• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ক্যামেরা দেখে দৌড়ে পালালেন কোচিং শিক্ষকরা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:৩০

সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পটুয়াখালী শহরে নির্বিঘ্নে চলছে কোচিং বাণিজ্য। অভিযোগ উঠেছে শহরের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক এ কোচিং বাণিজ্য পরিচালনা করছেন।

ফলে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার এইসব কোচিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পটুয়াখালী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লতিফা জান্নাতির নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বিকেলে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আকস্মিক এ অভিযানে হতভম্ব হয়ে পড়েন কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকরা। এ সময় কোনও কোনও শিক্ষক বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে নিজেদের আড়াল করার চেষ্টা করেন। আবার কোনও কোনও শিক্ষক সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখে দৌড়ে পালাতে শুরু করেন।

শিক্ষার্থীরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কোচিংয়ের কথা স্বীকার বলেন, তাদের কাছ থেকে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা নেওয়া হয়। তবে ক্লাসে কম নম্বর দেয়ার ভয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মুখ খুলতে সাহস পাননি।

এদিকে হাতেনাতে ধরা পড়া কোচিং বাণিজ্যের শিক্ষকদের কোনও ধরনের জরিমানা ও শান্তি না দিলেও তাদেরকে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পটুয়াখালী জেলা শহরের অলিতে-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য কোচিং সেন্টার। এসব কোচিং সেন্টারে সকাল সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত চলে বাণিজ্য। এই রমরমা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে পটুয়াখালীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের গুটি কয়েক শিক্ষক। এসব শিক্ষকরা সরকারের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোচিং বাণিজ্য চালিয়েই যাচ্ছেন। এসব কোচিং বাণিজ্যের হোতাদের কাছে অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তারা অনেকটা বাধ্য হয়েই প্রতি বিষয়ে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা দিয়ে কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিচ্ছেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা টাকা দেয়ার বিষয়টি যেন অস্বীকার করে এজন্য কড়া নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে কোচিং কর্তৃপক্ষ। ফলে ক্লাসে কম নম্বরের ভয়ে কেউই মুখ খুলতে রাজি নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী বলেন, সপ্তাহে চারদিন কোচিং সেন্টারে ক্লাস হয়। এজন্য প্রতি বিষয়ে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা দিতে হয়।

সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতি বিষয়ের জন্য স্যারদের এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা দিতে হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আত্মপক্ষ সমর্থন করে সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, শিক্ষার্থীরা পড়তে চায়। অভিভাবকরাও চান তাদের সন্তানরা যেন কোচিং সেন্টারে ক্লাস করে ভালো রেজাল্ট করতে পারে। যে কারণে আমরা কোচিং করাচ্ছি। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে মাত্র ছয়শ’ টাকা করে নিয়ে থাকি।

অপর এক শিক্ষক মাসুদ হাসান বলেন, এ কোচিং সেন্টারে চারজন ক্লাস নেন। চারজনকে প্রতি বিষয়ে তিনশ’ করে টাকা দেয়া হয়। এভাবে ছয়টি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২০০ টাকা নেয়া হয়।

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লতিফা জান্নাতি আরটিভি অনলাইনকে জানান, স্কুলের পোশাক পড়িয়ে কোচিং সেন্টারে ক্লাস করানো হচ্ছে। এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা আর ভবিষ্যতে কোচিং করাবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন। এরপরেও যদি তারা কোচিং করায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কুয়াকাটায় ৫০ মণ শাপলাপাতা মাছসহ ট্রলার জব্দ
‘চলতি বছরই থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি’
সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে
হিটস্ট্রোকে পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
X
Fresh