হাত-পা বেঁধে দুই শিশুকে নির্যাতন, ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে দুই কিশোরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার মামলার অভিযুক্ত প্রধান আসামি ইউপি সদস্য জহিরুলসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব এবং ডিবি পুলিশ।
আজ রোববার ভোরে পীরগঞ্জের পার্শ্ববর্তী রানীশংকৈল উপজেলার গাজীরহাট এলাকা থেকে ইউপি সদস্য জহিরুলকে র্যাব-১৩ গ্রেপ্তার করে। এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও ডিবি পুলিশ জিয়াবুল নামে অপর এক আসামিকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন।
এদিকে নির্যাতিতদের বাড়িতে গিয়ে তাদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।
র্যাব-১৩ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লা আল মামুন ও স্কোয়ার্ড কমান্ডার এএসপি সামুয়েল সাংমার নেতৃত্বে র্যাবের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করেন। গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য জহিরুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
র্যাব ও ডিবি পুলিশ মামলার প্রধান আসামি ইউপি সদস্য জহিরুল ও ৬ নম্বর আসামি জিয়াবুলকে গ্রেপ্তার করলেও এজাহার নামীয় অপরাপর ৫ আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে নির্যাতনের শিকার ওই দুই পরিবারে।
কিশোর সুমনের বাবা ফোরাসতুল্লাহর অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মেম্বারকে ধরলেও ঘটনার নায়ক মোতালেবকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তার লোকজন তাদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। র্যাব এবং ডিবি পুলিশ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে তৎপরতা দেখালেও থানা পুলিশ অজ্ঞাত কারণে নীরব রয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, আসামিরা পলাতক ছিলেন। সেজন্য গ্রেপ্তার করা যায়নি।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার দেওধা গ্রামের এক গৃহবধূর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়তে ব্যর্থ হয় একই এলাকার মোতালেব আলী নামে এক ব্যক্তি। পরে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে হাত করে ওই গৃহবধূর কিশোর সন্তান সুমন ও কিশোর ভাতিজা কমিরুলের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরি অভিযোগ তুলে গত ২২ মে সালিশ বৈঠক বসায়।
বৈঠকে সেনগাও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে দুই কিশোরকে কুঁজো করে রশি দিয়ে হাত-পা বেধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয় এবং টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে মারপিট করে তার বাড়ি থেকে একটি গরু নিয়ে যায়।
অনেক দেন দরবারের পর এ ঘটনায় ৫ জুন জহিরুল, মোতালেব, আনিসুর রহমান, সাইদুর রহমান, মনসুর আলী, আব্দুল লতিফ ও জিয়াবুলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। কিন্তু আসামি গ্রেপ্তার করতে অনীহা দেখায় পুলিশ। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও আরটিভি অনলাইনসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও গণমাধ্যমে এ নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে টনক নড়ে প্রশাসনের।
এজে
মন্তব্য করুন