ভিয়েনায় ইরানের পরমাণু চুক্তি বৈঠক কিছুটা ‘ফলপ্রসূ’
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়ন ও এতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে কদিন ধরেই। তিনদিনব্যাপী সেই আলোচনা সব মহলকে বেশ আশাবাদী করে তুলেছে।
এ কদিনের বৈঠকে ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ছয় পরাশক্তি দেশের জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জ্যাকোপা) নামে যে পরমাণু চুক্তিটি হয়েছিল, সেটি বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়েছে। ইরান ও ছয় দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার ভিয়েনায় জ্যাকোপার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে এক বৈঠকে বসেছিলেন ইরান, চীন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য। শনিবার বৈঠক শেষ হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্যতম দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
বৈঠকশেষে ইরানের প্রতিনিধি দেশটির উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাঘশি বলেন, বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল দু’টি। প্রথমটি হলো- যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর যে নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করেছে সেগুলো কবে নাগাদ তোলা হবে এবং দ্বিতীয়টি- জ্যাকোপা ইরান পারমাণবিক কর্মসূচিকে কতদূর পর্যন্ত অনুমোদন দেবে।
তিনি বলেন, একটি বৈঠকে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এখনও কিছু গুরুতর বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের; তবে তারপরও আমি বলব বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত রাশিয়ার প্রতিনিধি মিখাইল উলিয়ানভও জানিয়েছেন, বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা হলেও অগ্রগতি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিভাগের উপপ্রধান এনরিক মোরাও বৈঠক সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়া— বিশ্বের এই ছয় পরাশক্তি রাষ্ট্রের সঙ্গে ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তি বা জ্যাকোপা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ইরান।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী- ইরান ধীরে ধীরে পরমাণু প্রকল্প থেকে সরে আসবে- এর পরিবর্তে দেশটির বিরুদ্ধে যেসব আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে- সেগুলোও পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, ইরান যদি ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প বন্ধ করে, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আবার জ্যাকোপাতে ফিরবে। অন্যদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই জ্যাকোপাতে ফিরতে চায়, সেক্ষেত্রে প্রথমে তাকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিতে হবে। সূত্র : আলজাজিরা
টিএস
মন্তব্য করুন