কাল থেকে টাটকা ইলিশ!
জাটকা সংরক্ষণে গেলো দুই মাস ইলিশ বিচরণের নদীগুলোতে মাছ ধরা বন্ধ। আজ মধ্যরাত থেকে ওই নিষেধাজ্ঞা উঠছে। আর এর সঙ্গে সঙ্গে একদিকে প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে মাছ ধরা জেলেদের, অন্যদিকে ইলিশপ্রিয় বাঙালির। কারণ কাল থেকেই যে পাওয়া যেতে পারে টাটকা ইলিশ।
মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, এবার মাছ আহরণ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। গত বছর যেখানে ইলিশের উৎপাদন ছিল প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন, এবার সেখানে ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়বে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে উপযোগী কর্মসূচি পালন করা হয়। জাটকা ধরা বন্ধের সময়ে জেলেদের সচেতনতা বাড়াতে কর্মসূচি, ভিজিএফ কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বিকল্প কর্মসংস্থান বাড়াতে উপকরণ বিতরণ, মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম করা হয়। যার ফলে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান বলেন, জাটকা সংরক্ষণের কারণে চলতি বছর ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে।
শরীয়তপুরের জেলেরা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে এখন এক ধরনের খুশি বিরাজ করছে। দীর্ঘ দুই মাস পর তারা নদীতে নৌকা ও জাল নামাতে পারছেন।
মাছ এবার বেশি ধরা পড়বে বলেই আশা তাদের।
ইলিশের উৎপাদন বাড়তি থাকায় গেলো বছর অনেক সস্তায় ইলিশ খেতে পেরেছে মানুষ। বিশেষ করে রাজধানীর মানুষেরও ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে টাটকা ইলিশ খাওয়ার সুযোগ হয়।
কিন্তু গেলো দুই মাস ধরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় দাম আবার বাড়তে থাকে। এর মধ্যে বৈশাখী উৎসব তার বেগ বাড়িয়ে দেয়।
পহেলা বৈশাখের আগ মুহূর্তে রাজধানীর বাজারে দেড় থেকে ৩ হাজার টাকা কেজিতেও অপেক্ষাকৃত বড় ইলিশ বিক্রি করতে দেখা যায়।
সম্প্রতি তা আবার একটু কমেছে। গেলো সপ্তাহে আকার ভেদে ইলিশের দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হতে দেখা যায়, যা ছিল ফ্রিজের ইলিশ।
মাছ বিক্রেতারা বলছেন, পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশের দাম বেড়েছিল। ওই সময়ে যে ইলিশ এক হাজার টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে, এখন তা ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
রহমত নামের এক বিক্রেতা জানান, অভিযানের কারণে নদীগুলোতে এখন ইলিশ ধরা প্রায় বন্ধ। সে কারণে ইলিশ বাজারে আসছে না। ফলে আমদানি কম থাকায় দাম বেশি কমেনি। সামনে ইলিশ ধরা শুরু হলে দাম আবার কমবে বলে জানান তিনি।
তবে ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন মাছ ধরা শুরু হলে টাটকা ইলিশ পাওয়া যাবে। তবে তা রাজধানীতে আসতে আরও দুই একদিন সময় লেগে যেতে পারে।
এসআর
মন্তব্য করুন