• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

৪ মাস বেতন না পেয়ে বিপাকে এফডিসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

আরটিভি নিউজ

  ০৭ মার্চ ২০২৪, ১৬:১৪
সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। একসময় লাইট, ক্যামেরায় প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি জায়গা মুখরিত থাকলেও আজ তা শুধুই অতীত। কমে গিয়েছে সিনেমার শুটিং। বেঁচে থেকেও যেন প্রাণহীন প্রিয় এফডিসি ! এর সঙ্গে জড়িত থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিস্থিতও এখন এমন। গেল চার মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না তারা। মানবেতর জীবনযাপন করছেন এফডিসির ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।

এদিকে আর কদিন পরই শুরু হচ্ছে রমজান। সব মিলিয়ে অনিশ্চিতায় মধ্যে পড়তে যাচ্ছেন তারা। উপায় না দেখে বেতন-ভাতার দাবিতে আগামী ১১ মার্চ এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাবের সামনে মানববন্ধন করবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেতন অনিশ্চিত হওয়ার পেছনে মূল কারণ এফডিসির আয় কমে যাওয়া। একসময় প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক ছিল, সরকারের রাজস্বেও জোগান দিতো। বর্তমানে আয় কমার পেছনের কারণগুলো- ৩৫ মিলিমিটারে (সেলুলয়েড) সিনেমা নির্মাণের সময় কাঁচা ফিল্ম বিক্রয় বা ল্যাব প্রিন্ট হতো। ডিজিটাল প্রযুক্তি আসার পর সেটি এখন বন্ধ। এ ছাড়া এফডিসির ভবন নির্মাণে তিনটি ফ্লোর ভেঙে ফেলাতে প্রতিষ্ঠানটি ৭০ ভাগ আয় কমে গেছে। পাশাপাশি দেশে সিনেমা হল কমে যাওয়ায় প্রযোজকদের সিনেমা নির্মাণের আগ্রহও কমেছে।

বর্তমানে ফ্লোর, ক্যামেরা, ডাবিং, এডিটিং, লাইট, কালার গ্রেডিং, বিএফএক্স, শুটিং স্পট ইত্যাদি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে মাসে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় হয় এফডিসির। তার বিপরীতে ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ-পানির বিলসহ আনুষাঙ্গিক খরচ মাসে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। আয় কমাতে এফডিসি এখন চরম সংকটে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিমাদ্রি বড়ুয়া গণমাধ্যমকে জানান, সবশেষ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য এফডিসির কিছু জায়গা অধিগ্রহণ বাবদ সরকার ৬ কোটি টাকা প্রদান করে এফডিআর করে রাখে। ওই এফডিআর থেকে ঋণ নিয়ে গত ৮ মাস যাবৎ এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা হয়। ঋণের পরিমাণ এফডিআর’র কাছাকাছি হওয়ায় এখন ঋণ নেওয়া সুযোগও নেই। ফলে গত চার মাস ধরে বকেয়া পড়েছে বেতন-ভাতা।

এর আগে ২০১৫ সাল থেকে ব্যাংকে থাকা এফডিসির এফডিআর ভাঙিয়ে বেতন ও যাবতীয় খরচ নির্বাহ করা হতো। একসময় এফডিআর শেষ হয়ে যাওয়ায় সরকারি প্রণোদনায় কিছুদিন ব্যয় নির্বাহ করা হয়েছিল।

সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় হতে টাকা সময়মতো পাওয়া যায় না বলেই এফডিসির হাল এখন বেহাল হয়ে পড়েছে। গত চার-পাঁচ বছরের অবসরে যাওয়া এফডিসির প্রায় ৭০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের ছুটি নগদায়ন এবং গ্র্যাচুয়িটি বাবদ পাওনা প্রায় ১৫ কোটি টাকা এখনও বুঝে পায়নি।

এফডিসির সূত্রে জানা যায়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সরকারের রাজস্ব ভুক্ত হলেও জাতির পিতার হাতে গড়া দেশের সবচেয়ে বড় স্বায়ত্তশাসিত এই প্রতিষ্ঠানটি এত বছরেও সরকারের রাজস্বভুক্ত হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জীবনী নিয়ে বায়োপিক ‘মুজিব একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণে এফডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। অথচ এই ফান্ডে টাকা থাকলেও তা খরচ করতে পারছে না তারা। প্রতিষ্ঠানটি রাজস্বভুক্ত না হওয়ায় অবসরের পর পেনশনও পাচ্ছেন না। ফলে দিনের পর দিন অর্ধাহারে, অনাহার কাটছে তাদের জীবন। অর্থের অভাবে চিকিৎসাও ব্যহত হচ্ছে। অর্থকষ্ট আর হতাশায় অবসরকালীন সময়ে এ পর্যন্ত মোট আটজনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে।

এই সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে তারা আশাবাদী, ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হলে এফডিসির এই দৈন্যদশা এক দিন শেষ হবে। তবে এই প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে। এই সময়টুকু পার করতে সরকারের আর্থিক প্রণোদনা প্রয়োজন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শিল্পী-সাংবাদিক দ্বন্দ্ব নিয়ে এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
ফের বাংলাদেশের সিনেমায় পাওলি
জয়ের স্ত্রীর দাবি, সালমান শাহর মতোই তার স্বামীকে টার্গেট করা হলো
নতুন তিনটি চলচ্চিত্রে মিম
X
Fresh