• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিমকে সংস্কৃতের অধ্যাপক করায় হিন্দু শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২১ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৫০
ভারত, উত্তর প্রদেশ
বিবিসি বাংলা

ভারতের উত্তর প্রদেশের বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে (বিএইচইউ) সংস্কৃতের অধ্যাপক হিসেবে ফিরোজ খান নামের এক মুসলিম যুবককে নিয়োগ দেয়ার পর থেকে এর বিরুদ্ধে টানা বিক্ষোভ করে যাচ্ছে হিন্দু শিক্ষার্থীরা। খবর বিবিসি বাংলার।

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ জানায়, সংস্কৃতে পিএইচডি ডিগ্রিধারী ফিরোজ খানের চেয়ে যোগ্য কোনও প্রার্থী এই পদে ছিলেন না। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাকে শ্রেণিকক্ষে ঢুকতেই দিচ্ছে না। এমনকি তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনেও অবস্থানও নিয়েছে।

এর আগেও ভারতে মুসলিমদের সংস্কৃত পড়া বা পড়ানো নিয়ে বিতর্ক দেখা গেছে। তবে এবারের বিতর্কে শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে বিজেপির সংসদ সদস্যদের অনেকেই রাজস্থানের ফিরোজ খানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

বিখ্যাত ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯১০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতে বিএ পাসের পর এমএ-তে ভর্তি হওয়ার সময় বাধার সম্মুখীন হন। তখন পণ্ডিত সত্যব্রত সামশ্রমী নামের এক শিক্ষক জানান হিন্দু নয় এমন কাউকে তিনি বেদ পড়াবেন না।

এই বিতর্ক এক পর্যায়ে আদালতে গড়ায়। পরবর্তীতে দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে ‘ভাষাতত্ত্ব’ নামে নতুন বিভাগ চালু করে বিভাগটিতে মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন তখনকার উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।

এই ঘটনার একশ’ বছরের বেশি সময় পর বিএইচইউতে অনেকটা একই ধরনের সমস্যায় পড়েছেন রাজস্থানের জয়পুরের কাছাকাছি অবস্থিত বগরু গ্রামের ছেলে ফিরোজ খান। তার নিয়োগের বিরুদ্ধে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সংস্কৃত বিদ্যা ধর্ম বিজ্ঞান’ নামের সেন্টারটিতে ফিরোজ খানকে সংস্কৃতের শিক্ষক হিসেবে মানা সম্ভব নয়। এক শিক্ষার্থী বলেন, এই সেন্টার একটি গুরুকুল। এর প্রবেশপথের শিলাতে লেখা আছে, হিন্দুর চেয়ে ইতর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।

তিনি বলেন, এটি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মদনমোহন মালব্যজির কথা। তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম ধর্মাবলম্বী ফিরোজ খান কিভাবে ঢুকবেন আর পড়াবেন? অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও উপাচার্য রাকেশ ভাটনগর ফিরোজ খানের পাশেই দাঁড়িয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর রামনারায়ণ দ্বিবেদী বলেন, আমাদের নিয়োগ সমিতি সব নিয়মকানুন মেনেই এই মুসলিম যুবককে চাকরি দিয়েছে কিন্তু শিক্ষার্থীরা মানতে চাইছে না। আমি বলব এই ধরনের আন্দোলন তাদের করা উচিত নয়।

ফিরোজ খান দেশটির শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাদের পরিবারে সংস্কৃতের চর্চা আছে অনেকদিন ধরে। তার বাবা রমজান খান ভজন গান করেন, এমনকি গোশালা রক্ষার প্রচার চালান। তাই তার বিরুদ্ধে এই ধরনের আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত দুঃখিত।

ফিরোজ খানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে গুজরাটের বিজেপি এমপি ও বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল এক টুইটার পোস্টে লেখেন, ভাষার সঙ্গে ধর্মের সম্পর্কটা কী? এই যুক্তি দিলে মোহাম্মদ রফি কোনও দিন ভজন গাইতে পারতেন না। আর নৌশাদ এতে সুর দিতে পারতেন না।

কে/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ভারতে ভোট দিতে গিয়ে হিটস্ট্রোকে ৫ জনের মৃত্যু
ভারতীয় তিন কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
মোদি ও রাহুলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ, ইসির নোটিশ
বাংলাদেশ-চীনের সামরিক মহড়া, যে প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত
X
Fresh