• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনাভাইরাসের কারণে চীনের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আরেকটি মামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ১০ এপ্রিল ২০২০, ১৪:০৪
American Coronavirus Lawsuits Seek Compensation from China
ভয়েস অব আমেরিকা থেকে নেয়া

এক মাসের কম সময়ের মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি মার্কিনি এক জোট হয়ে কোভিড-১৯ এর কারণে চীনা সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে ফ্লোরিডায় একটি মামলা করেছে। মামলার বাদীরা দাবি করেছেন, ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বেইজিংয়ের অবহেলার কারণে তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর আগে নেভাদা এবং টেক্সাসেও এ ধরনের মামলা করা হয়েছিল।

ফ্লোরিডায় মামলা দায়ের করা বারমেন ল গ্রুপ ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছে, ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার কারণে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং চীনের ‘ওয়েট মার্কেটের’ ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের বিষয়গুলো আমাদের মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এই আইনি সংস্থাটি বলছে, ফরেন সভরেন ইমিউনিটিস অ্যাক্টে (এফএসআইএ) ‘ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড’ ও ‘ব্যক্তিগত আঘাত’- এ দুটো বিষয় ব্যতিক্রম; এটাই চীনের বিরুদ্ধে মামলার করার আইনি ভিত্তি।

তবে সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হেস্টিংস কলেজ অব ল-এর অধ্যাপক চিমেন কেটনার এর সঙ্গে একমত নন।

চিমেন বলেন, আপনি যদি এফএসআইএ এর অধীনে দায়ের হওয়া কোনও মামলা পড়ে থাকেন তাহলে দেখবেন যে, মার্কিন ভূখণ্ডে কোনও চীনা কর্মকর্তা ব্যক্তিগত আঘাত করে থাকলে তা মামলার আওতায় পড়বে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের বাণিজ্যিক কোনও কর্মকাণ্ডও নেই।

তিনি বলেন, আপনি কোনও একটি বিদেশি দেশের নৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন না।

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল

ব্রিটিশ রক্ষণশীল থিংক ট্যাঙ্ক হেনরি জ্যাকসন সোসাইটির মতে, করোনাভাইরাস ক্ষয়ক্ষতির জন্য চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে দায়ের করা সম্ভাব্য মামলার আর্থিক পরিমাণ ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে। নতুন একটি প্রতিবেদনে হেনরি জ্যাকসন জানিয়েছে, শুরুর দিকে এই রোগ নিয়ে অব্যবস্থাপনার কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সম্ভাব্য দায় চীনের। সুনির্দিষ্টভাবে বললে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধির লঙ্ঘন।

এই থিংক ট্যাঙ্ক বিভিন্ন দেশকে চীনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আহ্বান জানিয়েছে। ডব্লিউএইচও, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত, স্থায়ী সালিশী আদালত, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রের আদালতসহ বিভিন্ন আদালতে এই মামলা দায়েরের পথও বাতলে দিয়েছে তারা।

ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে হেনরি জ্যাকসন সোসাইটির গবেষণা পরিচালক এবং এই প্রতিবেদনের সহলেখক অ্যান্ড্রু ফক্সাল বলেন, একটি নয় বরং বেশ কয়েকটি আইনি পথই সবচেয়ে কার্যকর উপায় হতে পারে।

সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল-র অধ্যাপক এবং ডব্লিউএইচও-র সাবেক আইনি পরামর্শদাতা ডেভিড ফিদলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো করোনাভাইরাস নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনও আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।

তিনি বলেন, মহামারি যেকোনো জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে; তাই আমি মনে করি যে নৈতিক বুমেরাং নিক্ষেপ করা নিয়ে কারও খুব একটা আগ্রহ নেই। মজার বিষয় হচ্ছে যে, সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগ করার ব্যাপারে দেশগুলোর খুব একটা আগ্রহ নেই।

ট্রান্সবাউন্ডারি ক্ষতি

এক দেশের কারণে অন্য দেশের ক্ষতির কারণে ‘আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার’ প্রচলিত আইনটি ১৯২০-র দশকে প্রথম ট্রেইল স্মেলটার সালিশে স্বীকৃতি পেয়েছিল।

কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি স্মেলটার বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গত করে এবং আশেপাশের অঞ্চলের বন ও ফসল এবং কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী ওয়াশিংটন রাজ্যের ক্ষতি সাধন করে। এই দ্বন্দ্ব নিরসনে কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এবং কানাডার সরকার ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছিল।

তাই করোনাভাইরাসের বিস্তারের ক্ষেত্রেও চীনের দায়বদ্ধতা রয়েছে বলে মনে করেন আইনি বিশেষজ্ঞরা।

ওয়াশিংটন এবং লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক রাসেল মিলার বলেন, যদি কানাডায় পরিবেশগত বিষয় নিয়ে ভালো আইন থাকতো তাহলে স্মেলটার দূষণ করতো এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করতো না। এখানে এটার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। চীন যদি খাদ্য সুরক্ষা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বজায় রাখতো তাহলে এটি ছড়িয়ে পড়তো না।

শিকাগোর একজন ফিনান্স অ্যাটর্নি উইলিয়াম স্টারশাক বলেন, নিজের স্বার্থেই কানাডার মতো দায়বদ্ধতা মেনে নেয়া উচিত চীনের।

স্টারশাক বলেন, এটি চীনকে একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেখাতে সহায়তা করবে। তবে এটার কারণে বিভিন্ন বিষয় এবং ভূ-রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি হতে পারে। এগুলো সমাধান করতে হবে। এভাবেই সামনে এগিয়ে যেতে পারবে চীন।

এ/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ-চীনের সামরিক মহড়া, যে প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব থাকলে মৃত্যু হতে পারে ইউরোপের : ম্যাক্রোঁ
‘অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে বাংলাদেশের সম্পর্ককে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র’
বাংলাদেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধির আহ্বান জানালেন চীনের কালচারাল কাউন্সিলর 
X
Fresh