মৌলভীবাজারে ভ্রাম্যমাণ খাদ্যের দোকান ‘শপ-২০’
করোনার প্রাদুর্ভাবে সারাদেশ স্থবির হয়ে পড়েছে। দেশের কোথাও কোথাও আবার লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাইরে যেতে পারছেন না।
তবে, এসব মানুষদের চিন্তা লাঘবে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ দোকান- ‘শপ-২০’ চালু করা হয়েছে। এখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
হটলাইন নম্বরে (০১৭০০৭১৭১৩৮) ফোন করলেই বাড়ির চৌহদ্দির নিকট চলে যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ এই দোকান। সেখান থেকেই সামাজিক দূরত্ব রেখে মানুষ কিনতে পারছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী অত্যন্ত সুলভে বিক্রি করছেন তারা।
চাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল, ডাল, প্রত্যেকটি পণ্যের বাজারমূল্য যা হোক না কেন, এখান থেকে প্রতিটি পণ্য প্রতি কেজি ক্রয় করা যায় শুধুমাত্র ২০ টাকা ব্যয়ে। এছাড়া, বয়স্ক ও শিশু খাদ্যের জন্য স্থানীয় খামার থেকে কেনা গরুর দুধ বিক্রির কথাও ভাবছেন উদ্যোক্তারা।
এ কর্মসূচির সমন্বয়কারী তাইজুল ইসলাম জাভেদ জানালেন, গত দু’দিনে উপজেলা শহর দূরবর্তী নোয়াগাঁও, কুঞ্জবন, কুমিল্লাপাড়া, বুদ্ধপাড়া, লামুয়া, ভৈরবগঞ্জ, মতিগঞ্জ, সরকার, ভূনবীরসহ বেশ কিছু জায়গায় ফোন কলের ভিত্তিতে ৪১০টি পরিবারের নিকট পণ্য বিক্রয় করা হয়েছে। ঘরে বসে স্বল্পমূল্যে বাজার করতে পেরে খুব খুশি এলাকার মানুষ।
জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার সকল সরকারি কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন বা ইচ্ছাধীন অতিরিক্ত অনুদান এবং লেডিস ক্লাবের অনুদানে এ ‘শপ - ২০’ কার্যক্রমের ফান্ডটি গঠিত হয়। স্থানীয় করোনা প্রতিরোধ কমিটির পরিচালনায় এ কার্যক্রম দু’দিনেই ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।
তবে, অনুদানের বাজেট ও বিক্রয়লব্ধ বিনিয়োগকৃত অর্থ ফুরিয়ে গেলে তা কিভাবে চালানো হবে এ নিয়ে রয়েছে উৎকণ্ঠা।
এ ব্যাপারে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী নীহারেন্দু হোম চৌধুরী বলেন, ‘এ উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দেশের জনগণের এ অবস্থায় এটি খুবই কার্যকরী উদ্যোগ। জনহিতকর এ উদ্যোগটি যাতে মাঝপথে থেমে না যায় সে ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের এখন থেকেই করণীয় সম্পর্কে ভাবতে হবে। এটি চালানো গেলে এলাকার জনগণের দুর্দশা লাঘব হবে। এক্ষেত্রে বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসতে হবে।’
ভ্রাম্যমাণ বিপণী ‘শপ - ২০’র উদ্যোগ গ্রহণকারী শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, এই উদ্যোগটি সামাজিক দূরত্ব রক্ষা ও মানুষকে ঘরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আমি মনে করি। একইসঙ্গে নিম্ন ও মধ্য আয়ের পরিবারগুলোকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে। এটা চালু রাখা দরকার। এজন্য আমরা একটা ফান্ড গঠন করতে যাচ্ছি। অনেকেই উৎসাহী হচ্ছেন এটিতে অনুদান দিতে। স্বেচ্ছায় প্রাপ্ত অনুদানের ভিত্তিতে আমরা এটি চালু রাখতে চাই। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
এজে
মন্তব্য করুন