জিন্নাহর জন্মদিনে ভারতকে খোঁচা ইমরানের
পাকিস্তানের জনক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর জন্মদিনে ভারতে সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে দাবি করে দেশটিকে খোঁচা দিলেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
মঙ্গলবার বিকেল তিনটা ১১ মিনিটে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি লেখেন, কায়েদে আজম পাকিস্তানকে একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়পরায়ণ ও পরদুঃখকাতর রাষ্ট্র হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন। বিশেষ করে তিনি চেয়েছিলেন আমাদের সংখ্যালঘুরা সংখ্যাগরিষ্ঠদের সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।
এটা মনে রাখা উচিত যে রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি হিন্দু ও মুসলিম ঐক্যের দূত ছিলেন।
এরপর বিকেল তিনটা ৪৫ মিনিটে আরেকটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, যখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠরা মুসলিমদেরকে সমান সুযোগ-সুবিধা দেবে না, শুধু তখনই মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের দাবিতে তার সংগ্রাম শুরু হয়।
তিনি আরও লেখেন, নয়া পাক হলো কায়েদ’র পাক এবং আমরা আমাদের সংখ্যালঘুদেরকে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবো। ভারতে যা ঘটছে, তা ঘটবে না।
সম্প্রতি গো-রক্ষকদের তাণ্ডব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভারতীয় অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। সংখ্যালঘু হওয়ায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এনিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কের আগুনের জিন্নাহর জন্মদিনে যেন কেরোসিন ঢাললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, ১৮৭৬ সালের এদিনে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে ওঠেন। এসময় তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পৃষ্ঠপোষকতা করেন।
১৯১৬ সালে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে লখনৌ চুক্তির সময় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এসময় জিন্নাহ মুসলিম লীগেরও সদস্য ছিলেন। হোম রুল আন্দোলন সংগঠনে জিন্নাহ অন্যতম প্রধান নেতা হয়ে উঠেন।
মুসলিমদের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষায় তিনি চৌদ্দ দফা প্রস্তাব করেন। মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহে অংশ নিলে ১৯২০ সালে তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা পর্যন্ত জিন্নাহ নিখিল ভারত মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন।
স্বাধীনতার পর তিনি পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল হন এবং আমৃত্যু এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। পাকিস্তানে তাকে কায়েদে আজম (মহান নেতা) ও বাবায়ে কওম (জাতির পিতা) হিসেবে সম্মান করা হয়। ১৯৪৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়।
কে/এমকে
মন্তব্য করুন