• ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

গাজায় সপ্তাহে ৬ হাজার বোমা ফেলছে ইসরায়েল 

আরটিভি নিউজ

  ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:২৮
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাজা গণহত্যা মামলায় শুনানি শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার
ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে টানা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে। হামাস উৎখাতের দোহাই দিয়ে প্রতি সপ্তাহে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে অন্তত ৬ হাজার বোমা ফেলছে দখলদার রাষ্ট্রটির সেনারা। তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না কেউই, এমনকি নবজাতক শিশুও না।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) এসব তথ্য তুলে ধরেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবী আদিলা হাসিম। একই সঙ্গে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যার অভিপ্রায় নিয়ে ইসরায়েল এখনও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দ্য হেগের বিচারকের সামনে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তিনি। খবর মিডল ইস্ট আইয়ের।

দক্ষিণ আফ্রিকার এই আইনজীবী আদালতে বলেন, গণহত্যা কখনই আগে থেকে ঘোষণা করা হয় না, তবে এই আদালতের সামনে গত ১৩ সপ্তাহের যে প্রমাণ আছে, তাতে যুক্তিসঙ্গতভাবে ইসরায়েলের এই আগ্রাসন গণহত্যার অভিপ্রায় বলেই প্রতীয়মান হয়।

তিনি বলেন, গাজায় প্রতি সপ্তাহে ৬ হাজার বোমা ফেলছে ইসরায়েল। তাদের সেনাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি কেউ; এমনকি নবজাতক শিশুও নয়। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা গাজাকে ইতোমধ্যে ‘শিশুদের কবরস্থান’ বলে অভিহিত করেছেন। এই আদালতের আদেশ ছাড়া অন্য কিছুই গাজাবাসীকে এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করতে পারবে না।

প্রসঙ্গত, গত মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ তুলে মামলা করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখানে তারা বলেছিল, ফিলিস্তিনিদের জাতিগতভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে যে কায়দায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল তা গণহত্যার শামিল।

শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক আইনজীবী টেম্বেকা এনকুকাইতোবি বলেন, ইসরায়েলের গণহত্যামূলক বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে প্রিটোরিয়া একা নয়; জাতিসংঘের অন্তত ১৫ জন বিশেষ প্রতিবেদক এবং জাতিসংঘ ওয়ার্কিং গ্রুপের ২১ জন সদস্য সতর্ক করেছেন যে, গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যাকেই প্রতিফলিত করে।

তিনি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী যেভাবে আক্রমণ পরিচালনা করছে তাতে গণহত্যার অভিপ্রায় স্পষ্ট। এমনকি দেশটির রাজনৈতিক নেতা, সামরিক কমান্ডার এবং সরকারি পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিরা পরিকল্পিতভাবে এবং স্পষ্ট ভাষায় তাদের গণহত্যার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছেন। ইসরায়েলের সংসদের মধ্যে ‘গণহত্যামূলক বক্তব্য’ এখন সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে; তাদের অনেক এমপি গাজাকে নিশ্চিহ্ন ও চূর্ণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

দ্য হেগে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই মামলার শুনানির প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির সদস্য নিসিম ভাতুরি বলেন, হেগে উপস্থিত হওয়া তার দেশের জন্য একটি সৌভাগ্যের ব্যাপার। গাজায় কোন নিরপরাধ মানুষ নেই।

উল্লেখ্য, এই প্রথম জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশনের অধীনে বিচারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে ইসরায়েলকে। বৃহস্পতিবারের আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিত্বকারী আরেক আইনজীবী অধ্যাপক ম্যাক্স ডু প্লেসিস বলেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনি জনগণকে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।দুঃখজনক ব্যাপার, গণহত্যার মামলাগুলো প্রমাণ করা খুব কঠিন, সমাধান হতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। তবে দ্রুত ইসরায়েলকে এই হত্যা বন্ধ করার জন্য আদেশ দিতে আদালতে দাবি তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা সাড়ে ২৩ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। ভূ-খণ্ডটির মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা
লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা
ধর্ষণ মামলায় স্থায়ী জামিন পেলেন সেই মুশতাক
২২ বছর পর হত্যা মামলার রায়, ১৯ আসামিকে যাবজ্জীবন
X
Fresh