• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভালো নেই মুক্তামনি, আশা ছেড়ে দিয়েছে পরিবারও

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

  ১৯ মে ২০১৮, ১৬:১৩

ভালো নেই সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের ১২ বছরের কিশোরী মুক্তা মনি। ব্যথার যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত কান্না-কাটি করছে সে। তার আর্তনাদে সবাই বুঝতে পারে হয়তো হাতের যন্ত্রণা বেড়েছে মুক্তা মনির। আগের চেয়ে তার হাতটি এখন আরও ফুলে গেছে।

মুক্তামুনির হাতের অবস্থা খারাপ দেখে গত ১৫ দিন আগে ডা. সামন্ত লাল সেনের ফোনে কল করেন বাবা ইব্রাহিম হোসেন। এ সময় তিনি মুক্তার দুটি ছবি পাঠানোর কথা বলেন। পরে ডাক্তার শারমিন সুমির ইমোতে দুটি ছবি পাঠান ইব্রাহিম হোসেন। ছবি দেখে তার হাতে অবস্থা খারাপ বলে জানান ডাঃ শারমিন সুমি।

এরপর গত বুধবার সামন্ত লাল আবারও ফোন করে মুক্তমনির খোঁজ খবর নিয়ে তিনি রোজার পরে আবারও মুক্তামনিকে ঢাকায় নিয়ে আরও কিছু পরীক্ষার-নিরীক্ষা করার কথা জানান।

মুক্তামনির ডান হাত ফের ফুলে গেছে। ড্রেসিং করতে দেরি হলেই জন্মাচ্ছে পোকা। ছুটছে দুর্গন্ধ। রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত তার হাতটি আদৌও ভাল হবে কি না, তা বলতে পারছে না কেউই। তার ডান হাত ফুলে গিয়ে ফেটে যাচ্ছে।

সারাদিন শুয়ে শুয়েই দিন কাটছে মুক্তামনির। অনুরোধ রাখতে মাঝে মাঝে হুইল চেয়ারে করে দাদার কবরের পাশে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

মুক্তামনির বাবা সদর উপজেলার বাঁশদাহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন জানান, চিকিৎসকরা তো চেষ্টার কম করেননি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দেখভাল করেছেন। আমরা সত্যি কৃতজ্ঞ। এখনো ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের ডাক্তাররা ফোন করে খোঁজখবর নেন। আমরাও নানা সময়ে দরকার হলে ফোন করি। কিন্তু বর্তমানে তার হাতের অবস্থা আরও খারাপ। ফুলে গেছে। ড্রেসিং করতে দেরি হলেই হাতে জন্মাচ্ছে সাদা পোকা। আর দুর্গন্ধ তো আছেই। আমরা মুক্তামণির আশা ছেড়ে দিয়েছি। এখন আল্লাহ ভরসা।

চিকিৎসা নিয়ে ইব্রাহিম হোসেন আরও জানান, ডাক্তাররা তো সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে আর নতুন করে অপারেশন করার মতো অবস্থা নেই তার। কোন বিকল্প চিকিৎসা আছে কি না তাও জানি না।

কেমন আছে জানতে চাইলে মুক্তামনি এক কথায় বলে, ভাল না। হাতের অবস্থা কি? প্রশ্ন করলে, শুধু হাতের দিকেই তাকায় সে।

গত বছর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রথমে স্বাস্থ্য সচিব তার মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

এরপর সাতক্ষীরা থেকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়। সেখানে মুক্তামনির চিকিৎসায় গঠিত হয় বোর্ড। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে মুক্তামনির হাত রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত। তারপর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করা হয় তার হাতের অতিরিক্ত মাংস পিণ্ড। এরপর মুক্তামনিকে নিয়ে এক মাসের ছুটিতে বাড়ি আসার অনুমতি পায় বাবা ইব্রাহিম হোসেন। কিন্তু পরে আর ঢামেকে যেতে রাজি হয়নি মুক্তামনি। বাড়িতেই কোনো মতে চলছে তার চিকিৎসা।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মুক্তামনিকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর আর আসা হয়নি তাদের। এ সময়টার মধ্যে বেশ কয়েকবার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন ও ডাক্তার শারমিন সুমির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মুক্তার বাবা ইব্রাহিম হোসেন।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh