• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রমজানের আগেই বাড়ছে খেজুরের দাম

রায়হান শোভন, আরটিভি নিউজ

  ২০ মার্চ ২০২১, ২০:০৮
ছবি- আরটিভি নিউজ।

দরজায় কড়া নাড়ছে রমজান। আর মাত্র ক'দিন পরেই শুরু হবে রোজাকেন্দ্রিক নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনাকাটার ধুম। আর এরই মধ্যে মধ্যস্বত্বভোগী কারসাজিতে অস্থির হয়ে উঠেছে রমজানের অন্যতম ফল খেজুরের দাম। প্রতি কেজি সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন দামে। যার ফলে অস্বস্তিতে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা।

শনিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গেলো বছরের টিসিবির মূল্য তালিকা অনুযায়ী প্রতি কেজি সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। এ বছরও টিসিবির আজকের বাজার দর অনুযায়ী একই দাম পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে টিসিবির মূল্য তালিকা অনুযায়ী সরেজমিনে বাজারে খেজুরের দামের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বাজারে প্রতি কেজি সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৫০০ টাকায়। তবে মানভেদে এ দামের তারতম্যও দেখা গেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও বায়তুল মোকাররম ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পাকা মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৫০০-১০০০ টাকায়। খেজুরের মধ্যে অন্যতম সুস্বাদু ও সর্বাধিক বিক্রিত খেজুর হচ্ছে আজওয়া খেজুর যা মানভেদে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়, ম্যার্জুয়েল মরিয়ম বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়, আম্বার ৬০০-৬৫০ টাকায়, সুক্কারি খেজুর ৫৫০-৬০০ টাকায়, সুগাই ৫০০-৫০০ টাকায়, সুফরি ৪৫০-৫০০ টাকায়, তিউনিসিয়ান খেজুর-৩০০-৪০০ টাকায়, কালকি খেজুর ৫০০-৫৫০ টাকায়, দুবাইয়ের দাবাস ৩০০-৩৫০ টাকায়, মুনতাজ ৩০০-৩৫০ টাকায়, বড়ই খেজুর ২২০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে শুধুমাত্র জিহাদি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা।

তবে খুচরা ও পাইকারি খেজুর ব্যবসায়ীদের দাবি বর্তমানে বাজারে ন্যায্যমূল্যে খেজুর বিক্রি হচ্ছে। তারা বলছেন সামনে রমজান মাস মানুষ খেজুর কেনাকাটা শুরু করলে কিছুটা দাম বাড়তে পারে।

কারওয়ান বাজারে ভাসমান খেজুর বিক্রেতা টুটুল আরটিভি নিউজকে বলেন, আমরা খুচরা খেজুর বিক্রি করি। আমরা যে দামে খেজুর কিনি তার থেকে একটু লাভতো বিক্রি করবোই। বর্তমানে খেজুরের দাম কমই আছে। আগের বছরের তুলনায় কম দামে বিক্রি হচ্ছে খেজুর বলেও জানান তিনি। তবে সামনে রমজানের জন্য মানুষ খেজুর কেনা শুরু করলে স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়বে বলে জানান এই বিক্রেতা।

কারওয়ান বাজারের ফল বিতান ট্রেডার্সের খুচরা খেজুর বিক্রেতা বাবুল ব্যাপারী বলেন, বর্তমান বাজারে খেজুরের দাম স্থিতিশীল আছে। আপাতত সপ্তাহখানেক খেজুরের দাম একই থাকবে। তবে শবে বরাতের পর খেজুরের দাম কিছুটা বাড়বে বলেও জানা তিনি।

খেজুরের দাম শবে বরাতের পর বাড়বে কেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় খেজুরের সরবরাহ কম। তাই বাজারে দামে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। তাছাড়া শবে বরাতের পর সবাই যখন কেনাকাটা শুরু করবেন তখন বাজারে খেজুরের কিছুটা ঘাটতি পড়বে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ খেজুরের সরবারাহ রয়েছে। কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার জন্য খেজুর মজুদ রাখছে। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।

বিক্রেতারা খেজুরের দাম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ক্রেতাদের মধ্যে। হাতিরপুল থেকে কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা নাজমা বেগম আরটিভি নিউজকে বলেন, কাঁচা তরকারি কিনতে এসেছিলাম। সামনে রমজান তাই ফলের বাজারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় খেজুরের দাম দেখে গেলাম।

দরদাম কেমন দেখলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ আর নতুন কী দাম বেড়েছে। রোজা আসলে বিশ্বের সব দেশের রমজানকেন্দ্রিক পণ্যের দাম কমে আর আমাদের দেশে তার উল্টো। আগের বছর যে খেজুর ২০০ টাকায় কিনেছি সেটা এখন ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মৌচাক থেকে কারওয়ান বাজারে কাঁচাবাজার করতে আসা আনিসুল ইসলাম কাঁচাবাজার শেষ করে কারওয়ান বাজারে ভাসমান ফলের দোকান থেকে খেজুর কিনছিলেন। সামনে গিয়ে কী খেজুর কিনেছেন আর দাম কেমন জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, আর মাত্র কিছুদিন পর রোজা। তাই আগেই খেজুর কিনে নিলাম। গেলো বছরের তুলনায় বর্তমানে খেজুরের দাম অনেকটাই বেশি। তবে খেজুরের মানও তেমন একটা ভালো না। ভালো মানের খেজুরের দাম আকাশচুম্বী।

তিনি বলেন, আমি হাফ কেজি মরিয়ম খেজুর কিনেছি ৩০০ টাকায়। আর কিছুদিন পর এই একই খেজুর কিনতে হবে ৮০০ টাকায়। তাই আগেই কিনে নিলাম।

জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল আরটিভি নিউজকে বলেন, রমজানকেন্দ্রিক বাজারে বিভিন্ন পণ্য পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। বাজারের প্রচুর পরিমাণে খেজুর রয়েছে। তবে বাজারে যাতে করে কৃত্রিম সংকট তৈরি না হয় সে ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি। আমরা এখন নিয়মিত রোজাকেন্দ্রিক বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব ঠেকাতে অভিযান পরিচালনা করছি। ঢাকাসহ সারা দেশে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

আরএস/এম

মন্তব্য করুন

daraz
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যে কারণে আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দেন
রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে দীর্ঘস্থায়ী খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা: এফএসআইএন
মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠাল বিজিবি
শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে নতুন নিয়ম চালু
X
Fresh