• ঢাকা শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
logo

বিদ্যুতের দাম বাড়লে ভোগান্তি বাড়বে

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:১৬

পাইকারি ও গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে চায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ কোম্পানিগুলো। সম্প্রতি এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানিতে এমন প্রস্তাব দিয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান।

এদিকে ২০১০ সালের ১ মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে পাঁচবার এবং খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে সাতবার বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। মাঝে দুই বছর বিরতি দিয়ে আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়লে শিল্প খাতে উৎপাদন খরচ সাত থেকে ১৫ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধিসহ ভোগান্তি বাড়াবে।

দেশের তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এর তথ্য বলছে, গত দুই বছরে এ খাতে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ১৮ শতাংশ। এ সময় প্রধান দুই বাজার ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক পণ্যের দর কমেছে গড়ে প্রায় সাত শতাংশ। আর বিশ্ববাজারে ৮ শতাংশ কমেছে পোশাকের চাহিদা।

এসব কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ১৫ শতাংশ ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে মাত্র সাত শতাংশ।

এ অবস্থায়, নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

শিল্প মালিকদের আশঙ্কা- এমনটা ঘটলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে।

বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা যে অবস্থায় আছি, রীতিমতো যুদ্ধ করে আছি। সেখানে যদি কোনো জায়গায় দাম বাড়ানো হয়, তবে সেটা এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে।

এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদি বলেন, খাতওয়ারি দেখা যাবে ৭ থেকে ১৫ শতাংশ ব্যয় বেড়ে যাবে। সরকারকে অবশ্যই আগামী দুই বছরে এই শিল্প খাতকে বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধি থেকে বাইরে রাখতে হবে।

এদিকে, চালসহ নিত্যপণ্যের চড়া দামে এমনিতেই নাভিশ্বাস ভোক্তাদের। আর এই মুহূর্তে বিদ্যুতের বাড়তি দাম তাদের ফেলবে আরো ভোগান্তিতে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে বরং একে যৌক্তিক পর্যায়ে নেয়া জরুরি। এ খাতে ভর্তুকির পাশাপাশি সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদও দেন তারা।

ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে তা সাধারণ মানুষের জীবনকে করে তুলবে আরো দুর্বিষহ।

ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, যেখানে ডাক্তারের কাছে না গেলেই নয়, সেখানেও মানুষ ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে না। এ অবস্থায় যদি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়, তবে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। সঙ্গে সঙ্গে জিনিসপত্রের দামও বাড়বে।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম মনে করেন, বেশি দামের বিদ্যুৎ উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি কম দামের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো এবং ভাড়া ভিত্তিক, কুইক রেন্টালের ক্যাপাসিটি ব্যয় কমিয়ে আনা গেলে বিদ্যুতের দাম নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং কমবে।

তিনি বলেন, এটা করা গেলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম এক টাকা ৫৬ পয়সা কমানো সম্ভব।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এর গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে তাতে উৎপাদকের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হ্রাস হবে। একইসঙ্গে যারা ভোক্তা পর্যায়ে আছেন, তাদের জন্য এটা নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলবে।

তিনি বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের মধ্যে যদি সমন্বয় আনা না যায়, তবে এ সেক্টরে অবশ্যই তা দুরহ হবে।

সরকারের ভর্তুকি বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদন বাড়ানোর প্রতি জোর দেন তিনি।

এসআর/আরকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • এক্সক্লুসিভ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মেহেরপুরে রসুন ও কাঁচা মরিচের দাম লাগামহীন
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামের প্রভাবে উর্ধ্বমুখী দ্রব্যমূল্য: ভোক্তার ডিজি
বাড়ল স্বর্ণের অলংকারের মজুরি, দামে অস্থিরতার শঙ্কা
হিলিতে বেড়েছে কাঁচা মরিচ-ডিমের দাম
X
Fresh