এবার নাগপুরের ব্যবসায়ীদের চোখ বাংলাদেশে
![](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/05/14/image-273482-1715684464.jpg)
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়করির নেতৃত্বাধীন নাগপুরের সিন্দি মাল্টিমডেল লজিস্টিক পার্ক আগামী জুনে বাংলাদেশে রপ্তানি বাড়াতে যাচ্ছে। মহারাষ্ট্রের নাগপুর বিভাগের ওয়ার্ধা জেলার সিন্দি তহসিলে অবস্থিত এই বন্দরটি গত ১৪ মার্চ পরীক্ষামূলকভাবে উদ্বোধন করা হয়। বাণিজ্যিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে জুনের মাঝামাঝি সময়ে এই পরিষেবা শুরু হবে। আর তাতে বাংলাদেশে রপ্তানি করা পণ্য কন্টেইনারে করে ট্রেনে এবং নদীপথ হয়ে বাংলাদেশে পৌছাতে সময় লাগবে অন্তত এক সপ্তাহ। যেখানে সমুদ্রপথে আসতে সময় লাগতো ২০ থেকে ২৫ দিন।
ভারতীয় কন্টেইনার অপারেটরগুলো রপ্তানি বাড়াতে এখন বাংলাদেশের দিকে নজর দিচ্ছে। নাগপুর থেকে প্রাথমিকভাবে রপ্তানি করা পণ্যের মধ্যে আছে তুলা, অটোপার্টস, ট্রাক্টর এবং সুতা। এই পার্ক চালু হলে সেখান থেকে ২০ শতাংশ লজিস্টিকস সেবা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে নাগপুরের কন্টেইনার ডিপোগুলো ভারতীয় রেলওয়ে, ডিএলআই এবং আদানি গ্রুপের একটি সহায়ক সংস্থা কনকর দ্বারা পরিচালিত হয়। এর সঙ্গে সিন্দি এমএমএলপির সংযোজন মোট চারটিতে নিয়ে আসবে।
অপারেটরদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমান পরিবহনের জন্য হয় যানজটপূর্ণ সড়ক পথ অথবা আঁকাবাঁকা সমুদ্র যাত্রার কারণে কলম্বো কিংবা সিঙ্গাপুর হয়ে ঘুরে যেতে হয়, যা মালবাহী খরচ এবং সরবরাহের সময়কাল উভয়ই বাড়িয়ে তোলে। নাগপুর থেকে কন্টেইনারবাহী ট্রেনটি হলদিয়া যাবে এবং সেখান থেকে নদীপথে বাংলাদেশে পৌঁছাবে। এর ফলে সড়ক বা সমুদ্রপথে ২০-২৫ দিনের তুলনায় এক সপ্তাহের কিছু বেশি সময় নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতের জাতীয় নৌপথের (এনডব্লিউ) মধ্যে সবচেয়ে বড় পথটি হলো গঙ্গা-ভাগীরথী ও হুগলি নদী হয়ে এলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত। প্রায় ১ হাজার ৬২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ পথকে ১৯৮৬ সালে জাতীয় নৌপথ-১ হিসেবে ঘোষণা করে ভারত সরকার, যেটি উত্তর প্রদেশকে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এরপর একে একে আরো পাঁচটি জাতীয় নৌপথ ঘোষণা করা হয়। এর চারটিই বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। তিনটি দিয়ে এরই মধ্যে দুই দেশের পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করছে। ২০২৩ সালে ৫৮ বছর পর চালু হয়েছে রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ ও মুর্শিদাবাদের ময়া নৌবন্দর।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগ পর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-ময়া ও গোদাগাড়ী-ভারতের লালগোলা নৌঘাটের মধ্যে নৌপথে বাণিজ্য চালু ছিল। পরে রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ও ভারতের নৌ-প্রটোকলের আওতায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর সুলতানগঞ্জ ঘাটটি নদীবন্দরের মর্যাদা পেয়েছে।
ইনল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ অথরিটি অব ইন্ডিয়ার ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতের ছয়টি জাতীয় নৌপথ হলো—গঙ্গা নদী দিয়ে এলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত (১ হাজার ৬২০ কিলোমিটার), যেটিকে বলা হচ্ছে এনডব্লিউ-১। ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে সাদিয়া থেকে ধুবরি পর্যন্ত ৮৯১ কিলোমিটার পথটি এনডব্লিউ-২। কেরালা ব্যাকওয়াটারে ২০৫ কিলোমিটার এনডব্লিউ-৩ কোট্টাপুরম থেকে গিয়েছে কোল্লাম পর্যন্ত। এনডব্লিউ-৪ বা গোদাবারি নদী ও কৃষ্ণা খাল দিয়ে ওয়াজিরাবাদ পর্যন্ত যাওয়া পথটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৯৫ কিলোমিটার। পূর্ব উপকূলসহ ব্রাহ্মণী নদী ও মহানদী ব-দ্বীপ প্রণালি হয়ে ব্রাহ্মণী নদী থেকে মহানদী পর্যন্ত ৬২৩ কিলোমিটার পথটিকে বলা হয় এনডব্লিউ-৫। বরাক নদী-লখিপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এনডব্লিউ-৬ পথটি ১২১ কিলোমিটার।
এনডব্লিউ-১, এনডব্লিউ-২, এনডব্লিউ-৫ ও এনডব্লিউ-৬ নৌপথে পড়েছে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি নদী ও সমুদ্র জলসীমা। এর মধ্যে এনডব্লিউ-১ কলকাতা-হলদিয়া-মোংলা হয়ে আশুগঞ্জ-শেরপুর দিয়ে করিমগঞ্জ, এনডব্লিউ-২ কলকাতা থেকে খুলনা-মোংলা হয়ে চিলমারী নদী দিয়ে ধুবরি-পান্ডু-শিলঘাট, এনডব্লিউ-৫ কলকাতা থেকে মেঘনা ও কুশিয়ারা নদী দিয়ে আসাম এবং এনডব্লিউ-৬ কলকাতা থেকে মেঘনা হয়ে আসাম গিয়েছে। এ চারটির তিনটি নৌপথেই ট্রানজিট ও ফ্রেন্ডশিপ চুক্তিতে দুই দেশের পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করছে।
বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানিতে ভারতের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে নদীপথ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাওয়া চারটি নৌপথ পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারলে উত্তর প্রদেশ, বিহার, কলকাতা, উড়িষ্যা, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর ও মিজোরামে সরাসরি পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চালাতে পারবে ভারত। এতে নতুন মোড় নেবে ভারতীয় বাণিজ্যে। পাশাপাশি বাংলাদেশও লাভবান হবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের নৌপথে ভারতের নির্ভরশীলতা বাড়ার বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচক। এতে শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশও লাভবান হবে। দুই দেশেই বাণিজ্যের নতুন দুয়ার খুলে যাবে। তবে নৌ ট্রানজিট ব্যবহারে নৌপথ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভারতকেও অংশ নিতে হবে। তাহলেই ভারতের নির্ভরশীলতা থেকে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারবে।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৮ জুন)
![বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৮ জুন)](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/28/image-280212-1719526851.jpg)
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৯ জুন)
![বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৯ জুন)](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/29/image-280343-1719598723.jpg)
১ জুলাই ব্যাংক হলিডে, সব ধরনের লেনদেন বন্ধ
![১ জুলাই ব্যাংক হলিডে, সব ধরনের লেনদেন বন্ধ](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/30/image-280555-1719745020.jpg)
স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ
![স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/30/image-280595-1719758040.jpg)
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (১ জুলাই)
![বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (১ জুলাই)](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/01/image-280630-1719784508.jpg)
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২ জুলাই)
![বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২ জুলাই)](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/02/image-280782-1719863327.jpg)
এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ আজ
![এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ আজ](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/02/image-280793-1719890172.jpg)