• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কুড়িগ্রামে ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি

কুড়িগ্রাম (উত্তর) প্রতিনিধি

  ১৪ জুলাই ২০১৯, ১৩:০১
কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা ও দুধকুমার, গঙ্গাধর নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এ চারটি নদীর অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বন্যার পাশাপাশি নদী ভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে ৭২৫টি পরিবার। এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, কাঁচা-পাকা রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্টের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল বিভাগকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে ছুটি। খোলা হয়েছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোলরুম।

বন্যাকবলিতরা তিনদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে তাদের। এদিকে তলিয়ে গেছে সবজিসহ আমন বীজতলা। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষ। এসব চরাঞ্চলের বেশিরভাগ বাড়িতে উঠেছে পানি। ফলে রান্নাবান্না নিয়ে বিপদে পড়েছেন তারা। যোগাযোগের মাধ্যম হয়েছে নৌকা ও কলার ভেলা। নিম্নাঞ্চল ছেড়ে পানি এখন উঁচু এলাকার দিকে ধাবিত হচ্ছে।

রোববার সকালে ধরলা নদীর পানি ২৭ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২৪ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৬ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও বেড়েছে তিস্তা, দুধকুমার, গঙ্গাধরসহ সংকোষ নদীর পানি।

প্লাবিত হয়েছে জেলার নয়টি উপজেলার সবকটি চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল। নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা, বামনডাঙ্গা, কেদার, বল্লভের খাস, কালিগঞ্জ, নুনখাওয়া নারায়ণপুরসহ বেরুবাড়ি ইউনিয়ন। ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি, বঙ্গসোনাহাট, বলদিয়া ও আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের চরাঞ্চল। এছাড়া কুড়িগ্রামে সদর উপজেলাসহ চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর উপজেলার সব চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলার চরযাত্রাপুরের গরুহারা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে হুমকির মুখে সদরের হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব, উলিপুর উপজেলা বজরা ইউনিয়নের চাঁদনির চর বজরায় এবং রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের গাবুর হেলান গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।

এছাড়াও নদ-নদী অববাহিকার সবকটি চরের আমন বীজতলা, পাট, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। নিচু এলাকার ঘর-বাড়ি ডুবে যাওয়ায় গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। এদিকে পানি বাড়ার সাথে সাথে নদ-নদীর ভাঙন তীব্র রূপ ধারণ করেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা বন্যা কন্ট্রোলরুম সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯ উপজেলার ২৮ হাজার ১৮২টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে ৭২৫টি পরিবার। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোয় ৫০ মেট্রিকটন চাল, নগদ দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সাড়ে ৪০০ টন চাল ও ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরিভিত্তিতে আরো এক হাজার মেট্রিকটন জি আর চাল, ২০ লাখ টাকা এবং ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানান, বন্যা মোকাবেলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ৫০ মেট্রিকটন চাল, ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট উপজেলা পর্যায়ে বণ্টন করা হয়েছে। মজুদ আছে ১৫০ মেট্রিকটন চাল ও ৩ লাখ টাকা।

পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন
কুড়িগ্রামে পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী-শিশুসহ আহত ১০
চিলমারীতে সাপের কামড়ে এক কৃষকের মৃত্যু
কুড়িগ্রামে তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ
X
Fresh