• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভারতের সেই ট্রেনটির মালিক এখনো ব্রিটেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ০২ মার্চ ২০১৭, ২০:৩৩

শকুন্তলা রেলওয়েজ। আর কিছুদিনের মধ্যেই যেখানে ভারতের ‘হাইপারলুপ সুপার ফাস্ট’ ট্রেন চালানোর কথা হচ্ছে, সেখানে এখনো ন্যারোগেজ লাইনে, ঝমঝম শব্দে, দুলকি চালে চলছে ‘শকুন্তলা’। মজার ব্যাপার হচ্ছে একশো বছরের পুরনো রেল লাইনের স্মৃতিই যে শুধু জড়িয়ে আছে তা নয়, এটাই একমাত্র রেল যা ভারতের মধ্যে থেকেও ভারতের নয়।

মহারাষ্ট্রের মুর্তাজাপুর থেকে যাবতমাল এবং মুর্তাজাপুর থেকে অচলপুর মোট ১৮৯ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে রয়েছে শকুন্তলা রেলওয়েজ। কখনো পূর্ণা নদী, কখনো চন্দ্রভাগা নদীকে পাশ কাটিয়ে গড়ে ২০ কিলোমিটার গতিবেগে ‘ছুটে’ চলে অমরাবতী জেলার ‘লাইফ লাইন’ শকুন্তলা।

কিলিক-নিক্সন অ্যান্ড কোম্পানি ১৯০৩ সালে এই রেলপথ তৈরি করে। ১৯১০ সালে প্রথমে গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলা রেলওয়ে কোম্পানি(জিআইপিআরসি), পরে ১৯১৩ সালে জিআইপিআরসি’র শাখা সেন্ট্রাল প্রভিন্স রেলওয়ে কোম্পানির (সিপিআরসি) হাতে তা হস্তান্তরিত হয়। ভারতের স্বাধীনতার পর ১৯৫১ সালে সব বেসরকারি রেল কোম্পানিই ভারতীয় রেলের আওতায় চলে আসে। ব্যতিক্রম শুধুমাত্র শকুন্তলা রেল। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে আজও এই রেল রয়েছে বেসরকারি মালিকানাতেই। ফলে ভারতের মধ্যে হয়েও ভারতীয় রেলের অন্তর্ভুক্ত নয় এই রেল। আজও এটি সিপিআরসি’র অধীনে। যা আবার ব্রিটিশ কোম্পানি কিলিক-নিক্সনের হাতে।

শকুন্তলা রেল গিয়ে মিশেছে মুম্বাই-নাগপুর-কলকাতা ব্রড গেজ লাইনের সঙ্গে। সেই সময় মুম্বাই বন্দর থেকে ব্রিটেনের ম্যানচেস্টারের কাপড় শিল্পের জন্য পাঠানো হতো প্রচুর পরিমাণ তুলা। অমরাবতী জেলা থেকে তুলো নিয়ে যাবার কাজেই প্রধানত ব্যবহৃত হত এই রেল লাইন। ১৯২১ সালে ম্যানচেস্টারে তৈরি একটি জেডডি স্টিম ইঞ্জিন চলত এই লাইনে। ৭০ বছর পর ১৯৯৪-এর ১৫ এপ্রিল পুরনো ইঞ্জিনের বদলে একটি ডিজেল ইঞ্জিন আনা হয় এই রেলের জন্য।

দিনে মাত্র একবারই যাতায়াত করে এই ট্রেন। কিন্তু তবু এর ওপরেই নির্ভর করে থাকেন অমরাবতী জেলার বেশির ভাগ মানুষ। কারণ মুর্তাজাপুর থেকে যাবতমল বাসে যেতে যেখানে খরচ পড়ে ১৫০ টাকা সেখানে শকুন্তলার খরচ মাত্র ২৫ টাকা। ব্রিটিশ মালিকানায় থাকা শকুন্তলাই তাই ভরসা এখানকার মানুষের।

কিন্তু আর কতদিন? স্থানীয়রা চান ব্রড গেজ লাইন হোক এখানে। সম্প্রতি রেলমন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে শকুন্তলার জন্য। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ভারতীয় রেলের আওতায় আসবে শকুন্তলা রেল। স্থানীয়দের আশাও পূর্ণ হবে।

ওয়াই/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh