কেন ইরানের ইস্পাহানকেই টার্গেট করল ইসরায়েল
ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ ইস্পাহানে আঘাত হেনেছে ইসরায়েল। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোররাতে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালিয়ে ফিলিস্তিনের গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা মার্কিন মদদপুষ্ট দেশটি।
ইস্পাহান শহরের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থেকে কয়েকটি সন্দেহজনক বস্তু লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের পর শহরের পূর্ব দিকে ওই ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানিয়েছেন ইরানের একজন সেনা কর্মকর্তা। তবে, ইরানের ভেতর ঢুকে অনুপ্রেবশকারীরা এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি দেশটির সেনাবাহিনীর। মার্কিন কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, ইসরায়েল থেকেই নিক্ষেপ করা হয়েছে ওই ক্ষেপণাস্ত্র।
এদিকে ইরানে হামলার ক্ষেত্রে দেশটির রাজধানী বাদ দিয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ইস্পাহানকেই কেন বেছে নিলো ইসরায়েল, সে বিষয়ে জানতে একজন পারমাণবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রবিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি।
হামিশ ডে ব্রেটন গর্ডন নামে যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর পারমাণবিক অস্ত্রবিষয়ক বাহিনীর সাবেক ওই কমান্ডার বিবিসিকে বলেছেন, ইস্পাহানকে টার্গেট করা খুবই উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়। ইরানের এই শহর ঘিরে অনেকগুলো সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তার একটি লক্ষ্য করেই ভোররাতে হামলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
গর্ডন বিবিসিকে বলেন, ইরান যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে বলে ইসরায়েলসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, সেই পারমাণবিক স্থাপনার আশপাশে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। এর মধ্য দিয়ে মূলত ইরানে হামলা করার সক্ষমতার বিষয়ে জানান দিতে চেয়েছে ইসরায়েল। ইরানের নিক্ষেপ করা তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় সবকটিই ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। কিন্তু ইসরায়েলের ছোড়া কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্রের সবকটি সফলভাবে আঘাত হেনেছে ইসরায়েলে।
ন্যাটোর পারমাণবিক অস্ত্রবিষয়ক এ কমান্ডারের মতে, প্রথাগত সামরিক সক্ষমতার বিচারে ইরানের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে ইসরায়েল। সে কারণেই ইরান ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ এড়িয়ে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতিদের মতো গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে ছায়াযুদ্ধ চালাতে বেশি আগ্রহী।
ইরানের পক্ষ থেকে হামলার এ ঘটনাকে ছোট হিসেবে দেখানোর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইরানের পুরোনো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা যে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র ভেদ করে ফেলেছে, এটা তেহরান স্বীকার করতে চাইছে না।
মন্তব্য করুন