হাতির পিঠে চড়ে রাজকীয় বিয়ে ৫২ প্রেমিক জুটির
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে থাইল্যান্ডে একসঙ্গে ৫২ প্রেমিক জুটি হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করেছেন।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ব্যাংককের পূর্বদিকে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেনে বিয়ের কাজটি সারেন তারা। হাতির র্যা লির সামনেই ছিল নৃত্যশিল্পী ও ব্যান্ড পার্টি। হাতিগুলোর পিঠে ছিলেন প্রেমিক জুটি। বিয়ের কাজটি সারতে পৃথক হাতিতে ছিলেন স্থানীয় এক কর্মকর্তা।
পাটিফাত প্যান্থানন নামে এক বর বলেন, আমি অনেক দিন ধরেই পরিকল্পনা করছিলাম, আমি যদি বিয়ের লাইসেন্সে স্বাক্ষর করতে পারি তাহলে এটি হবে ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান।
হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে অবশ্য থাইল্যান্ডে নতুন কিছু নয়। প্রতি বছর চনবুরি প্রদেশের নং নুচ ট্রপিক্যাল গার্ডেনে এই আয়োজন হয়ে থাকে। অন্য বছর প্রায় ১০০ জুটির বিয়ে হলেও এবার করোনার কারণে সংখ্যা ছিল কম। সূত্র: রয়টার্স
এফএ
মন্তব্য করুন
ইসরায়েলকে সহায়তা করায় উত্তাল জর্ডান
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ৩০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান কিন্তু সেগুলো ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগে অনেকগুলো ভূপাতিত করে জর্ডান। আর এতেই সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে দেশটির জনগণ। তবে জর্ডান সরকার জানিয়েছে, আত্মরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ডয়েচে ভেলে।
সরায়েলের পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে জর্ডানও ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূপাতিত করার দায়িত্ব নিলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জর্ডান সরকার জানিয়েছে আত্মরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, কারণ এগুলো আমাদের জনগণ ও জনবহুল এলাকার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল।
কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জর্ডানের নাগরিকরা তাদের সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন। জর্ডানের রানিসহ প্রতি পাঁচজনের একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত।
হুসেইন নামে দেশটির একজন রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, জর্ডান যেভাবে ইসরায়েলকে রক্ষা করেছে তাতে আমি খুবই বিরক্ত। বিপদের আশঙ্কা থাকায় তিনি তার পুরো নাম উল্লেখ করতে চাননি। এখানকার অনেকেই এটা মেনে নিচ্ছে না। আমরা ইরানকে সমর্থন করি না এবং গাজায় এখন যা ঘটছে তার পেছনে ইরানের বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করি৷ কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে এমন যে-কোনো পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা আছি।
মারিয়াম নামে আম্মানের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, জর্ডানে ইরানের জনপ্রিয়তা নেই। কিন্তু আমি ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র জর্ডানের বাধা দেওয়া ও অনিচ্ছাকৃতভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া প্রত্যাখ্যান করি।
আম্মানের সামরিক বিশ্লেষক মাহমুদ রিদাসাদ ডিডাব্লিউকে বলেন, সপ্তাহান্তে যে ঘটনা ঘটেছে তাকে ‘কখনও ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য করা হয়েছে তেমনটা বলা যাবে না, বরং জর্ডানের সার্বভৌমত্ব এবং আকাশসীমা রক্ষার জন্য করা হয়েছে'৷ কারণ, ড্রোন বা মিসাইল কোথায় পড়বে তা জানা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
এদিকে জর্ডান সহায়তা করেছে বলে ইসরায়েলের গণমাধ্যমে খুশির খবর প্রকাশ সম্পর্কে রিদাসাদ বলেন, এটা ইসরায়েলের প্রোপাগান্ডা ছাড়া কিছু নয়।
ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশ্লেষক তাহানি মুস্তফা ডিডাব্লিউকে জানান, সপ্তাহান্তের ঘটনা নিয়ে জর্ডানের নাগরিকেরা বিভক্ত৷কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে জর্ডানের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক নিয়ে মানুষ বিস্তারিত জানে না, কারণ এসব বিষয় নিয়ে এখানে বেশি লেখা হয় না।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে জর্ডানের সংসদের অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য, পরিবহন ও বিমান বাধা ছাড়াই জর্ডানে ঢুকতে ও ঘুরে বেড়াতে পারবে৷ গাজা নিয়ে আম্মানে বিক্ষোভ শুরুর পর অনেকে জর্ডান থেকে মার্কিনিদের তাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতে শুরু করেন বলে ডিডাব্লিউকে জানান মুস্তফা।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আম্মানে ইসরায়েলের দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। তারা ১৯৯৪ সালে ইসরায়েল ও জর্ডানের মধ্যে সই হওয়া শান্তি চুক্তি বাতিলেরও আহ্বান জানান।
ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রাশিয়ার অস্ত্র
রাশিয়ার অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনপিপি স্টার্টের আমন্ত্রণে মার্চ মাসে মস্কো সফর করেছিল ইরানের একটি প্রতিনিধিদল। অস্ত্র তৈরির কারখানা থেকে দরকারি সরঞ্জাম কেনাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ এ সফরের উদ্দেশ্য।
সফরের শেষ দিন প্রতিনিধিদল যান অস্ত্র কারখানায়। এসব অস্ত্রের জন্যই দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় ছিল ইরান। এর মধ্যে রাশিয়ার উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ছিল অন্যতম, যা শত্রু যুদ্ধবিমানকে শনাক্তের পাশাপাশি উড়িয়ে দিতে পারে। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের।
রাশিয়ার ইয়েকাতেরিনবার্গের ওই অস্ত্র কারখানায় মোবাইল লঞ্চার, বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র ছাড়াও রাশিয়ার উন্নত এস–৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা হয়।
রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম মার্কিন ও ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান শনাক্ত ও তা ধ্বংস করার উপযোগী রুশ এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এমনটাই মূল্যায়ন করেছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে হ্যাকার গ্রুপের ফাঁস করা রুশ নথি ও ইরানের কিছু ই–মেইল অনুযায়ী, ইরানি কর্মকর্তাদের মার্চ মাসের রাশিয়া সফরের উদ্দেশ্য ছিল বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইরানকে কতটা উৎপাদন সক্ষম করে তোলা সম্ভব, তা খতিয়ে দেখা।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সফরের পর রাশিয়ার কাছ থেকে ইরান সরাসরি কোনো অস্ত্র কিনেছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, এ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারত্ব গভীর হয়েছে। ইসরায়েলে গত শনিবার ইরানের হামলার পর সম্ভাব্য পাল্টা হামলার আগে রাশিয়া-ইরান জোট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
রাশিয়া গোয়েন্দা সক্ষমতার কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে ইরানকে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে রাশিয়ার সবচেয়ে উন্নত এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান ইরানকে দেওয়া হয়েছে কি না, তার এখনো কোনো প্রমাণ নেই বলেও প্রতিবেদনে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এই সংবাদ মাধ্যমটি।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মস্কোকে সহায়তা করার জন্য ইরান ২০২২ সালে হাজারো ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে সম্মত হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের নতুন অধ্যায় খুলেছে। তাদের মধ্যে সম্পর্কের এই গভীরতা মস্কো ও তেহরানের মধ্যে চুক্তি শক্ত করতে সহায়তা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, রাশিয়া তার মিত্রকে উন্নত যুদ্ধবিমান ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য যেকোনো বিমান হামলায় প্রতিরক্ষা মজবুত করতে পারবে তেহরান।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মস্কোর পক্ষ থেকে কতগুলো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে বা কতগুলো ইরানে বসানো হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে রাশিয়ার প্রযুক্তি ইরানকে আরও শক্তিশালী ইসরায়েলি প্রতিপক্ষ তৈরি করতে পারে। এ অস্ত্র চুক্তি দুই দেশের জন্যই এখন সুফল বয়ে আনছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া এখন তাদের গোপন চুক্তিকে উন্নত যুদ্ধবিমান সরবরাহের পর্যায়ে উন্নীত করছে। এ ছাড়া গোয়েন্দা সক্ষমতার কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে ইরানকে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের চাওয়া পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর সুরক্ষায় রাশিয়ার বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। তেহরান রাশিয়া এস-৩০০ কেনার চুক্তি করেছিল ২০০৭ সালে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর চাপে তা দিতে পারেনি রাশিয়া। ২০১৬ সাল থেকে সে বাধা দূর হয়ে গেলে ইরান ২০১৯ সাল থেকে এস-৩০০ ব্যবহার শুরু করে। এরপর এস-৪০০ নিতে উৎসাহী হয় ইরান। রাশিয়া এগুলো তেহরানকে দিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মনে করেন, সরাসরি এস-৪০০ না দিলেও এর নকশা বা প্রযুক্তি ইরানের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।
যদি ইরান এ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পেয়ে থাকে, তবে ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরও সুরক্ষিত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হাডসন ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো কান কাসাপগলো বলেন, রাশিয়ার এসব অস্ত্রে ইরানের আকাশ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।
এদিকে সম্প্রতি মস্কো ও তেহরান যৌথভাবে নতুন ধরনের চালকবিহীন ড্রোন (ইউএভি) তৈরি শুরু করেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও ফাঁস হওয়া নথিতে এসব তথ্য সামনে এসেছে। এসব নথি অবশ্য যাচাই করতে পারেনি ওয়াশিংটন পোস্ট। তবে বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এসব নথির যথার্থতা যাচাই করছেন। রাশিয়া ও ইরান অবশ্য এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় নিহত ১৭, শিশুসহ আহত ৬০
ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে ঐতিহাসিক শহর চেরনিহিভে রুশ বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলায় শিশুসহ আরও অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) এ হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।
চেরনিহিভের মেয়র অলেক্সান্ডার লোমাকোন বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি আট তলা ভবনে ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে। এ নিয়ে শহরের কেন্দ্রস্থলে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের হামলার খবর প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পর এ হামলা চালানো হয়। সেই হামলার বিস্তারিত এখনও নিশ্চিত করা হয়নি, যদিও স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো উত্তর ক্রিমিয়ার ঝানকোয় এয়ারফিল্ডে আগুনের ভিডিও শেয়ার করেছে।
চেরনিহিভের মেয়র বলেন, একটি ভবনে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত করেছে এবং বেশ কয়েকটি তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কিয়েভের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, হামলায় আরও চারটি উচ্চ ভবন, একটি হাসপাতাল, কয়েক ডজন গাড়ি এবং একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জরুরি পরিষেবাগুলো অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং কর্মকর্তারা জনসাধারণকে রক্ত দিতে এগিয়ে আসার জন্য আবেদন করেছেন।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান একাই যথেষ্ট : চীন
ইসরায়েলে ইরানের হামলায় পক্ষ নিলো চীন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, ইরান ‘পরিস্থিতি সামাল দিতে’ এবং মধ্যপ্রাচ্যে আরও উত্তেজনা এড়াতে সক্ষম। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
চীন চায় সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে হামলা এবং সপ্তাহান্তে তার প্রতিশোধমূলক হামলা ইরান তার সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদা রক্ষায় করেছে। তারা পরিস্থিতি ভালভাবে মোকাবিলা করতে ও এই অঞ্চলের অশান্তি এড়াতে সক্ষম।
এনিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সোমবার (১৫ এপ্রিল) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় চীন আঞ্চলিক এবং প্রতিবেশী দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত না করায় ইরানের প্রশংসা করেন।
সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলার তীব্র নিন্দা ও দৃঢ় বিরোধিতা করে ঘটনাটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ওয়াং উল্লেখ করেন ইরানের এই কর্মকাণ্ড (ইসরায়েলে হামলা) ছিলো সীমিত, যা দেশটি আত্মরক্ষার জন্য করেছে।
ফোনে ইরানের অবস্থান সম্পর্কে ব্রিফ করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াংকে জানান, ইরান আঞ্চলিক উত্তেজনা সম্পর্কে সচেতন এবং সংযম ব্যবহার করতে ইচ্ছুক। পাশাপাশি আরও উত্তেজনা বাড়াতে ইরানের কোনো ইচ্ছেই নেই বলে মন্তব্য করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান।
মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর দল পিএনসির বড় জয়
মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছে প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)। দেশটির পার্লামেন্ট পিপলস মজলিশের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নির্ধারণে রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা ভোট গ্রহণ চলে। এরমধ্যেই বেশির ভাগ আসনের ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় পায় পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)। খবর এএফপি।
রোববার (২১ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মালদ্বীপের নির্বাচন কমিশন ৯৩টি আসনের মধ্যে ৮৬টির ফলাফল ঘোষণা করে। এসব আসনের মধ্যে ৬৬টিতে জয় পেয়েছে পিএনসি। এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসনের চেয়ে এই সংখ্যা অনেক বেশি। মাত্র আটটি আসন ছিল বিদায়ী পার্লামেন্টে পিএনসি ও তাদের শরিকদের।
এবারের নির্বাচনকে প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর জন্য কঠিন পরীক্ষা ছিল। কেননা চীনপন্থী মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হলেও পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ ছিল তার পূর্বসূরি ভারতপন্থী ইব্রাহিম মোহামেদ সালেহর দল মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) হাতে। ফলে চীনপন্থী মুইজ্জুর দল এবার পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে কি না, তা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।
গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারতবিরোধী অবস্থান প্রকাশ করে বিজয়ী হন মোহামেদ মুইজ্জু। মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের মতো চীনপন্থী অবস্থান নেন। এদিকে দুর্নীতির অভিযোগে ইয়ামিনের ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। তবে গত সপ্তাহে আদালত এ সাজা বাতিল করে।
চলতি মাসে যখন পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য পুরোদমে প্রচারণা চলছিল, তখন মালদ্বীপে অবকাঠামো নির্মাণে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বড় ধরনের চুক্তি করেছেন মুইজ্জু। তার প্রশাসন মালদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুইজ্জুর একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী এএফপিকে বলেন, নির্বাচনে এবার ভূরাজনীতির বড় ধরনের প্রভাব ছিল। ভারতীয় সেনাদের ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতিতে তিনি (মুইজ্জু) ক্ষমতায় এসেছেন।
কয়েক ঘণ্টায় ৮০ বারেরও বেশি কেঁপে উঠল তাইওয়ান
তাইওয়ানে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৮০ বারের বেশি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাত থেকে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ভোররাত পর্যন্ত তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে এই সিরিজ ভূকম্পন অনুভূত হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পনটি ছিল ৬ দশমিক ৩ মাত্রার। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার রাত থেকে শুরু করে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে ৮০টিরও বেশি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে দ্বীপ রাষ্ট্রটির আবহাওয়া প্রশাসন। এরমধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পন ছিল ৬ দশমিক ৩ মাত্রার। কম্পনগুলোর কয়েকটির আঘাত দেশটির রাজধানী তাইপেইতেও অনুভূত হয়েছে।
তাইওয়ানের আবহাওয়া প্রশাসন বলছে, পূর্বাঞ্চলীয় প্রত্যন্ত হুয়ালিয়েন কাউন্টি ছিল ভূমিকম্পগুলোর কেন্দ্রস্থল। চলতি মাসের শুরুর দিকে ওই একই এলাকায় ৭ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল।
হুয়ালিয়েনের দমকল বিভাগ মঙ্গলবার ভোরে জানিয়েছে, গত ৩ এপ্রিল ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া একটি হোটেল আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ঝুঁকে পড়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কারণ, কিছুদিন আগে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে এটি বন্ধই ছিল।
এর আগে, ২০১৬ সালে দক্ষিণ তাইওয়ানে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তারও আগে ১৯৯৯ সালে এই দ্বীপ ভূখণ্ডে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। দু’টি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছে অবস্থিত হওয়ায় প্রকৃতিগতভাবেই তাইওয়ান অত্যন্ত ভূমিকম্প প্রবণ।
ছবি তুলতে গিয়ে আগ্নেয়গিরিতে পড়ে পর্যটকের মৃত্যু
ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভায় একটি আগ্নেয়গিরির কিনারায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ২৫০ ফুট নিচে পড়ে মারা গেছেন হুয়াং লিহং নামে এক চীনা এক নারী। স্বামী ঝাং ইয়ংয়ের সঙ্গে নীল আগুনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ওই আগ্নেয়গিরি থেকে সূর্যাদয় দেখার ইচ্ছা ছিল তার।
শনিবার (২০ এপ্রিল) আইজেন নামে পূর্ব জাভার একটি আগ্নেয়গিরি পর্যটক পার্কে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে। সোমবার (২৩ এপ্রিল) সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, সূর্যদয় দেখার জন্য ওই দম্পতি আগ্নেয়গিরির একেবারে কিনারে চলে গিয়েছিলেন। যে ট্যুরিজম কোম্পানির মাধ্যমে তারা সেখানে গিয়েছিলেন সেই কোম্পানি ট্যুর গাইড বলেছেন, ছবি তোলার জন্য লিহং বারবার গর্তের কিনারে চলে যাচ্ছিলেন। এ সময় বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক করা হলেও শুনছিলেন না তিনি। পরে ফিরে আসার সময় নিজের পোশাকের সঙ্গে পা জড়িয়ে প্রায় ২৫০ ফুট নিচে পড়ে যান তিনি।
প্রসঙ্গত, আইজেন তার নীল আগুনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যা আসলে সালফিউরিক গ্যাসের দহন থেকে নির্গত নীল আলো। এর গহ্বরটি কাওয়াহ ইজেন নামে পরিচিত, যার অর্থ একাকী গহ্বর। পর্যটক এবং খনি শ্রমিকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি সাইট এটি। প্রসাধনী থেকে দিয়াশলাই পর্যন্ত অনেক শিল্পেই এখানকার শক্ত হলুদ সালফার ব্যবহৃত হয়। আগ্নেয়গিরিটি থেকে নিয়মিত বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হলেও, তা সীমিত আকারের হওয়ায় সাইটটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রেখেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার।
ইন্দোনেশিয়ায় অন্তত ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। লাখ লাখ ইন্দোনেশিয়ান এসব আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বাস করে এবং কৃষিকাজ করে জীবন ধারন করেন, মূলত উর্বর চাষের মাটির কারণে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে কাওয়াহ আইজেন পর্যন্ত পর্বতারোহণের সময় মৃত্যু হয় ৫৩ বছর বয়সী এক পোলিশ পর্যটকের। এর আগে ২০১৮ সালে আগ্নেয়গিরিটি বিষাক্ত গ্যাস নির্গত শুরু করার পরে আশপাশের অনেক লোককে তাদের বাড়িঘর খালি করতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং কমপক্ষে ৩০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে একজন ৬৮ বছর বয়সী সুইস ব্যক্তি মাউন্ট আইজেনে আরোহণ করতে গিয়ে পড়ে যান। মারা যাওয়ার আগে তিনি শ্বাসকষ্টের কথা জানান।