কক্সবাজারে লকডাউনের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেশের প্রথম রেড জোন ঘোষণা করে কক্সবাজার পৌর এলাকায় দ্বিতীয়বারের লকডাউন করার কার্যক্রম চলছে। তবে ফার্মেসি ও করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রমে নিয়োজিত যানবাহন ছাড়া যেকোনো ধরনের পরিবহন, মার্কেট, দোকান ও বিপণী বিতান বন্ধ রাখার জন্য প্রশাসনের নির্দেশনা থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
সীমিত আকারে যানবাহন ও যত্রতত্র মানুষের চলাচল লক্ষণীয় ছিল। এছাড়া রেড জোনের আওতায় এ অবরুদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়নে এখনো পুরোদমে মাঠে তৎপর হতে দেখা মিলেনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।
গতকাল শুক্রবার (৫ জুন) মধ্যরাত থেকে পুরো কক্সবাজার পৌর এলাকায় শুরু হয়েছে এ লকডাউন। লকডাউনের এ ঘোষণা আগামী ২০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।
এর প্রেক্ষিতে শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজার পৌর এলাকায় ওষুধের দোকান ছাড়া কাঁচাবাজার, মার্কেট, দোকান ও বিপণী বিতানসহ সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সীমিত রয়েছে যানবাহন চলাচলও। তবে, চলাচল কমেছে মানুষের।
এর আগে গত ২৫ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউন ছিল কক্সবাজারে। এরপর ৩১ মে থেকে লকডাউন উঠে গেলে সবধরনের যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দোকানপাট, মার্কেট ও সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় জনসমাগম বেড়ে যায়।
এর মধ্যে কক্সবাজার পৌর এলাকাসহ কক্সবাজার সদর উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এর প্রেক্ষিতে নতুন করে ১৪ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
কক্সবাজার পৌর এলাকায় দ্বিতীয় দফায় লকডাউন শুরুর প্রথমদিন শনিবার সকাল থেকে প্রশাসনের বিধি নিষেধ না মেনে শুরু হয়েছে প্রধান সড়কসহ শহরের অলিগলিতে বিভিন্ন ধরনের গণ-পরিবহন ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল।
অধিকাংশ দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও অল্প কিছুসংখ্যক খোলা রাখতে দেখা যায়। রাস্তাঘাটে বসেছে কিছু সংখ্যক হকার। বন্ধ রয়েছে ব্যাংকসহ নানা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। শহরে প্রধান সড়কের পাশাপাশি উপ-সড়কসহ অলিগলিতেও দেখা গেছে মানুষকে চলাচল করতে।
তবে শহরের কয়েকটি স্থানে প্রশাসনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ এবং পুলিশের কিছুসংখ্যক সদস্যকে তৎপর দেখা গেছে। এরপরেও পুরোপুরি লকডাউনের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, করোনা আক্রান্তের দিক থেকে কক্সবাজার জেলা দেশে ৬ নম্বরে রয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় ৯৬৯ জন আক্রান্তের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় রয়েছে ৩৮৬ জন। যাদের অধিকাংশই কক্সবাজার পৌর এলাকার বাসিন্দা।
এছাড়া জেলায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ জন রোহিঙ্গাসহ ২১ জনের। এদের মধ্যে ১৪ জনই হচ্ছে কক্সবাজার পৌর এলাকার বাসিন্দা।
তিনি আরও বলেন, লকডাউনের নির্দেশনা মানা এবং লোকজনকে সচেতন করতে প্রশাসন নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। যারা নির্দেশনা অমান্য করবে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া নেবে।
উল্লেখ্য, গত ৬৪ দিনে মোট ৭৬৯৯ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে। এর মধ্যে ১০৬৬ জনের রিপোর্ট করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। এতে কক্সবাজার জেলার রয়েছে ৯৬৯ জন। জেলায় আক্রান্তদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় রয়েছে ৩৮৬ জন শনাক্ত হয়েছে।
এজে
মন্তব্য করুন