• ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১
logo

ঈদের আগে পেঁয়াজ-রসুন-আদায় আগুন

আরটিভি নিউজ

  ১৪ জুন ২০২৪, ২২:৫৪
ফাইল ছবি

সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি বাজারে। বিশেষ করে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।

গত দুই-তিন দিনের ব্যবধানে আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ১৩০ টাকা। কাঁচা ও শুকনো; দুই ধরনের মরিচের দামও বেড়েছে অনেক। এতে অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চাহিদা বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের। ঈদে এসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।

ক্রেতারা বলছেন, মাংস রান্নায় প্রচুর পরিমাণে আদা, রসুন ও পেয়াজের ব্যবহার হয়। তাই ঈদকে সামনে রেখে এসব পণ্যের চাহিদাও বেড়েছে। আর এ চাহিদাকে পুঁজি করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। সরকারের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং জোরদার না করায় ব্যবসায়ীদের কোনো সাজা হয় না। এমনিতেই বাজারে সব জিনিসের দাম বাড়তি। তার ওপর আদা, রসুন ও পেঁয়াজের মতো নিত্য পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি, পাইকারি বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে খুচরা বাজারেও দাম বাড়াতে হয়েছে তাদের।

কারওয়ান বাজারের নোয়াখালী স্টোরের স্বত্বাধিকারী সুলাইমান জানান, দুদিনের ব্যবধানে ভারতীয় আদার দাম কেজিতে ৬০ টাকা বেড়ে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা। চায়না আদা ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা। দেশি রসুন ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা বড় রসুনের কেজি ২৪০ টাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে আদার। ২৫০-৬০ টাকার আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ৭০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। ২৪০ টাকার রসুন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ২ সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি আদাতে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। মাসের শুরুতে আদার কেজি ছিল ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। তবে একসঙ্গে কয়েক কেজি আদা কিনলে ২৯৫ টাকা রাখা হয়। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি। মাসের শুরুতে এ পণ্যের দাম ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।

অন্যদিকে এলাকা ভেদে রসুনের দামের ভিন্নতা দেখা গেছে। খিলগাঁও এবং সেগুন বাগিচা কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি রসুন ২৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুগদায় ৩০০ টাকা। আবার গুলশানের কালাচাঁদপুর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি। যদিও মাসের শুরুতে এ পণ্যের দাম ২৫০-২৬০ টাকার মধ্যেই ছিল।

ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম বলেন, কোরবানির সময় বিভিন্ন মসলার পাশাপাশি আদা, রসুন ও পেঁয়াজের বেশি চাহিদা থাকে। যার কারণে মাসের শুরু থেকে এসব পণ্যের দাম আস্তে-আস্তে বাড়তে থাকে। গড় হিসেবে করলে এই ৩টি পণ্যের প্রতি কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা যখন যেই দামে কিনতে পারি, তখন তার থেকে ৫-১০ টাকা লাভে বিক্রি করি। কারণ বাজার থেকে এসব পণ্য কেনার পর একটা অংশ নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রতি কেজিতে ৫ টাকা লাভ না করতে পারলে লোকসানে পড়তে হয়।

এই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী রায়হান বলেন, এখন প্রতি কেজি আদা বিক্রি করছি ৩০০ টাকায়, পেঁয়াজ ৯০ টাকা। এগুলোর দাম মাসের শুরুতে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কম ছিল। আমরা বেশি দামে পণ্য কিনেছি, তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

এক ক্রেতা বলেন, মাসের শুরুতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকায় কিনেছি। এখন সেটা কিনতে হয়েছে ৯০ টাকায়। আর দুই মাস আগে রসুন কিনেছি ১৯০ টাকায়। আর এখন ৩০০ টাকায়। শুধু এ গুলো নয়, হলুদ ও মরিচের গুঁড়োর দাম বেড়েছে। আর জিরা, ধনিয়া ও এলাচ তো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

রহিমা স্টোরের মালিক বলেন, বর্তমানে প্রতি কেজি জিরা ৭০০ টাকা, ধনিয়া ৮০০ টাকা আর এলাচ ৪ হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আরিফুর ইসলাম জানান, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে। আদা ২৬০ থেকে ২৬৫ টাকায়। আর রসুন ২১০ থেকে ২১৫ টাকায়। অর্থাৎ ৫ কেজির বেশি ক্রয় করলে সর্বনিম্ন দামটি পড়ে।

তিনি বলেন, দাম বৃদ্ধি পাওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম চাহিদা বেড়ে যাওয়া ঈদের সময় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে গরু রাজধানীতে আসে। তখন ট্রাকের চাহিদা বাড়তি থাকার কারণে ভাড়াও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া বাজারের চাহিদা বেশি থাকলে কিছু-কিছু বড় ব্যবসায়ী দাম এমনিতেই বাড়িয়ে দেন। যার প্রভাব পড়ে খুচরা বাজারে।

শান্তিনগর সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির ঈদের প্রভাবে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে বেগুন, টমেটোর মতো সবজি এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও টমেটো ৮০ থেকে ৯০ টাকা। তা ছাড়া বাজারটিতে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে। পেঁপে ৪০ থেকে ৪৫, উচ্ছে ৫০, করলা ৬০-৭০, পটোল ৩৫-৪০, ঢেঁড়স ৩৫-৪০, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০, চিচিঙ্গা ৫০, ঝিঙে ৪০-৫০, কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০, কাঁকরোল ৬০ ও কচুমুখী ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শান্তিনগর বাজারের একজন সবজি ব্যবসায়ী বলেন, কোরবানির ঈদের ছুটিতে মানুষ বাড়ি যাওয়া শুরু করেছে। এ কারণে বাজারে তেমন একটা চাপ নেই। ফলে সবজির বাজারে এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে প্রতি ডজন লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০, ধনেপাতার কেজি ৬০ ও শসার কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে মেলায় অশ্লীল নৃত্য, ১০ জনের কারাদণ্ড
শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় আ.লীগ নেতা চন্দন কুমার রিমান্ডে
আদালতে ‘সরি’ বললেন ব্যারিস্টার সুমন
চাঁদপুর নৌ-অঞ্চলে ৫৭ জেলে আটক