• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

৮৮১ নোবেলজয়ীর মাত্র ৪৮ জন নারী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৮ মার্চ ২০১৮, ১৬:১২

নোবেল পুরস্কার পৃথিবীতে সবচেয়ে সম্মানজনক বলে বিবেচিত। বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানকে সফল গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য এই পুরস্কার দেয়া হয়। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সাহিত্য ও শান্তি- এই ছয় ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কারটি দেয়া হয়।

এ পর্যন্ত মোট ৮৮১ জন(একাধিকবার পাওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রতিবার যোগ করলে সংখ্যাটা হবে ৯২৩) নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা মাত্র ৪৮(ম্যারি জলিওট-কুরির দুটো নোবেল ধরলে ৪৯ জন)। অর্থাৎ প্রায় প্রতি ১৮ জন পুরুষের বিপরীতে একজন নারী নোবেল সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

নোবেল চালুর দুই বছর পর প্রথমবারের মতো কোনো নারী পুরস্কারটি জেতেন। ১৯০৩ সালে স্বামী পিয়েরে জলিওট-কুরির সঙ্গে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ পান ম্যারি জলিওট-কুরি। এরপর ১৯১১ সালে এককভাবে রসায়নে নোবেল জেতেন তিনি। বিজ্ঞানের দুটি শাখায় দুবার নোবেলজয়ী একমাত্র নারী তিনি।

১৯০৫ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জেতেন অস্ট্রিয়ার বার্থা ভন সুটনার। ১৯০৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পান সুইডেনের সেলমা ল্যাগেরলফ। সাহিত্যে নোবেল পাওয়া প্রথম নারী তিনি। ১৯২৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পান ইতালির গ্রাজিয়া ডেলেড্ডা। প্রথম ইতালিয়ান নারী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পান তিনি।

১৯২৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জেতেন নরওয়ের সিগরিড আন্ডসেট। ১৯৩১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান জেইন অ্যাডামস। প্রথম আমেরিকান নোবেলজয়ী নারী তিনি।

১৯৩৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার জেতেন ফ্রান্সের ইরিনে জলিওট-কুরি। তিনি ফ্রেডেরিক জলিওট-কুরির স্ত্রী এবং পিয়েরে জলিওট-কুরি ও ম্যারি জলিওট-কুরি দম্পতি দম্পতির কন্যা।

১৯৩৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জেতেন আমেরিকার পার্ল বাক। ১৯৪৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জেতেন চিলির গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল। এটি তার ছদ্মনাম। তার প্রকৃত নাম লুসিলা গোডোয় আলকায়াগা।

১৯৪৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান আমেরিকার এমিলি গ্রিন বল্চ। ১৯৪৭ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে পুরস্কার জেতেন আমেরিকার গারটি কোরি। ১৯৬৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন আমেরিকার মারিয়া গোয়েপার্ট-মায়ার।

১৯৬৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার জেতেন ইংল্যান্ডের ডরোথি মেরি হজকিন। ১৯৬৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন সুইডেনের নেলি স্যাচস। ১৯৭৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জেতেন আয়ারল্যান্ডের মাইরিয়াড কোরিগান ও বেটি উইলিয়ামস।

১৯৭৭ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল জেতেন আমেরিকার রোজালিন ইয়ালো। ১৯৭৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ভারতের মাদার তেরেসা। ১৯৮২ সালে শান্তিতে নোবেল জেতেন সুইডেনের আলভা মিরডল। ১৯৮৩ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান আমেরিকার বারবারা ম্যাকলিন্টক।

১৯৮৬ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ইতালির রিটা লেভি-মোন্টালচিনি। ১৯৮৮ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার জেতেন আমেরিকার গারট্রুড বি ইলন। ১৯৯১ সালে শান্তিতে মিয়ানমারের অং সান সু চি এবং সাহিত্যে দক্ষিণ আফ্রিকা নাডিন গর্ডিমার নোবেল পুরস্কার পান।

১৯৯২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান গুয়েতেমালার রিগোবারটা মেঞ্চু টুম। ১৯৯৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জেতেন আমেরিকার টনি মরিসন। ১৯৯৫ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান জার্মানির ক্রিস্টিয়ান নুসলেইন ভলহার্ড। ১৯৯৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পান পোল্যান্ডের ভিশ্লাভা শিমবোরস্কা।

১৯৯৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জেতেন আমেরিকার জোডি উইলিয়ামস। ২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ইরানের শিরিন এবাদি। ২০০৪ সালে শান্তিতে কেনিয়ার ওয়ানগারি মাথাই, চিকিৎসাবিজ্ঞানে আমেরিকার লিন্ডা বি. বাক, সাহিত্যে অস্ট্রিয়ার এলফ্রিডে জেলিনেক নোবেল পুরস্কার পান।

২০০৭ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান ইংল্যান্ডের ডোরিস লেসিং। ২০০৮ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ফ্রান্সের ফ্রাঁসোয়াজ বারে সিনৌসি নোবেল পুরস্কার পান। ২০০৯ সালে অর্থনীতিতে আমেরিকার এলিনর অসট্রম, সাহিত্যে জার্মানির হারটা মুলার, চিকিৎসাবিজ্ঞানে আমেরিকার এলিজাবেথ ব্ল্যাকবার্ন ও ক্যারল গ্রেইডার এবং রসায়নে ইসরায়েলের আদা ইয়োনাথ।

২০১১ সালে শান্তিতে নোবেল পান লাইবেরিয়া এলেন জনসন সারলিফ ও লেমাহ গাবোয়ি এবং ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান। ২০১৩ সালে কানাডীয় লেখক অ্যালিস মুনরো সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। ২০১৪ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নরওয়ের মে-ব্রিট মোসার এবং শান্তিতে পাকিস্তানের নারী শিক্ষা আন্দোলনের কর্মী মালালা ইউসুফজাই। সব থেকে কম বয়সে নোবেল জয় করেন মালাল।

২০১৫ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে চীনের ইউইউ তু এবং সাহিত্যে রুশ লেখিকা সেভেটুরসা অ্যালেক্সিয়েভিচ নোবেল পুরস্কার পান। এরপর আর কোনো নারী নোবেল পুরস্কার জেতেননি।

তালিকা থেকে স্পষ্ট যে প্রবর্তেনেরর পর টানা দুই বছর এবং সবশেষ দুই বছর কোনো নারীই নোবেল পুরস্কার জেতেননি।

এ পর্যন্ত বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায়(পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান ও অর্থনীতি) ৩৫৭ নোবেলজয়ীর মধ্যে নারীর সংখ্যা মাত্র ১৬।

পদার্থবিজ্ঞান: পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম নারী হিসেবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ম্যারি কুরি। এরপর ১৯৬৩ সালে দ্বিতীয় ও সর্বশেষ নারী হিসেবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পান মারিয়া গোয়েপার্ট-মায়ার।

রসায়ন: রসায়নে নোবেল পেয়েছেন চার নারী। এদের মধ্যে মেরি জুলিয়েট কুরি(১৯১১) এবং তার মেয়ে আইরিন জুলিয়েট কুরি(১৯৩৫) রয়েছেন। অন্য দুজন হলেন- ডরোথি মেরি হজকিন(১৯৬৪) এবং আদা ইয়োনাথ(২০০৯)।

চিকিৎসাবিজ্ঞান: এই শাখায় এ পর্যন্ত ১২ জন নারী নোবেল পেয়েছেন। পদার্থবিজ্ঞান বা রসায়নে এককভাবে নারীদের নোবেল জয়ের রেকর্ড থাকলেও ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন কৃতিত্ব ছিল না। ১৯৮৩ সালে প্রথম ও শেষবারের মতো এককভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল জেতেন মার্কিন নারী বারবারা ম্যাকক্লিটক। সবশেষ ২০১৫ সালে এই শাখায় নোবেল লাভ করেন ইউইউ তু।

অর্থনীতি: ১৯৬৯ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল দেয়া শুরু হয়। অথচ ২০০৯ সালে এই শাখায় একমাত্র নারী হিসেবে নোবেল লাভ করেন এলিনর অস্ট্রম।

সাহিত্য: সাহিত্যে এ পর্যন্ত নোবেল পেয়েছেন ১৪ জন। এই শাখায় প্রথম নারী নোবেলজয়ী হলেন সেলমা ল্যাগেরলফ(১৯০৯)। আর শেষ নোবেলজয়ী নারী হলেন সেভেটুরসা অ্যালেক্সিয়েভিচ(২০১৫)।

শান্তি: শান্তিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৬ জন নারী এ পর্যন্ত নোবেল সম্মাননা পেয়েছেন। নারী হিসেবে শান্তিতে প্রথম নোবেল পুরস্কার পান জেইন অ্যাডামস(১৯৩১)। এই শাখায় শেষ নোবেলজয়ী নারী হলেন মালালা ইউসুফজাই(২০১৪)।

আরও পড়ুন:

কে/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মিউজিক ভিডিওতে তোরসা
‘ঈশ্বর কণা’ আবিষ্কারক নোবেলজয়ী পিটার হিগস মারা গেছেন
ড. ইউনূস ইউনেস্কোর পুরস্কার পাননি: শিক্ষামন্ত্রী
বিদেশ যেতে পারবেন নোবেলজয়ী ড. ইউনূস : আদালত
X
Fresh