পরীক্ষামূলকভাবে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে গেলো ভারতীয় পণ্য
বাংলাদেশের বন্দর দিয়ে নিজেদের দেশে পণ্য পরিবহন শুরু করেছে ভারত। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পরীক্ষামূলক আগরতলায় পৌঁছেছে রড ও ডাল বোঝাই চারটি কন্টেইনার। এজন্য নির্ধারিত মাশুল ও ফি পরিশোধ করেছে ভারত।
আগরতলা স্থলবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে কন্টেইনার বোঝাই চারটি ট্রেইলার গ্রহণ করেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ডালগুলো যাবে আসাম রাজ্যের গৌহাটির ই.টি.সি. অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডিয়া লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। আর রড যাবে আগরতলা শহরের এম.এস. করপোরেশন লিমিটেডের কাছে।
পরীক্ষামূলক এই ট্রানজিট পণ্য চালানের জন্য আগেই ফি নির্ধারণ করে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এর মধ্যে প্রতি চালানের জন্য ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি প্রতি ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্ট ফি প্রতি মেট্রিক টনে ২০ টাকা, সিকিউরিটি চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ১০০ টাকা, অ্যাসকর্ট চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ৫০ টাকা, বিবিধ প্রশাসনিক চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ১০০ টাকা, কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি প্রতি কন্টেইনার ২৫৪ টাকা। এছাড়া ইলেকট্রিক লক অ্যান্ড সিল ফি হিসেবে বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণ দিতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে সম্পাদিত ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভম্যান্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া’ চুক্তির আওতায় এবং ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর উভয় দেশের মধ্যে সাক্ষরিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহন শুরু করেছে ভারত।
পরীক্ষামূলক প্রথম চালান হিসেবে চারটি কন্টেইনারে করে ৫৩.২৫ মেট্রিক টন রড ও ৪৯.৮৩ মেট্রিক টন ডাল নিয়ে গত ১৪ জুলাই চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় 'সেজুতি' নামের একটি জাহাজ। এ জাহাজটি গত মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে নোঙর করে।
বাংলাদেশের ‘ম্যাংগো লাইন লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারত থেকে পণ্যগুলো পাঠিয়েছে ‘ডার্সেল লজিস্টিক লিমিটেড’ নামে অপর একটি প্রতিষ্ঠান। আর এসব পণ্য পরিবহনের দায়িত্বে ছিলো কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলক প্রথম চালানের পণ্য আগরতলায় পৌঁছেছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বন্দরে পণ্যগুলো গ্রহণ করেছেন।’
ম্যাংগো লাইন লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সোহেল খান বলেন, ‘পণ্যগুলো আগরতলায় পৌঁছাতে পেরে আমরাও আনন্দিত। এর মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও উন্নতি হবে বলে মনে করি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. হারুনুর রশীদ জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের চুক্তির আওতায় প্রথম চারটি কন্টেইনার আগরতলায় গেছে। এর জন্য মাশুল এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে প্রসেসিং হয়েছে।
ট্রানজিট চালানের মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন আগরতলা কাস্টমসের সুপারিন্টেনডেন্ট জয়দীপ মুখার্জি।
এজে
মন্তব্য করুন