• ঢাকা রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নাতি-নাতনিদের খুব মিস করেন ‘বৃদ্ধাশ্রমের’ প্রবীণরা (ভিডিও)

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৩ জুন ২০১৮, ১৪:৫৬

ছেলে আমার মস্ত মানুষ মস্ত অফিসার

মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার ওপার

নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামি দামি

সবচে কম দামি ছিলাম একমাত্র আমি

ছেলের আমার, আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম

আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম।

নচিকেতা চক্রবর্তীর এই গানের মতোই তাদের জীবন। সন্তান আর পরিবারের জন্য পুরো জীবন খরচ করলেও জীবনের শেষ বিকেলে সেই পিতা-মাতার ঠাঁই হয়েছে প্রবীণ নিবাসে। একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতা ক্রমশ গ্রাস করছে তাদের। রমজানে ইফতার কিংবা ঈদ উৎসব কিছুই ছুঁতে পারে না তাদের। অবশ্য সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ছাড় দেয়ার মানসিকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে হাজার বছরের ঐতিহ্য একান্নবর্তী পরিবার।

রমজানের এই মাসে রাজধানী একটি প্রবীণ নিবাসে ঘুরে দেখা গেছে, এখানে বাস করা মানুষেরা কল্পনায় খেলা করে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে। কিন্তু কল্পনার দেয়াল এতই শক্ত যে সে দেয়াল ভেঙে প্রবেশ করা হয় না বাস্তবতায়।

জীবনের সকল উপার্জন পরিবারের পেছনে ব্যয় করলেও সময়ের ব্যবধানে সেই পরিবারই পর করেছে প্রবীণ নিবাসে থাকা আবু তৈয়ব নামের এক প্রবীণ ব্যক্তিকে। মনে কষ্ট থাকলেও আক্ষেপ নেই তার। তবে পরিবারের কথা ভেবে ছলছল করে উঠে তার দুই চোখ।

আবু তৈয়ব আরটিভিকে বলেন, ‘আমার মতো যেন আর কেউ এখানে না আসে। নিজের ঘর ছেড়ে আসা নিয়ে আমি আক্ষেপ করি না। কি লাভ হবে আক্ষেপ করে। বরং আরও নিজের ক্ষতি হবে। আমার বয়স আরও বেড়ে যাবে।’

আরটিভির এক প্রশ্নের জবাবে আবু তৈয়ব কষ্ট লুকিয়ে হাসতে হাসতে বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে মিস করি। বিশেষ করে নাতি দুটোকে মিস করি বেশি।

আবু তয়ৈব অন্যদেরকে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, ‘সঞ্চয় করেন। সঞ্চয় করলে ছেলের কাছে হাত পাততে হবে না। মেয়ের কাছে হাত পাততে হবে না। কারও কাছে যেতে হবে না। নিজের টাকা দিয়েই নিজে চলা যাবে।’

জীবনযুদ্ধে মানিয়ে চলতে গিয়ে আর শেষ জীবনে আপস করতে পারেননি হামদুল্লাহ ফারুক নামের এক প্রবীণ ব্যক্তি। মানিয়ে নিতে না পেরে শেষ বিকেলে ঠিকানা হয়েছে প্রবীণ নিবাসে।

পরিবার ও সন্তানদের বিষয়ে জানতে চাইলে হামদুল্লাহ ফারুক অভিমান নিয়ে বলেন, লাইফটাতো তাদেরই। এর মধ্যে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকা উচিত নয়। তাদের এনজয়ে আমি কেন প্রতিবন্ধক হতে যাব?

এই রমজানে পরিবারের সকলকে নিয়ে ইফতার করার ইচ্ছে থাকলেও তা আর অদৃশ্য কারণে সম্ভব হয় না এই নিবাসের বাসিন্দাদের। তাই নিবাসের কেন্দ্রীয় আয়োজনের মাঝেই তৃপ্তি খোঁজেন তারা।

এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানী সাদেকা হালিম আরটিভিকে জানান, গ্লোবাল ইকোনমির কারণে রিলেশনগুলোর দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। তারপরেও বন্ধনটাকে কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায় এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

পিতা-মাতার সঙ্গে সন্তানদের ছাড় দেয়ার মানসিকতা তৈরি করতে পারলেই পারিবারিক ভাঙন ঠেকানো সম্ভব বলে মনে করে বিশ্লেষকরা।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাবা-মাকে আর বৃদ্ধাশ্রমে দিতে হবে না : সমাজকল্যাণমন্ত্রী
X
Fresh