• ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মুসলিম দেশে হয়েও কেন ইসরায়েলের পক্ষ নিল জর্ডান?

কানিজ ফাতেমা শিমু

  ২০ এপ্রিল ২০২৪, ২১:২১

ইরানের ড্রোন ও মিসাইল হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে দেহরক্ষীর মতো পাশে ছিল প্রতিবেশী মুসলিম দেশ জর্ডান। আরব দেশ হয়েও ইসরায়েলের সহযোগী হিসেবে জর্ডানের এমন কাণ্ডে বিস্মিত হয়েছে খোদ ইসরায়েলও। তবে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এতে বেশ খুশিও হয়েছে ইসরায়েলিরা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তবে কী নিজেদের স্বার্থেই ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি? এ নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা।

যদিও জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর দাবি, ইসরায়েলকে সাহায্য করতে নয়, বরং নিজের দেশকে রক্ষা করতেই ইরানের ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে জর্ডানের এমন কাণ্ডে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে দেশটি। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, অনেকে আবার হাস্যরসাত্মকভাবে নিন্দা করছেন। আবার কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরায়েলি সামরিক ইউনিফর্ম পরিহিত জর্ডানের শাসক রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর ছবি প্রকাশ করছেন।

পর্যবেক্ষকের অনেকেই বলছেন, জর্ডান প্রকৃতপক্ষে দুই নৌকায় পা রেখেছে। একদিকে আমেরিকা ও ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের কৌশলগত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা। কারণ, আর্থিকভাবে দুর্বল দেশ জর্ডান নানাভাবে আমেরিকা ও ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করতে হয়। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হচ্ছে। কারণ, মুসলিম দেশ জর্ডানের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ফিলিস্তিনি শরণার্থী। অর্থাৎ ভৌগোলিকভাবে জর্ডান এমন একটি অবস্থায় রয়েছে যে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে কোনো যুদ্ধ শুরু হলে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে জর্ডানের ওপর। তাই এ সংঘাতে নিজেদের ক্রসফায়ারে ফেলতে চায় না জর্ডান। ফলে জর্ডানের বিবৃতিকে ‘ভারসাম্য রক্ষার’ বিষয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

এছাড়া ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ানোর পেছনে জর্ডানের কূটনৈতিক বিষয় ছাড়াও রয়েছে কিছু ইতিহাস। ১৯৯৪ সালে জর্ডান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি হয়, যার মাধ্যমে জর্ডান ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়। শান্তি চুক্তির পর থেকে দুই দেশের মধ্যে শক্ত নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সহযোগিতা তৈরি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল জর্ডানে গ্যাস ও পানি সরবরাহ করে। কারণ পৃথিবীর যেসব দেশে পানির তীব্র সংকট রয়েছে তার মধ্যে জর্ডান অন্যতম। এছাড়া সে চুক্তি অনুসারে কোনো দেশই তাদের ভূমি ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশকে আক্রমণ করতে দেবে না। ২০২২ সালে আরেকটি চুক্তির আওতায় জর্ডান ইসরায়েলের কাছে সৌর বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে।

অন্যদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সীমান্ত ভাগাভাগি করে জর্ডান। ফলে ইসরাইলের সঙ্গে যে কোনো বৈরী সম্পর্ক অর্থনৈতিকভাবে দেশটিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও মিত্রতার সম্পর্ক জর্ডানের। ফলে নিজেদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আত্মরক্ষার স্বার্থেই ইরানের হামলায় ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে দেশটি।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েল বিরোধী ছাত্র বিক্ষোভে পুলিশের বর্বরতা
গাজা ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দিলো তুরস্ক
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে ইরানের নিষেধাজ্ঞা
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের
X
Fresh