• ঢাকা রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নুসরাত হত্যাকাণ্ড

‘প্রশাসন ও ম্যানেজিং কমিটি আগে ব্যবস্থা নিলে এমন হতো না’

ফেনী প্রতিনিধি

  ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ২০:২১

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত হত্যার ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি তদন্ত কমিটির প্রধান পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি মো. রুহুল আমিন বলেছেন, ২৭ তারিখের যৌন হয়রানির ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন, ম্যানেজিং কমিটি ব্যবস্থা নিলে নুসরাতের গায়ে আগুনের ঘটনা এড়ানো যেতো। প্রাথমিকভাবে নুসরাতের ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসির ত্রুটি- বিচ্যুতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওসিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার গাফিলতির বিষয়ে তদন্ত চলছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই দিনব্যাপী ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন তিনি। এসময় তার নেতৃত্বে একজন পুলিশ সুপার, দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও একজন পরিদর্শক এ তদন্তে উপস্থিত ছিলেন।

মাদরাসার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বুধবার ও বৃহস্পতিবার তারা মাদরাসার শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন এবং ঘটনা সম্পর্কে তাদের মতামত গ্রহণ করেন। গতকাল বুধবার তারা নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

বৃহস্পতিবারও কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য, নুসরাতের পরিবার, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মচারীদের মতামত গ্রহণ করেন।

ডিআইজি মো. রুহুল আমিন বলেন, তদন্ত কার্যক্রম শেষ হতে আরও তিন-চার দিন সময় লাগতে পারে। নথিপত্র যাচাই-বাচাই চলছে। সাধারণ একটি মামলা তদন্ত করতে এক মাস সময় লাগে। এটি একটি বড় ঘটনা, তাই কিছুটা সময় লাগবে। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনেক খারাপ হিস্ট্রি রয়েছে। যা গভর্নিং বডির সদস্যরাও জানতো। যদি তার ব্যাপারে আগে ব্যবস্থা নেয়া হতো তাহলে আজকে এ ধরণের ঘটনা ঘটতো না।

তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় রাজনীতির বিষয়ও জড়িত রয়েছে। একই দলের দুইজন কাউন্সিলর অধ্যক্ষের পক্ষে বিপক্ষে মানববন্ধন করেছে। প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে। সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে পুরোপুরি তদন্ত শেষে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীদের আনুষ্ঠানিক জানানো হবে।

সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব নেয়ার তিন দিন পর পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার প্রাথমিক তদন্তের বিষয়গুলো উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে সোনাগাজীর ওসিসহ স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

বর্তমান কমিটিও ঘটনার প্রকৃত কারণ উৎঘাটনসহ প্রশাসনের কোনও ধরনের গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখেন। তদন্ত কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করবেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারির নির্দেশে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

এর আগে গত ১২ এপ্রিল শুক্রবার মানবাধিকার কমিশনের একটি তদন্ত দল তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তারা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নিলে হয়তো নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনা এড়ানো যেত। এ ঘটনার জন্য স্থানীয় প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না।

৬ এপ্রিল নুসরাতকে মাদরাসার ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টায় মারা যান নুসরাত।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাবি শিক্ষকের নিয়োগ স্থগিত
ডিবি কার্যালয়ে এসে যা জানালেন জবির সেই দুই শিক্ষক
এবার মীমের অভিযোগ গেল রাষ্ট্রপতির কাছে
যৌন হয়রানি : আরও দুই জবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
X
Fresh