• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মেয়র লোকমান হত্যার ৭ বছর পর মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী

  ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:৫৩

নরসিংদীর জনপ্রিয় পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের সাত বছর চলছে। ২০১১ সালের এক নভেম্বর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ সাত বছর পর মূল পরিকল্পনাকারী মোবারক হোসেন মোবাকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজধানী রডিওএইচএস এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নরসিংদী পুলিশ সুপার সাইফুল্লা আল মানুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে মেয়র লোকমান হত্যার সাত বছর (১ নভেম্বর) উপলক্ষে নরসিংদীতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে জনবন্ধু লোকমান হোসেন ফাউন্ডেশন।

পুলিশ জানায়, মোবারক হোসেন মোবা নরসিংদীর প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেন হত্যা মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তিনি ওই মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী ওই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। গেল ২৫ অক্টোবর মোবারক হোসেন মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন। এতদিন তিনি পলাতক অবস্থায় ছিলেন। নরসিংদীতে তার মালিকানাধীন একটি জমি বিক্রি করতেই তিনি দেশে এসে আত্মগোপনে ছিলেন। পুলিশ তার ওপর নজরদারিতে ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী রডিওএইচএসের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সঙ্গে রেহানুল ইসলাম ভূইয়া লেলিন নামের আরেকজনকে আটক করা হয়েছে। তিনিও বিভিন্ন মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। মোবারক হোসেন মোবা মেয়র লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ আগে দেশ ত্যাগ করেন। এতদিন তিনি মালয়েশিয়াতে আত্মগোপন করে ছিলেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও লোকমানের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১১ সালের এক নভেম্বর পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই সালাহউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

এর মধ্যে এক আসামি মোবারক হোসেন মোবা বিদেশে পলাতক ছিলেন। বাকি ১৩ জনের সবাই গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন। পুলিশ প্রায় আট মাস তদন্ত করে ২০১২ সালের ২৪ জুন সালাউদ্দিনসহ এজাহারভুক্ত ১১ আসামিকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দেয়। তাতে মামলার এজহারভুক্ত তিন নম্বর আসামি শহর আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন, এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি নরসিংদী পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল মতিন সরকার, তার ছোট ভাই শহর যুব লীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম সরকারসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ২০১২ সালের ২৪ জুলাই নরসিংদীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে নারাজি দেন মামলার বাদী কামরুজ্জামান। আদালত ২৫ জুলাই নারাজি আবেদন খারিজ করে অভিযোগপত্র বহাল রাখেন। পরবর্তীতে ২৮ আগস্ট নারাজি আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী। আদালত দুই সেপ্টেম্বর সেই আবেদন গ্রহণ করে চার নভেম্বর শুনানি শেষে ফের নারাজি আবেদন খারিজ করেন। এরপর উচ্চ আদালতে যান বাদী। তিনি ওই অভিযোগপত্র বাতিল করে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মাধ্যমে আবার তদন্তের দাবি জানিয়ে নিম্ন আদালতে বিচারকার্য স্থগিত রাখতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। আদালত বাদীর আবেদনটি আমলে নিয়ে নিম্ন আদালতে বিচার কাজ স্থগিত করে দেন।

প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের ছোট ভাই নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নরসিংদী পৌর মেয়র কামরুজ্জামান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি প্রয়াত মেয়র আমার বড় ভাই লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মোবারক হোসেন মোবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি নরসিংদীবাসীর জন্য কতটা স্বস্তিদায়ক তা বলে বুঝানো যাবে না। তাও আবার লোকমান ভাইয়ের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীর আগের দিন। এ জন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে কৃতজ্ঞ।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চাঁদপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি গ্রেপ্তার 
অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা উধাও, গ্রেপ্তার ৩
টেকনাফে ১০ কৃষক অপহরণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার
চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঘাতক বাসচালক গ্রেপ্তার
X
Fresh