হজের খুৎবায় এক হবার আহ্বান
পারস্পারিক মতপার্থক্য ভুলে এবার হজের খুৎবায় মুসলিম বিশ্বের নেতাদের এক হবার আহ্বান জানানো হলো। রোববার আরাফাতের ময়দানে দেয়া খুৎবায় বিশ্বের নানা প্রান্তের, বর্ণের লাখো মুসলিমের সমাবেশে এ আহ্বান জানানো হয়।
এবার হজের খুৎবা পাঠ করেন মসজিদুল হারাম’র ইমাম শেখ আবদুল রহমান আল-সুদাইস। বললেন, নিজেদের মধ্যে যে সমস্যাগুলো রয়েছে। তার সমাধান করতে বিশ্বের মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
অসুস্থতার কারণে গ্রান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল শেখ’র অনুপস্থিতিতে খুৎবা দেন আল-সুদাইস। তিনি বলেন, হজের মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ‘রাজনীতির বাইরে’ রাখতে হবে। কোনো বিষয়ে অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশ বা গুজব ছড়ানো যাবে না। আইএসের মতো ধর্মীয় উগ্রবাদীদের বিষয়ে প্রতিটি মুসলিমকে সচেতন থাকতে হবে।
মসজিদুল হারাম’র ইমাম বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের কোনো ধর্ম নেই, কোনো দেশ নেই। তারা যেন তরুণদের বিভ্রান্ত করতে না পারে, সেজন্য মুসলিম বোদ্ধা, ধর্মীয় নেতা, পরিবার প্রধানদের দায়িত্বশীল হতে হবে।
অসুস্থতার কারণে না পড়লেও আরাফাতের ময়দানে চেয়ারে বসে খুৎবা শোনেন গ্রান্ড মুফতি। মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালিদ আল-ফয়সাল তার পাশে ছিলেন।
ময়দানজুড়ে সাদা পোশাকে মুসল্লিদের কণ্ঠে দিনভর ধ্বনিত হয়-‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি'মাতা লাকা ওয়ালমুলক’। এর অর্থ, আমি হাজির। হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই; সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।
আরাফাতের ময়দানে খুৎবা এবং ইবাদতে মশগুল মুসলিমরা সোমবার সকালে মিনায় ফিরে প্রতীকী শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়বেন। এরপর কোরবানি দিয়ে ইহরাম ত্যাগ করবেন এবং সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্যে দিয়ে হাজি হবেন তারা।
সৌদি গণমাধ্যমের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের ১৬৪টি দেশের প্রায় ২০ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবার হজ করছেন। যাদের মধ্যে এক লাখের বেশি বাংলাদেশি।
গেল বছর দুটি দুর্ঘটনার পর মরক্কো থেকে আসা ৫৪ বছর বয়সী নাসের বেনফিত্তাহ এবারের হজ ব্যাবস্থাপনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
গেল বছর মিনায় শয়তানকে পাথর ছুড়তে গিয়ে ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে এক হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে শতাধিক বাংলাদেশি ছিলেন।
মুসলমানদের বিশ্বাস, আদি পিতা আদম ও আদি মাতা হাওয়া পৃথিবীতে পুনর্মিলনের পর এ আরাফাতের ময়দানে এসে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান। ১৪ শ’ বছরেরও বেশি সময় আগে এখানেই ইসলামের শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) বিদায় হজের ভাষণ দেন।
এফএস/
মন্তব্য করুন