পেঁয়াজের দাম নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের নির্বাচনে পেঁয়াজের সবচেয়ে প্রত্যক্ষ প্রভাব সম্ভবত দেখা গিয়েছিল ১৯৯৮ সালে। মনে করা হয়, ওই বছর দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের জন্য দায়ী ছিল পেঁয়াজের চড়া দাম।
আবার প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ভালো থাকাটাও পাশের দেশের জন্য কল্যাণকর। সেই কারণেও বন্ধুত্বপূর্ণ আদানপ্রদান চলতে থাকে বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, পেঁয়াজের ঘাটতির আশঙ্কায় গত ডিসেম্বর মাস থেকে রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। গত মাসে সরকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে। তবে ভারত সরকার রাজনৈতিক চ্যানেল মারফত একথা একপ্রকার মেনে নিচ্ছে যে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে।
এদিকে, পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর থেকেই কৃষকরা এর বিরোধিতা করে আসছেন। সরকারের তরফে ঘোষণার পর মহারাষ্ট্রেও বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা। নাসিকের লাসলগাঁও, নন্দগাঁও, পিপলগাঁও এবং উমরানেতে বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেন। প্রসঙ্গত, এই অঞ্চলগুলো পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র।
নিষেধাজ্ঞার মাঝেই রপ্তানি
নিষেধাজ্ঞা চলার মধ্যেই ভারত থেকে একাধিক দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করা হয়েছে। সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত।
অন্যদিকে, পহেলা মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৪ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার এমনটাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। তবে পরিমাণের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হলেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, ত্রৈমাসিক ‘কোটা’ হিসাবে মাসে ৩ হাজার ৬০০ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে না।
গত মাসে ভারত থেকে তিন হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ত্রৈমাসিক বরাদ্দের চেয়ে অতিরিক্ত আরও ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
‘দ্য হিন্দু’তে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন বলছে, ভারতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন বাংলাদেশ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি ভুটানে ৫৫০ টন, বাহরাইনে ৩ হাজার টন এবং মরিশাসে ১২০০ টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববাজারে সাধারণত কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে থাকে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১৫০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ভারত, পাকিস্তান ও মিসর পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় এই দাম বেড়েছে।
দ্য হিন্দু পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি প্রতি টন ৫০০ থেকে ৫৫০ ডলার দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পেঁয়াজ পাঠানোর তথ্য পেয়েছেন রপ্তানিকারকরা। যদি আমরা ভারতীয় টাকার নিরিখে বলি তাহলে এই মূল্য কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমদানিকারকরা ভারত থেকে পেঁয়াজ কিনে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি মুনাফা করেছেন।
দশ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেলে আমদানিকারকরা প্রায় এক হাজার কোটি টাকা মুনাফা পাবেন। বিবিসি।