• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মৃত্যুর আগে বললেন ‘আমার স্ত্রী-সন্তানদের দেখে রাখবেন’

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

  ২৯ মার্চ ২০১৯, ১৭:২১

বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত শরীয়তপুরের মির্জা আতিকের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার সকালে মরদেহ শরীয়তপুর সদর উপজেলার সারেঙ্গা গ্রামে নিজ বাড়িতে আনার পর এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয় স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। পুত্র শোকে মা পাথর হয়ে বাকরুদ্ধ। মরদেহ শেষবারের মতো দেখার জন্য উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। বাদ জুমা জানাযা শেষে সারেঙ্গা জামে মসজিদের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার সারেঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল কাদির মির্জার ছেলে মির্জা আতিকুর রহমান বনানীর স্ক্যান অয়েল কোম্পানিতে প্রায় ১৫ বছর ধরে এক্সিকিউটিভ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্ত্রী এ্যানি আক্তার পলি (৩০), চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তানহা (১০) ও ছেলে রাফিউর রহমান (৪) নিয়ে ঢাকার মানিকদি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও এফ আর টাওয়ারের ১৩ তলায় কর্মস্থলে যান তিনি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বেলা আনুমানিক ১টার দিকে স্ত্রীকে ফোনে ভবনে আগুন লাগার সংবাদ দেন এবং দোয়া করতে বলেন। ঠিক ১০ মিনিট পরে তিনি ফোনে তার স্ত্রীকে জানায়, পুরো ভবনে আগুন লেগে ধোয়ায় অন্ধকার হয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। আমি শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছি না। হয়তো আমি আর বাঁচবো না। আমার জন্য দোয়া করো।

মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে তার স্ত্রীর বড় ভাই মুকুল খানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে শেষ কথা হয় আতিকুরের। তখন বলেন এখান থেকে বের হওয়ার কোনও রাস্তা খুঁজে পাচ্ছি না। আমার স্ত্রী সন্তানদের দেখে রাখবেন। এর কিছুক্ষণ পর আতিক এর মোবাইল সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আতিকের কাছে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্র থেকে স্বজনদের জানায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে আতিকের মরদেহ নেয়া হয়েছে। সেখানে স্বজনরা গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় আতিকের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে মুকুল খানসহ অন্যান্য স্বজনরা রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ গ্রহণ করেন।

শুক্রবার সকাল ১১টায় আতিকের মরদেহ তার শরীয়তপুর সদর উপজেলার পূর্ব সারেঙ্গা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। বাদ জুমা জানাযা শেষে নিজ গ্রামের সারেঙ্গা জামে মসজিদ কবর স্থানে দাফন করা হয়।

এ ব্যাপারে শৌলপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার বলেন, বৃহস্পতিবার ঢাকার বনানীতে অগ্নিকাণ্ডে আতিকুর রহমান মারা গেছেন। শুক্রবার মরদেহ দেশে আনার পর জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh