সারা ভারত কৃষক সভার বিক্ষোভ মিছিল
কৃষকের ১৫ দফা দাবিকে সামনে রেখে শুক্রবার (০৮ জানুয়ারি) আগরতলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বামফ্রন্ট সমর্থিত সারা ভারত কৃষক সভার পশ্চিম জেলা কমিটি।
শুক্রবার দুপুরে কমিটির সদস্যরা আগরতলার মেলারমাঠ এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শ্রম কমিশনার অফিসের সামনে এসে মিলিত হন। পরে একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে শ্রম কমিশনারের হাতে ১৫ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দেন।
এদিনের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম দলের পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর, সাবেক মন্ত্রী মানিক দে, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের স্ত্রী তথা বামফ্রন্টের নারীনেত্রী পাঞ্চালি ভট্টাচার্য প্রমুখ।
সারা ভারত কৃষক সভার পাশাপাশি এদিনের এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় সিআইটিইউর ত্রিপুরা রাজ্য কমিটিও।
এফএ
মন্তব্য করুন
ভারতের ৩ অঞ্চলে দেখা গেছে চাঁদ
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ এবং কেরালায় পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে সেসব অঞ্চলে আগামীকাল বুধবার ঈদুল ফিতর পালিত হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ ও কেরালায় শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেছে। তবে দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ বেশিরভাগ অঞ্চলে চাঁদ দেখা যায়নি। যেসব অঞ্চলে চাঁদ দেখা গেছে সেসব অঞ্চলে আগামীকাল বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় চাঁদ দেখা যায়নি সেখানে ঈদ পালিত হবে বৃহস্পতিবার।
ভারতের রাজধানী দিল্লির জামে মসজিদের ইমামরা এবং ফতেহপুর মসজিদ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়, যেহেতু চাঁদ দেখা যায়নি ফলে বৃহস্পতিবার ঈদ পালিত হবে।
এদিকে পাকিস্তানেও দেখা গেছে শাওয়ালের চাঁদ। ফলে আগামীকাল বুধবার দেশটিতে ঈদ উদযাপন করা হবে। পাকিস্তানে এবং ভারতের কিছু অঞ্চলে চাঁদ দেখা গেলেও বাংলাদেশে দেখা যায়নি। তাই বাংলাদেশের মুসলিমরা এবার ৩০টি রোজা পালন করবেন। আর ঈদ পালন করবেন আগামী বৃহস্পতিবার।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
বাংলাদেশ ও আমিরাতে ভারতের পেঁয়াজ কূটনীতি
ভারতে বেশ কিছুদিন ধরেই পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটানের মতো কয়েকটি দেশে এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পেঁয়াজ পাঠানো হচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পেঁয়াজের দাম বাড়লেও ভারত থেকে ওই দেশগুলোতে কম দামে পেঁয়াজ রপ্তানিকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ ভারতের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, ভারতীয় কৃষকদের এক কেজি পেঁয়াজের জন্য ১২ থেকে ১৫ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই একই পেঁয়াজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছালে তার দাম কেজি প্রতি ১২০ টাকা হয়।
এখন প্রশ্ন হলো- রপ্তানি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কেন ভারত সরকার নির্বাচিত দেশগুলোর কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করছে? পেঁয়াজ রপ্তানি কি তাহলে ভারতের কাছে কূটনীতির একটা অংশ হয়ে উঠেছে?
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রীতি একেবারে নতুন নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ভারত তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রে খাদ্যপণ্য, প্রয়োজনীয় সামগ্রী রপ্তানি করেছে এবং পরিষেবা দিয়েছে। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পেঁয়াজ এবং তার দাম ভারতে বেশ সংবেদনশীল একটি বিষয়। বিভিন্ন সময়ে পেঁয়াজের দাম নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের নির্বাচনে পেঁয়াজের সবচেয়ে প্রত্যক্ষ প্রভাব সম্ভবত দেখা গিয়েছিল ১৯৯৮ সালে। মনে করা হয়, ওই বছর দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের জন্য দায়ী ছিল পেঁয়াজের চড়া দাম।
আবার প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ভালো থাকাটাও পাশের দেশের জন্য কল্যাণকর। সেই কারণেও বন্ধুত্বপূর্ণ আদানপ্রদান চলতে থাকে বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, পেঁয়াজের ঘাটতির আশঙ্কায় গত ডিসেম্বর মাস থেকে রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। গত মাসে সরকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে। তবে ভারত সরকার রাজনৈতিক চ্যানেল মারফত একথা একপ্রকার মেনে নিচ্ছে যে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে।
এদিকে, পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর থেকেই কৃষকরা এর বিরোধিতা করে আসছেন। সরকারের তরফে ঘোষণার পর মহারাষ্ট্রেও বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা। নাসিকের লাসলগাঁও, নন্দগাঁও, পিপলগাঁও এবং উমরানেতে বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেন। প্রসঙ্গত, এই অঞ্চলগুলো পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র।
নিষেধাজ্ঞার মাঝেই রপ্তানি
নিষেধাজ্ঞা চলার মধ্যেই ভারত থেকে একাধিক দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করা হয়েছে। সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত।
অন্যদিকে, পহেলা মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৪ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার এমনটাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। তবে পরিমাণের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হলেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, ত্রৈমাসিক ‘কোটা’ হিসাবে মাসে ৩ হাজার ৬০০ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে না।
গত মাসে ভারত থেকে তিন হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ত্রৈমাসিক বরাদ্দের চেয়ে অতিরিক্ত আরও ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
‘দ্য হিন্দু’তে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন বলছে, ভারতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন বাংলাদেশ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি ভুটানে ৫৫০ টন, বাহরাইনে ৩ হাজার টন এবং মরিশাসে ১২০০ টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববাজারে সাধারণত কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে থাকে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১৫০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ভারত, পাকিস্তান ও মিসর পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় এই দাম বেড়েছে।
দ্য হিন্দু পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি প্রতি টন ৫০০ থেকে ৫৫০ ডলার দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পেঁয়াজ পাঠানোর তথ্য পেয়েছেন রপ্তানিকারকরা। যদি আমরা ভারতীয় টাকার নিরিখে বলি তাহলে এই মূল্য কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমদানিকারকরা ভারত থেকে পেঁয়াজ কিনে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি মুনাফা করেছেন।
দশ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেলে আমদানিকারকরা প্রায় এক হাজার কোটি টাকা মুনাফা পাবেন। বিবিসি।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মুখে সতর্ক ভারত
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধিতে সতর্ক পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত৷ ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের একটি কনস্যুলার ভবনে বিমান হামলায় দুই জেনারেলসহ রেভল্যুশনারি গার্ডের সাত সদস্য নিহত হয়েছেন৷ এই হামলার জন্য ইরান ইসরায়েলকে দায়ী করে প্রতিশোধ নেয়ার কথা জানিয়েছে৷ ইরান শিগগিরই ইসরায়েল আক্রমণ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷
এমন অবস্থায় ভারতের বিদেশ মন্ত্রক নাগরিকদেরকে ইরান ও ইসরায়েল সফর না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে৷ কেন্দ্র বলেছে, যারা বর্তমানে ইরান বা ইসরায়েলে রয়েছেন, তাদের সংশ্লিষ্ট দেশের ভারতীয় দূতাবাসগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে হবে৷ নিজেদের চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে হবে৷ একইসঙ্গে সীমিত করতে হবে গতিবিধি৷
ফ্রান্স এবং রাশিয়া তাদের নাগরিকদের উদ্দেশেও একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে৷ ইসরায়েলে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সেখানে প্রায় ৯০০ ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন৷ ইসরায়েলে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার৷ এপ্রিল, মে মাসে ভারতীয় আরো শ্রমিক, কর্মচারীদের যাওয়ার কথা ছিল৷
গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রেক্ষিতে শ্রমিকের অভাব দেখা দেয়ায় গত নভেম্বরে নেতানিয়াহু সরকার দিল্লির কাছে আবেদন জানায়৷ দুই দেশের সরকারি বোঝাপড়ায় ভারত থেকে এপ্রিল ও মে মাসে ছয় হাজার শ্রমিক পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় বলে জানায় বার্তা সংস্থা পিটিআই৷ এর অংশ হিসেবে গত ২ এপ্রিল হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ থেকে ৬৪ জন নির্মাণ শ্রমিক প্রথম দফায় ইসরায়েলে গিয়েছেন৷ চলতি মাসে মোট দেড় হাজার শ্রমিকের ইসরায়েল যাওয়ার কথা৷ তারা লোহার কাঠামো, ইমারত নির্মাণ, টাইলস বসানোর কাজ করবেন৷ তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই যাত্রা অনিশ্চয়তায় পড়েছে৷
সংখ্যায় কম হলেও ইরানেও ভারতীয় নাগরিকেরা রয়েছেন৷ বিশেষত, তেহরানে বহু দশক ধরে ভারতীয়রা বসবাস করছেন৷ ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যোগ রয়েছে সেখানকার ভারতীয় শিখ সম্প্রদায়ের৷
অসুরক্ষিত আকাশপথ সামরিক সংঘাতের আশঙ্কার প্রেক্ষিতে ইরান ও ইসরায়েলের আকাশপথ যাত্রীবাহী বিমানের জন্য নিরাপদ নয়৷ তাই এয়ার ইন্ডিয়া ইরানের একাংশের আকাশপথ ব্যবহার করছে না৷ শনিবার লন্ডনগামী একটি বিমানকে ইরানের আকাশপথ এড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়৷ এর ফলে ইউরোপগামী বিমানের গন্তব্যে পৌঁছতে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা বাড়তি সময় লাগবে৷ যদিও ইরানের দক্ষিণ অংশের আকাশপথ ব্যবহার এখনই বন্ধ করছে না এয়ার ইন্ডিয়া৷
একটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিমান পরিষেবা সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার মতোই ইরানের আকাশপথ এড়িয়ে যাচ্ছে৷ তাদের ঘোষণা অনুযায়ী, ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত এই সর্তকতা বজায় থাকবে৷ বিশ্ব মিত্র ভারত দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলের সাথে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে৷ অন্যদিকে ইরানের সাথেও রয়েছে সুসম্পর্ক৷ দুই বন্ধু দেশ সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে দিল্লির অবস্থান কী হবে?
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক অনিন্দ্য মিত্র বলেন, ইসরায়েল ও ইরান দুটিই ভারতের বন্ধু রাষ্ট্র৷ ফলে তাদের মধ্যে সংঘাত ভারতের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে৷ ভারতকে চেষ্টা করে যেতে হবে যাতে দুই পক্ষকে সংঘর্ষ থেকে বিরত রাখা যায় বা সীমিত থাকে৷
২০৪৭ সালে স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তিতে ভারতকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বিকশিত ২০৪৭-এর লক্ষ্য সামনে রেখেছে৷ তাতে ভারত বিশ্ব মিত্র হিসেবে নিজেকে স্থাপন করতে চায়৷
এশিয়ার চলতি উত্তেজনা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ইমনকল্যাণ লাহিড়ী বলেন, এটা সার্বিক যুদ্ধ হবে না৷ যদি হয়ও, তা হলে দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে হবে ভারতকে৷ যুদ্ধের আগে দেশগুলির পারস্পরিক আলোচনার সঙ্গে দিল্লির যুক্ত হওয়া প্রয়োজন৷
তার মতে, মিত্রতার মাধ্যমে যুদ্ধের বাতাবরণ সরিয়ে ফেলা উচিত৷ ভারত সেই চেষ্টায় করবে যেহেতু তারা নিজেদের বিশ্ব মিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালাচ্ছে৷
ইসরায়েলে ইরানের হামলা নিয়ে যা বলল ভারত
সিরিয়ায় নিজেদের দূতাবাসে হামলার জবাবে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। হামলার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান। এবার প্রতিক্রিয়া জানালো ভারত।
ভারত বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত বৃদ্ধির বিষয়ে তারা ‘খুবই উদ্বিগ্ন’। এই সংঘাত পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
রোববার (১৪ এপ্রিল) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
ইসরায়েলে ইরানের হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দেওয়া এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবিলম্বে (উভয় পক্ষকে) সংঘাত বন্ধ, সংযম অনুশীলন, সহিংসতা থেকে সরে আসা এবং কূটনীতির পথে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।
মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের দূতাবাসগুলো ভারতীয় কমিউনিটির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করছে। এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অত্যাবশ্যক বলেও মনে করে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি।
এর আগে, গাজায় আগ্রাসনের পাশাপাশি গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরাইল। এতে নিহত হন বিপ্লবী গার্ডের দুই কমান্ডারসহ ৭ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
ওই হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ নেওেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিলেন ইরানের কর্মকর্তারা।
গত বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদের খুতবায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেন, ইরানি দূতাবাসে হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
ইরানি হামলার আশঙ্কায় গত কয়েকদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এদিকে শনিবার (১৩ এপ্রিল) পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালি থেকে একটি ইসরাইলি পণ্যবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ আটক করে ইরান।
জাহাজটিতে ২৫ জন নাবিকের ১৭ জনই ভারতীয়। নাবিকদের নিরাপদে দেশে ফেরাতে এরই ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কয়েকশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর তথা আইআরজিসি। এছাড়া ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি এবং লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকেও রকেট হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েল বলছে, তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান।
ফ্লাইওভার থেকে ৫০ যাত্রী নিয়ে পড়ে গেল বাস, নিহত ৫
ভারতের উড়িষ্যায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফ্লাইওভার থেকে নিচে পড়ে গেছে একটি বাস। এতে এক নারীসহ পাঁচজন জন নিহত হয়েছেন। সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে উড়িষ্যার পুরী থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল বাসটি। পথিমধ্যে জাজপুর জেলার বারাবতীর কাছে জাতীয় সড়ক-১৬ ওপরে একটি ফ্লাইওভারে ওঠার সময় বাসটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাসটিতে ৫০ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে।
ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআই এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে জানা গেছে, ফ্লাইওভারে ওঠার সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ৫০ জন যাত্রীসহ ফ্লাইওভার থেকে সোজা নিচে পড়ে যায় বাসটি। সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের লোকজন জড়ো হন সেখানে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ ও দমকল বাহিনী। এরপর স্থানীয়দের সহযোগীতায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেন তারা। আহতদের ১০টি অ্যাম্বুলেন্সে স্থানীয় ধর্মশালা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, আহত অবস্থায় ৫০ জনকে উদ্ধার করে ধর্মশালা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ৫ জনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৪০ জন। তাদেরকে কটকের এসসিবি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গুরুতর আহত এই ৪০ জনের মধ্যে ৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে এসসিবি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র।
এদিকে এ দুর্ঘটনায় নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শোক প্রকাশ করেছেন উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। সেখানে তিনি লিখেছেন, জাজপুর জেলার বারবাটি এলাকার যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনার খবরে আমি ব্যথিত। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং তাদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
চালকবিহীন মেট্রোরেল চালু হলো কলকাতায়
উন্নয়নের নতুন এক অধ্যায়ে পা রাখল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা। শহরের মেট্রো পরিষেবায় এবার যুক্ত হলো চালকবিহীন ট্রেন।
সোমবার (১৬ এপ্রিল) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে এই চালকবিহীন মেট্রো। এদিন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ রুটে যাত্রার মধ্য দিয়ে এই পরিষেবার উদ্বোধন করা হয়।
পরিষেবাটি চালু হওয়ার ফলে অটোমেটিক ট্রেন অপারেশনে সময়ের ব্যবধান দুই থেকে তিন মিনিটের মতো কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভের মধ্যে মেট্রো পরিষেবার ব্যবধান ২০ মিনিটের বদলে ১৭ মিনিট হবে। অন্যদিকে সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পৌঁছাতে ২০ মিনিটের জায়গায় লাগবে ১৮ মিনিট। তবে দিনের প্রথম এবং শেষ মেট্রো পরিষেবার সময়সূচি একই থাকবে বলে জানা গেছে।
অবশ্য নতুন ব্যবস্থায় ট্রেনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে সক্ষম হলেও চালকের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে সেগুলোতে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কলকাতা শহরে মেট্রোরেলের এ পরিষেবাটি একেবারেই নতুন। তাই শুরুর দিকে মেট্রোতে চালকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হচ্ছে। তবে মেট্রোতে চালক থাকলেও এটি পরিচালনায় তাদের তেমন কোনো ভূমিকাই থাকছে না।
কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি বলেছেন, কলকাতার যাত্রীদের কাছে এটি একেবারেই নতুন বিষয়। তাই চালকবিহীন মেট্রো রেক নিয়ে যাত্রীদের মনে অনেকটা উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেট্রো রেক চালানো গেলেও শুরুর দিকে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কেবিনে চালক উপস্থিত থাকবেন।
কেবিনে চালকদের ভূমিকার বিষয়ে উদয় কুমার রেড্ডি জানান, বাস্তবিকভাবে সেখানে তাদের কোনও প্রকার ভূমিকাই থাকবে না। যাত্রীরা এই ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া শুরু করলেই পরবর্তীতে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
চালকবিহীনে এই মেট্রো পরিচালনার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো লাইনে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে করে কন্ট্রোল রুম থেকেই মেট্রোর যাবতীয় গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ফলে যাত্রীবোঝাই মেট্রোটি চালকবিহীনভাবেই যাতায়াত করতে পারবে।
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্কুল বন্ধ ঘোষণা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতে বৈশাখের শুরুতেই তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ঘরে। ফলে তীব্র দাবদাহে নাজেহাল মানুষ। দাবদাহের জেরে শিক্ষার্থীদের অবস্থা শোচনীয়। সাধারণত মে মাস থেকে গরমের ছুটি দেওয়া হয় স্কুলগুলোতে। তবে গরমের তীব্রতা বাড়তেই ২২ এপ্রিল থেকে ছুটি ঘোষণা করে রাজ্যটির শিক্ষা অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজ্যের শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, রাজ্যর কালিম্পং, কার্শিয়াং এবং দার্জিলিং ছাড়া অন্য সব জেলার সরকারি স্কুলগুলোতে ছুটি থাকবে। তীব্র দাবদাহের কারণে আগামী ২২ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বলবৎ থাকবে এই ছুটি।
সরকারি স্কুলগুলোর মতো বেসরকারি স্কুলগুলোকেও গরমের ছুটি এগিয়ে আনার কথা বিবেচনা করতে বলা হয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তরের বিবৃতিতে। অতিরিক্ত ছুটির জন্য শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার যে ক্ষতি হবে, তা অতিরিক্ত ক্লাস করানোর মাধ্যমে পুষিয়ে নিতে পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ছুটি শেষে স্কুল কবে খুলবে, সে বিষয়ে আবহাওয়ার পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মীরাও ছুটিতে থাকবেন। স্কুল না খোলা পর্যন্ত বিশেষ ছুটিতে থাকবেন তারা।
কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে অন্তত চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এদিন কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। কলকাতার তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে ৪১ ডিগ্রিতে। পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রিতে পৌঁছে যাবে।
আবহাওয়া দপ্তর আরও জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গজুড়ে জারি থাকবে গরম আবহাওয়ার সর্তকতা। কলকাতার পাশাপাশি হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, বাঁকুড়া ও নদীয়া জেলায়ও তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হবে। খুব শিগগিরই এই দহনজ্বালা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।