• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভারত থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জায়গা হলো চাকমারকুল শরণার্থী শিবিরে

টেকনাফ প্রতিনিধি

  ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:৫৫

এবার ভারতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করেছে।

জানা যায়, মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ভয় ও পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নানান সুযোগ সুবিধার খবরে তারা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে। প্রায় দুই মাসে ৩শ’ রোহিঙ্গা পরিবারের ১ হাজার ৫শ’ রোহিঙ্গা নারী পুরুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) তত্ত্বাবধানে কয়েকদিন কক্সবাজারের উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্টের আশ্রয়শিবিরে রাখা হয় তাদের। পরে তাদের একটি বড় অংশকে টেকনাফ উপজেলার চাকমারকূলে অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়। পর্যায়ক্রমে পালিয়ে আসা সব রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী শরণার্থী ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হবে।

জানা গেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী রাখাইনদের নিষ্ঠুর নির্যাতনের মুখে রাখাইন থেকে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতে আশ্রয় নিয়েছে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা। সর্বশেষ ২০১৭ সালের আগস্টের পর ওই রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নারী পুরুষ। আগে পালিয়ে আসাসহ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন ১১ লাখের বেশি।

এবার ভারত থেকে মিয়ানমারে ফেরত ও নানান আতঙ্কে বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে দেশটিতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর ভয়ে ভারত ছাড়ছেন তারা। পালিয়ে আসছেন বাংলাদেশে। প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাসে ভারত থেকে পালিয়ে ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবারের ১ হাজার ৩০০ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ভারত থেকে স্বদেশে (মিয়ানমার) ফেরত পাঠানোর ভয়েই মূলত ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে আসছে এসব রোহিঙ্গা। প্রশাসন বলছে গত বছরের মে থেকে কিছু কিছু রোহিঙ্গা ভারত থেকে আসছিল। এর মধ্যে গত ডিসেম্বর ও চলতি মাসে ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ১ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা এসেছে। তাদের কক্সবাজারের উখিয়ার অন্তবর্তকালীন ট্রানজিট পয়েন্টের আশ্রয়শিবিরে জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তত্ত্বাবধানে তাদের রাখা হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১শ’ পরিবারের ৪৩৮ জন রোহিঙ্গাদের চাকমারকুল ক্যাম্পে আনা হয়েছে। তারা আসার আগে থেকে তাদের জন্য আবাসন সুবিধা তৈরি করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে নুর আলমের স্ত্রী সজিদা (২২) জানান, তাঁর দুই মেয়ে তিন ছেলেসহ দীর্ঘ দিন ধরে জম্বুতে বসবাস করেছিল, কিন্তু ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শরণার্থী শিবিরে ঢুকে আঙ্গুলের চাপ নিতে চায়। এ আঙ্গুলের চাপ নিয়ে এনভিসি কার্ড দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি তারা নানাভাবে রোহিঙ্গাদের হেয় ও অভাব অনটনের মধ্যে অব্যাহত রাখে।

মো. রাহমতুল্লাহ’র (২২) স্ত্রী রাহমা খাতুনের তিন ছেলে রয়েছে। তাদের পিতা কসাই (মাংসের) কাজ করতো। অভাব অনটনের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কাছে চলে আসেন তারা।

কয়েকজন রোহিঙ্গারা জানান, ৮ বছর আগে টাকা উপার্জন করার জন্য দালালে মাধ্যমে ভারত গিয়েছিলেন তারা। আসার সময়ও ৩০ হাজার টাকা প্রদান করে বাংলাদেশে আসতে হয়েছে।
ভারত থেকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ভয় ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা নানাবিধ সুবিধা পেয়ে বসবাস করে যাচ্ছেন এমন খবরে বাংলাদেশে আসে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গারা।

শালবন ক্যাম্পের মাঝি নুর কবির ও উনচিপ্রাং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মাঝি জানান, বেশ কিছু দিন ধরে রোহিঙ্গারা চোরাই পথে ক্যাম্পে আসা শুরু করেছে। ভারতের অসহযোগিতার কারণে এপারে চলে আসছেন বলে জানান তারা।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, বিকেলে তাদের চাকমার কুল শরণার্থী শিবিরে নেয়া হয়েছে। তবে কতজন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সে সংখ্যাটি সঠিক জানাননি তিনি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কক্সবাজার মো. কামাল হোসেন, বলেন, ইতোমধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা এ দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। পাশাপাশি আরও হাজারের উপরে রোহিঙ্গা ভারত থেকে এসে ইউএনএইচসিআরে তত্ত্বাবধানে রয়েছে। অন্যান্য শরণার্থীদের মতো তাদের রাখা হয়েছে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ দেখা যাবে যেভাবে
ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধের হুঁশিয়ারি মেটার
ভারতে ভোট দিতে গিয়ে হিটস্ট্রোকে ৫ জনের মৃত্যু
ভারতীয় তিন কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
X
Fresh