• ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নাটক নয়, তথাকথিত ক্ষমতার রাজনীতিই প্রধান হয়ে উঠেছে : রামেন্দু মজুমদার 

অনলাইন ডেস্ক
  ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৩
রামেন্দু মজুমদার

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিবাদ, শিল্পীদের কাদা ছোড়াছুড়ি, আর্থিক অনিয়ম, সাংগঠনিক স্বেচ্ছাচারিতায় অস্থির হয়ে উঠেছে মঞ্চপাড়া। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে গত শনিবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন অভিনেতা কামাল বায়েজীদকে অব্যাহতি দেয়। একইসঙ্গে একই অভিযোগে সংগঠনের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে রফিক উল্ল্যাহ সেলিমকেও। এমন অস্থির সময়ে অস্বস্তিতে আছেন সাধারণ অভিনয়শিল্পীরা।

বাংলাদেশের তিন শতাধিক নাট্যদলের সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন’ গঠিত হয় ১৯৮০ সালে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন রামেন্দু মজুমদার এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নাট্যকর্মীদের উদ্দেশ্যে রবিবার (২৩ জানুয়ারি) খোলা চিঠি লিখেছেন রামেন্দু মজুমদার। থিয়েটারবিষয়ক পত্রিকা ‘ক্ষ্যাপা’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত চিঠিটি পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো-

প্রিয় স্বজন,
‘বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানকে কেন্দ্র করে বর্তমানে যা ঘটছে, তা জানতে পেরে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। অনেকেই আমাকে টেলিফোন করে এ অবস্থা নিরসনে একটা ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেছেন। সেই প্রেক্ষিতে আমি সংবাদপত্রে প্রকাশ করে জনসমক্ষে আমাদের নিজেদের অনাকাঙ্ক্ষিত চেহারাটা তুলে না ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সহায়তায় আপনাদের কাছে আমার ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করছি।
দীর্ঘদিন ধরেই আমি ফেডারেশানের ব্যাপারে নির্লিপ্ত। থিয়েটার পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে ১৯৮০ সালে আমার আহ্বানে নাট্যকর্মীরা সভায় মিলিত হয়ে ফেডারেশান গঠনে একমত হন এবং আমি প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। তাই সংকটকালে একটা দায়িত্ববোধ অনুভব করছি।
আমরা প্রতিষ্ঠাকালে যে ফেডারেশানের স্বপ্ন দেখেছিলাম, আজকের পরিস্থিতি আমাদের কল্পনারও অতীত ছিল। অনেক কষ্ট করে সব মত ও পথের মানুষকে ফেডারেশানের পতাকাতলে এক করে সংগঠনকে নাট্যকর্মীদের একটি বিশাল শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছিলাম। কোনো সরকারি আর্থিক অনুদান ছাড়া নিজেরা পরিশ্রম করে বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ফেডারেশানের কাজকর্ম চালিয়েছি। আমরা সমবয়সী হলেও একে অন্যের সিদ্ধান্ত মেনে চলেছি, অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করেছি।
এখন দেখছি, নাটক নয় তথাকথিত ক্ষমতার রাজনীতিই প্রধান হয়ে উঠেছে। জাতীয় নির্বাচনের মত ফেডারেশানের নির্বাচনে প্রার্থীরা দেশব্যাপী ঘুরে প্রচার চালান, প্রতিনিধিরা ঢাকায় এলে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন, কেবল ভোটের আশায়। কী এমন মধু আছে ফেডারেশানে, আমি বুঝতে পারি না।
বর্তমানে ফেডারেশানের কর্তাব্যক্তিদের এই বিরোধ জনসমক্ষে নাট্যকর্মীদের ভাবমূর্তিকে চরমভাবে কালিমালিপ্ত করেছে। এর দায় নাট্যকর্মীরা কেন নেবেন? তারা সুন্দর পরিবেশে নাটক করতে চান, নোংরা রাজনীতি চান না।

এমন অবস্থায় আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্যে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সকল কর্মকাণ্ড স্থগিত করা হোক এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে রাখা হোক। গঠনতান্ত্রিক উপায়ে কাজটি করার জন্য ফেডারেশানের একটি জরুরি সাধারণ সভা আহ্বান করে এসব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বর্তমান নির্বাহী ও কেন্দ্রীয় পরিষদ বাতিল করে ৭-৮ জনের একটি অ্যাডহক কমিটি করে দেওয়া যেতে পারে যারা বেশ কিছুদিন পর পরিস্থিতি শীতল হলে ফেডারেশানকে ঢেলে সাজিয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করবেন।

আবারও বলছি, এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মত, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ফেডারেশানের সাধারণ সদস্যদের। আমরা কোনোভাবেই চাই না নাট্যকর্মীদের এমন একটি প্রতিষ্ঠান নষ্ট হয়ে যাক।

আসুন সকলে নিজ নিজ দলের নাট্যকর্মে মনোযোগ দিই। কারণ আমাদের প্রধান কাজ নাটক করা, নাটক নিয়ে রাজনীতি করা নয়। অতিমারিকালে সব সতর্কতা অবলম্বন করবেন। আপনাদের সকলের মঙ্গল কামনা করি।’

টিআই

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মিস ইউনিভার্সের বিশ্বমঞ্চে ওঠার অপেক্ষায় ৬০ বছরের ‘তরুণী’!
সমাজের নানা অসঙ্গতি নিয়ে তানিনের ‘রসের হাঁড়ি বাড়াবাড়ি’
ফের একসঙ্গে মঞ্চে মাতাবেন তাহসান-জন-টনি
তারকাদের গোপনে বিয়ে করানো প্রসঙ্গে যা বললেন তুষার খান
X
Fresh