• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

পাকিস্তানের সরকারকে স্বীকৃতি না দিতে মার্কিন আইন প্রণেতাদের আহ্বান

আরটিভি নিউজ

  ০৬ মার্চ ২০২৪, ১৭:০০
শাহবাজ
সংগৃহীত

নির্বাচনে হস্তক্ষেপের তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কাছে লেখা এক চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৩১ জন আইন প্রণেতা। এর আগে পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কারচুপি, নির্বাচনী সহিংসতা এবং দেশব্যাপী ইন্টারনেট বন্ধের ব্যাপক অভিযোগ ওঠে।

অস্বাভাবিকভাবে বিলম্বিত ফলাফলের কারনে ভোটে কারচুপির অভিযোগও উঠেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলো এবং তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলো। এখন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নাওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) শাহবাজ শরীফকে প্রধানমন্ত্রী করে চারটি ছোট দলের মধ্যে একটি জোট সরকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যদিও কারাবন্দী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থীরা বেশিরভাগ আসন জিতেছে।

সেনাবাহিনী কর্তৃক দমন-পীড়ন সত্ত্বেও ইমরান সমর্থিত প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদে ৯৩টি আসনে জয়ী হলেও সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের ছিল না। তিনি এবং তার দল নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করে এবং কমপক্ষে ১৮০ টি আসন জয়ের দাবি করে। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি এবং ফলাফল কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করে পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।

বুধবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৩১ জন ডেমোক্র্যাট সদস্যের চিঠিতে বাইডেন ও ব্লিঙ্কেনের প্রতি ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপের পুঙ্খানুপুঙ্খ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানে নতুন সরকারের স্বীকৃতি না দেওয়ার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বক্তব্য বা কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের মুক্তি দিতে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাতে। একই সাথে এ ধরনের ঘটনা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও তাদের মুক্তির পক্ষে কথা বলার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিতে হবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে।

আপিলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রতিনিধি গ্রেগ কাসার এবং সুসান ওয়াইল্ড। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ছিলেন প্রতিনিধি প্রমীলা জয়পাল, রাশিদা তালিব, রো খান্না, জেমি রাসকিন, ইলহান ওমর, কোরি বুশ এবং বারবারা লি।

‘গণতন্ত্র এবং সকল পাকিস্তানির স্বার্থে আমরা বাইডেন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যতক্ষণ না তদন্তে প্রমাণিত হয় যে নির্বাচনে কারচুপি হয়নি ততক্ষণ নতুন সরকারের স্বীকৃতি স্থগিত রাখতে,’ বলেন কাসার।

আইন প্রণেতারা পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে এই বার্তা দেওয়ার তাৎপর্যের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন যে, মার্কিন আইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতন্ত্রকে দুর্বল করা বা দুর্নীতিকে উৎসাহিত করার জন্য জবাবদিহিতার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব, নির্যাতনের ভিডিও প্রমাণ এবং ভোটের সংখ্যায় অসঙ্গতির কথা উল্লেখ করে তারা ভোট পরবর্তী কারচুপি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

আইন প্রণেতারা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, পাকিস্তানে গণতন্ত্র রক্ষা করা এবং নির্বাচনের ফলাফলে অভিজাত ও সামরিক বাহিনীর পরিবর্তে জনগণের স্বার্থের সত্যিকারের প্রতিফলন নিশ্চিত করা মার্কিন স্বার্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তারা একটি বিস্তৃত তদন্ত এবং গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য ভাবে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ‘শক্তিমান’ সামরিক বাহিনীর সাথে বিরোধের পরে ২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উপরন্তু, তার দলের বেশ কয়েকজন সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল এবং পিটিআইয়ের একটি নির্বাচনী প্রতীক ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, যার অর্থ তাদের সদস্যরা কেবল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন।

সাধারণ নির্বাচনের তিন সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। উভয় পক্ষের শোরগোল বিক্ষোভের মধ্যে ৩০২ জন সংসদ সদস্য প্রথম দিনে শপথ গ্রহণ করেন। পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা যাদের বেশিরভাগই সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে (এসআইসি) যোগ দিয়েছেন, তারা ইমরান খানের মতো ফেসমাস্ক পরেছিলেন এবং তার মুক্তির দাবিতে ব্যানার বহন করেছিলেন।

পিটিআইয়ের এমএনএ’রা ‘ইমরান খানকে মুক্তি দাও’, ‘বন্দী নম্বর ৮০৪’, ‘কে পাকিস্তানকে বাঁচাবে: ইমরান খান, ইমরান খান’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছিল। অন্যদিকে পিএমএল-এন নেতারা হাতঘড়ি পড়ে ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোশাখানা মামলার প্রসঙ্গ তুলেছেন। বৃহস্পতিবার শপথ নেওয়া নাওয়াজ শরিফ ও শাহবাজ শরিফের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন পিটিআই সমর্থকরা।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গাজা ইস্যুতে পদত্যাগ করলেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা
‘অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে বাংলাদেশের সম্পর্ককে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র’
বেআইনি কাণ্ডে এবার অভিনেত্রী তামান্নাকে পুলিশের তলব
সমুদ্রের বেআইনি কার্যকলাপ রুখতে যৌথ উদ্যোগ ভারত ও ওমানের
X
Fresh