শিমাগের তৈরি মাস্ক পরায় বাংলাদেশির ওপর সৌদি নাগরিকের হামলা (ভিডিও)
সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী ডিজাইনের তৈরি করা একটি মাস্ক পরার কারণে দেশটিতে একজন বাংলাদেশি শ্রমিক শারীরিক ও মৌখিকভাবে হামলার শিকার হয়েছে। ওই হামলার ঘটনা হামলাকারী ব্যক্তি নিজেই ভিডিও করেছেন। এমন এক সময় এই ভিডিও সামনে এলো যখন জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার ঘট্নায় বিশ্বজুড়ে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন চলছে। খবর মিডল ইস্ট আইয়ের।
৩৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, হামলাকারী গাড়ি থেকে নেমে একটি ফুয়েল স্টেশনে ক্যামেরা অন করে কিছু দেখাতে চাইছেন। হামলাকারী বলেন, দেখুন, এই বাংলাদেশি একটি মাস্ক পরে আছে। কিন্তু সে এটা কীভাবে পরে আছে দেখুন। তার এই মাস্কটি শিমাগের (সৌদির ঐতিহ্যবাহী মাথায় পরার কাপড়) কাপড় দিয়ে তৈরি।
ফেসবুকে ৪৬ হাজারের বেশি ভিউ হওয়া ওই ভিডিওতে হামলাকারীকে বলতে শোনা যায়, দেখুন এই বাংলাদেশি কী পরেছে। তুমি এটা পরতে পারো না। এটা সৌদি শিমাগ। এসময় ওই সৌদি নাগরিক বাংলাদেশি শ্রমিককে বকা দিয়ে তাকে মারতে থাকেন। মারতে থাকা অবস্থায়ই তিনি বলেন, ওটা সৌদি। এখান থেকে চলে যাও। নোংরা। কী লজ্জাজনক।
কোথায় ও কবে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে তা জানায়নি মিডল ইস্ট আই। তবে এমন হামলার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন নেটিজেনরা। মৌরতানিয়ার একজন গবেষক মোহাম্মদ আল-মুখতার আল-শানকিতি লিখেছেন, এই বাঙালি ব্যক্তি যদি একটি স্বাধীন দেশে থাকতেন, তাহলে তার মর্যাদাহানির জন্য ক্ষোভে লাখ লাখ মানুষ রাস্তা নামতো এবং জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার ঘটনায় লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমেছে।
ফিলিস্তিনের একজন অধিকার কর্মী জামাল সাইফ লিখেছেন, চাপে থাকা ব্যক্তিরা দুর্বল জাতির ওপর হামলা করছে। তারা একজন মিউনিসিপ্যাল কর্মীর বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে না, তাই দুর্বলের ওপর অত্যাচার করে।
ইব্রাহিম আল-মুনিফ নামের একজন সৌদি নাগরিক লিখেছেন, মার্কেটে বিক্রি হওয়া শিমাগ মাস্ক পরার কারণে কাউকে আঘাত করার কী অধিকার রয়েছে কারও? যদি কোনও সৌদিকে কোনও দেশে পেটানো হতো তাহলে আমরা বর্ণবাদের ট্রেন্ড দেখতাম এবং তার অধিকারের দাবি করতাম! এশিয়ান কর্মী হওয়ার কারণে তিনি এটা করতে পেরেছেন, যদি সে আমেরিকান বা ইউরোপিয়ান হতো, তাহলে তার হামলা করার সাহস হতো না। যদি তাকে ছাড় দেয়া হয়, তাহলে অন্যরাও এটা করতে সাহস পাবে। এসময় তিনি ওই হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করতে পাবলিক প্রসিকিউটরের প্রতি অনুরোধ জানান।
এদিকে সৌদির ওকাজ পত্রিকা জানিয়েছে, এই হামলার ঘটনার পর ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে সৌদির পাবলিক প্রসিকিউটর।
উল্লেখ্য, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি আরবে কারফিউ থাকার পর গত মাসে ধীরে ধীরে আর্থিক কর্মকাণ্ড আবারও চালু হতে শুরু করেছে। কিন্তু আর্থিক কর্মকাণ্ড চালু হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরার মতো বিধিনিষেধ এখনও বলবৎ রয়েছে।
এ
মন্তব্য করুন