করোনায় প্রাণ গেছে প্রায় ২ লাখ স্বাস্থ্যকর্মীর
২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে বিশ্বব্যাপী করোনায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ৮০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এতথ্য জানায়।
সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেইয়েসাস জানান, টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের ১১৯টি দেশের মধ্যে গড়ে ৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে দুজন টিকার পুরোপুরি ডোজ সম্পন্ন করেছেন।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১৩৫ মিলিয়ন কর্মী স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। সূত্র: বিবিসি
আরএ/এসকে
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা / খোঁজ মিলছে না ইরানের প্রেসিডেন্টের
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর খোঁজ মিলছে না ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ তার সঙ্গীদের।
রোববার (১৯ মে) রাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
জানা গেছে, ইব্রাহিম রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নরসহ আরও বেশ কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন।
এদিকে, ঘটনাস্থলে ৪০টি উদ্ধারকারী দল পৌঁছেছে। উদ্ধারকারীরা এখনও প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের অবস্থান শনাক্ত করতে পারেননি। ভারী বৃষ্টিপাত ও কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। রাইসির জন্য ইরানজুড়ে দোয়া করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৬৩ বছর বয়সী ইব্রাহিম রাইসি ২০২১ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ইরানের রাজনীতিতে খুবই প্রভাবশালী এই নেতাকে দেশটির পরবর্তী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে দেখা হয়।
রাইসির বেঁচে থাকা নিয়ে যা জানাল দেশটির কর্মকর্তারা
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে এটি পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের কর্মকর্তারা।
রোববার (১৯ মে) দেশটির আজারবাইজান প্রদেশ সফর শেষে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ইরানের এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও আমির আব্দুল্লাহিয়ানের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে যে খবর পাচ্ছি তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। তবুও তাদের বেঁচে থাকা নিয়ে আমরা আশাবাদী।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনা জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের আবহাওয়া প্রচণ্ড খারাপ হওয়ায় উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধার কর্মীদের। প্রচণ্ড বৃষ্টি এবং ঠান্ডার কারণে উদ্ধার কর্মীরা পৌঁছাতে পারছে না।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সব অনুষ্ঠান বন্ধ করে রাইসির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৬৩ বছর বয়সী ইব্রাহিম রাইসি ২০২১ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ইরানের রাজনীতিতে খুবই প্রভাবশালী এই নেতাকে দেশটির পরবর্তী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে দেখা হয়।
রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, যা বলল ইসরায়েল
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। আজারবাইজান প্রদেশ সফর শেষে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করেছে ইসরায়েল।
সোমবার (২০ মে) এ বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ানসহ রোববার ইরান থেকে আসা হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের খবরগুলো ইসরায়েল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। পশ্চিমাদের মতো ইসরায়েল মনে করছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এ ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছেন। তবে অনানুষ্ঠানিক সূত্র স্পষ্ট করেছে যে, ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে আজারবাইজান সীমান্তের নিকটবর্তী শহর জোলফার কাছে খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার সাথে দেশটি কোনও সংযুক্ত বা জড়িত নয়।
ইসরায়েলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরানের অভ্যন্তরে পরিবর্তন ছাড়া ইসরায়েলের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না, কারণ ইসরায়েলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনিই পরমাণু কর্মসূচি ও ইসরায়েলের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির ফ্লাইট ক্রুদের একজন সদস্যের মোবাইল ফোন থেকে সংকেত সনাক্ত করা গেছে। সোমবার পূর্ব আজারবাইজানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) কমান্ডার আসগর আব্বাস ঘোলি জাদেহ তাসনিমের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
জাদেহ তাসনিম বলেন, ‘আমরা এখন সব সামরিক শক্তি নিয়ে ওই এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছি এবং আমি আশা করি আমরা জনগণকে সুসংবাদ দিতে পারব। ওই এলাকায় এখন আর বেশি সেনা মোতায়েনের সক্ষমতা নেই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইরানি কর্মকর্তা আল জাজিরাকে বলেছেন, হেলিকপ্টার থেকে সংকেত পাওয়ার পর বিশেষায়িত দলগুলো দ্রুত দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।
আমরা প্রেসিডেন্ট এবং তার সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য নিশ্চিত করতে পারছি না এবং তল্লাশি জোরকদমে চলছে।
এদিকে ইরানে পাহাড় উদ্ধারকারী দল পাঠাচ্ছে তুরস্ক। তুরস্কের জরুরি ত্রাণ সংস্থা এএফএডি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির সন্ধানে ইরানকে সহায়তা করতে তুরস্ক ৩২ জন পর্বত উদ্ধার বিশেষজ্ঞ পাঠাচ্ছে।
এএফএডি এক্স-এ এক পোস্টে জানিয়েছে, পূর্ব তুরস্কের কেন্দ্রগুলো থেকে দলটি এবং ৩২টি গাড়ি মোতায়েন করা হয়েছে। ইরান নাইট ভিশনযুক্ত হেলিকপ্টার ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছিল।
এর আগে রোববার (১৯ মে) ইব্রাহিম রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নরসহ আরও বেশ কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন।
রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের সন্ধান পাওয়া গেছে
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের সন্ধান পাওয়া গেছে।
ইরানি সেচ্ছাসেবী সংগঠন রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে সোমবার (২০ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
রেড ক্রিসেন্ট এক বিবৃতিতে জানায়, রেড ক্রিসেন্টের তল্লাশি ও উদ্ধারকারী দল প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানে পৌঁছেছে। তবে, প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সফর সঙ্গীরা বেঁচে আছেন কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।
এর আগে সংস্থাটি জানিয়েছিল, হেলিকপ্টারের সম্ভাব্য দুর্ঘটনাস্থলে ৭৩টি উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকারীরা তুরস্ক ড্রোনের মাধ্যমে চিহ্নিত এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে রাইসির হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় রোববার (১৯ মে) ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নরসহ আরও বেশ কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন।
উল্লেখ্য, ৬৩ বছর বয়সী ইব্রাহিম রাইসি ২০২১ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ইরানের রাজনীতিতে খুবই প্রভাবশালী এই নেতাকে দেশটির পরবর্তী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে দেখা হয়।
যা ঘটেছিল রাইসির হেলিকপ্টারে
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটিতে কী হয়েছিল আর কেনই বা হঠাৎ এমন দুর্ঘটনা ঘটল, সে প্রশ্ন এখন সবার মুখে। প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে বলে জানা গেছে। এতে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই।
সোমবার (২০ মে) বিবিসি ও রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে আলোচনায় এসেছে হেলিকপ্টারটির নির্মাণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রও। ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
রাইসি যে হেলিকপ্টারটিতে যাত্রা করেছিলেন সেটির মডেল সম্পর্কে আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিওগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল বেল ২১২ মডেলের, যা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই হেলিকপ্টারটি মাঝারি আকারের যেখানে ১৫টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে পাইলটের জন্য একটি আসন এবং যাত্রীদের জন্য বাকি ১৪টি।
জানা যায়, রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
দুর্ঘটনার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি উদ্বিগ্ন না হতে ইরানের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রপরিচালনায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।’
কে এই ইব্রাহিম রাইসি?
ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালে উত্তর-পূর্ব ইরানের শহর মাশহাদে। সে হিসেবে বর্তমানে তার বয়স ৬৩ বছর। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত রাইসি তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথোরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।
কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত রাইসি পরবর্তীতে ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ সভার উপচেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এ সভা। তাকে দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির স্বাভাবিক উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০২১ সালে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন করে ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইব্রাহিম রাইসি।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মরদেহ উদ্ধার
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মরদেহ উদ্ধারের পর দেশটির উত্তর-পশ্চিমের তাবরিজে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সোমবার (২০ মে) ইরানি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (আইআরসিএস) প্রধানের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা।
রেড ক্রিসেন্ট প্রধান পিরহোসেন কুলিভান্দ রাষ্ট্রীয় টিভিকে জানান, হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও তার সহযাত্রীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা নিহতদের মরদেহ তাবরিজে স্থানান্তরের কাজ শুরু করেছি।
কোলিভান্দ আরও জানান, গতকাল থেকে উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে থাকলেও বৈরি আবহাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যহত হয়।
সোমবার দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মেলে। এরপর দেশটির বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি কেউই আর বেঁচে নেই।
ইরানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ওই হেলিকপ্টারে রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন।
এর আগে রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি।
বলা হচ্ছে, আজারবাইজানে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাচ্ছিলেন তারা। ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের কেউ ওই ফোন করেছিলেন। দুর্ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের উদ্ধারে অংশ নেয় ৪০টি দল। উদ্ধাকারী দল এসেছে তুরস্ক ও রাশিয়া থেকেও। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ভারি বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। এ ছাড়া এ অঞ্চলটি পাহাড়-পর্বতে ভরপুর হওয়ায় দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাইসির হেলিকপ্টারের খোঁজ পান উদ্ধার কর্মকর্তারা।
এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: যেসব ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে এসেছে
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে গিয়ে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর তিনি আর জীবিত ফিরতে পারেননি। বের হয়েছেন খণ্ড খণ্ড লাশ হয়ে ট্রলি আর পলিথিন ব্যাগে। পুরো কিলিং মিশনে সবার সামনে ছিলেন শিমুল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্লাহ। পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে এবং সময় যতই গড়াচ্ছে হাড়হিম করা ভয়ঙ্কর সব তথ্য সামনে আসছে।
এদিকে আনারকে হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরপরই তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। বলা হচ্ছে, এমপি আনারকে হত্যার পর চামড়া ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করা হয় মরদেহ।
এরপর সেগুলো প্লাস্টিকের প্যাকেটে করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে খুন হওয়ার পর বাংলাদেশের সংসদ সদস্যের মরদেহের চামড়া ছাড়ানো হয় এবং এরপর মরদেহ টুকরো টুকরো করে বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে করে শহর জুড়ে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয় বলে তদন্তে জানা গেছে।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার কলকাতায় আসার দুদিন পর গত ১৪ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) মুম্বাইতে বসবাসকারী বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, জিহাদ হাওলাদার কলকাতার নিউ টাউনের একটি অ্যাপার্টমেন্টে বাংলাদেশের সংসদ সদস্যকে হত্যা ও টুকরো টুকরো করার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
মূলত তাকে গ্রেপ্তারের পরই কীভাবে হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনাটি সুচিন্তিতভাবে পরিকল্পিত ও সম্পাদিত হয়েছিল তার চমকপ্রদ বিবরণ বেরিয়ে এসেছে। জিহাদ হাওলাদার জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন আখতারুজ্জামান নামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিক। আখতারুজ্জামানের নির্দেশেই হাওলাদারসহ আরও চার বাংলাদেশি নাগরিক এমপি আনারকে নিউ টাউন অ্যাপার্টমেন্টে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এর আগে বুধবার (২২ মে) বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আনোয়ারুল আজিম আনারকে খুন করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি নিউ টাউনের ওই অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে রক্তের দাগ খুঁজে পায় এবং বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগও সেখান থেকে উদ্ধার করে। এসব ব্যাগ মরদেহের টুকরো ডাম্প করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল বলে তারা মনে করছেন।
পুলিশ দাবি করেছে, পরিস্থিতিগত প্রমাণে যে ইঙ্গিত মিলেছে তাতে বোঝা যায়, এমপিকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় এবং তারপরে তার মরদেহকে টুকরো টুকরো করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জানিয়েছেন, জিহাদ হাওলাদার নামে ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিক এবং তিনি অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইতে বাস করতেন। তার আদি বাসস্থান বাংলাদেশের খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার অন্তর্গত বারাকপুরে।
এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আখতারুজ্জামান দুমাস আগে জিহাদকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিল।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) জিহাদকে আটক করে একটানা জেরা করা হয়। তারা নিহত আনোয়ারুল আজীমের মরদেহ কলকাতা সংলগ্ন কোন এলাকায় ফেলে দিয়ে থাকতে পারে, সেটা জানার চেষ্টা করা হয়।
নিহত এমপির দেহাংশের খোঁজে সিআইডি বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা পুলিশ এলাকার অন্তর্গত পোলেরহাট থানার কৃষ্ণবাটি সেতুর কাছে বাগজোলা খালে তল্লাশি চালায়। নিউ টাউন এলাকার যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়, সেই আবাসিক কমপ্লেক্সের সামনে দিয়েই এই খালটি বয়ে গেছে। তবে সেখানে কিছু পাওয়া যায়নি বলেই সিআইডি জানিয়েছে।
সিআইডির ওই শীর্ষ কর্মকর্তা সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে খুনের পরে কীভাবে মরদেহ লোপাট করা হয়েছিল, তার ভয়ঙ্কর বর্ণনা দিয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া জিহাদ সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে ওই ফ্ল্যাটে সে এবং আরও চার জন বাংলাদেশি নাগরিক এমপি আনারকে শ্বাসরোধ করে খুন করে।
সিআইডির ওই কর্মকর্তা বলছেন, ‘হত্যা করার পরে মৃতদেহ থেকে চামড়া ছাড়িয়ে শরীরে মাংস আলাদা করে নেয় তারা। শরীরের মাংস এমনভাবে টুকরো করা হয় যাতে তাকে চেনা না যায়। মাংস-খণ্ডগুলো প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটে ভরা হয়। হাড়ও ছোট টুকরো করা হয়।’
সিআইডির ওই শীর্ষ কর্মকর্তা বলছেন, ‘এরপরে ফ্ল্যাট থেকে প্যাকেটগুলো বের করে বিভিন্নভাবে কলকাতার নানা জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়।’
পুলিশ বলছে, তারা নিহত বাংলাদেশের রাজনীতিকের শরীরের বিভিন্ন অংশের অবস্থান সম্পর্কে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে। অবশ্য গ্রেপ্তারকৃত জিহাদ হাওলাদারকে শুক্রবার বারাসাত আদালতে হাজির করা হবে বলে জানা গেছে।