• ঢাকা সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১
logo

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের চার পিলারে ‘ফাটল’, মান নিয়ে প্রশ্ন

আরটিভি নিউজ

  ২৫ মে ২০২৪, ২৩:০৯

চট্টগ্রামে লালখানবাজারে নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‍্যাম্পের চারটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হওয়ার আগেই এমন ঘটনায় অবাক হয়েছেন অনেকে। নির্মাণকাজের মান নিয়ে উঠেছে নানান প্রশ্ন। তবে প্রকল্প-সংশ্লিষ্টদের দাবি, এগুলো কোনো গভীর ফাটল নয়, হেয়ারলাইন ক্র্যাক। এমন ফাটল যেকোনো নির্মাণাধীন অবকাঠামোতে হওয়া স্বাভাবিক। এতে অবকাঠামোর ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফাটলগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। নকশার ত্রুটি ও স্প্যান বা পিলার দেবে যাওয়ার কারণে এই ফাটল হতে পারে। এটি কতটা ঝুঁকি তৈরি করবে কিংবা এর গভীরতা কতটুকু, তা বের করতে উচ্চতর কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। তবে কাজ শেষ না হওয়ার আগে স্প্যান ও পিলারে এমন ফাটল দেখা দেওয়ায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

৪ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরের লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। গত বছরের ১৪ নভেম্বর এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের ছয় মাস পার হলেও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এখনও গাড়ি চলাচলের উপযোগী করতে পারেনি সিডিএ। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের প্রতিষ্ঠান র্যা ঙ্কন। এক্সপ্রেসওয়ের মূল অবকাঠামোতে ৩৯৪টি পিলার রয়েছে।

নগরের পতেঙ্গা থেকে আসা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি অংশ ওয়াসা মোড়ে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এর আগে লালখানবাজার এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের একটি র্যা্ম্প সরকারি অফিসার্স কলোনির সামনে নেমেছে। নামার র‌্যামম্পের অন্তত চারটি পিলার ও স্প্যানে এ ফাটল দেখা দিয়েছে। পিলার নম্বরগুলো হলো পিআর-১, ২, ৩ ও আপওয়ার্ড পিয়ার বা ইউপিআর-২১।

সরেজমিন দেখা যায়, সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়ের প্রবেশ মুখ থেকে সরকারি অফিসার্স কলোনি পর্যন্ত চারটি পিলারে ফাটলের অংশগুলো জিওব্যাগের কাপড় দিয়ে ঢাকা। এর মধ্যে একটি পিলারে ওঠার সিঁড়ি ছিল। তা দিয়ে ওঠে পিলারে ফাটল দেখা যায়। এ ছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অন্য পিলারগুলোতে কোনো ধরনের মাচা দেখা যায়নি।

এক নম্বর পিলারের (পিআর-১) ফাটল দেখা দেওয়া অংশের ছবি তোলা হয়। ছবিগুলো অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একজন শিক্ষক এবং সরকারি দুটি সংস্থায় কর্মরত দুই প্রকৌশলীকে পাঠানো হয়। তারা ছবিগুলো দেখে প্রাথমিকভাবে বলছেন, এগুলো নিশ্চিতভাবে ফাটল। নির্মাণকাজের সময় কোনো ত্রুটির কারণে এই ফাটল তৈরি হতে পারে।

অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ এবং চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জিএম সাদিকুল ইসলাম বলেন, নির্মাণের সময় কোনো ত্রুটির কারণে ফাটল হয়েছে। এটি নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে কিনা, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে। এজন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করা দরকার। তার পর জানা যাবে ফাটলের গভীরতা কতটুকু এবং কীভাবে এটি মেরামত করা যাবে।

তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, এটি হেয়ারলাইন ক্র্যাক (ফাটল)। নির্মাণের সময় কংক্রিটের আধিক্যসহ নানা কারণে নির্মাণাধীন অবকাঠামোতে এ রকম ফাটল হয়ে থাকে। এটা গভীর কোনো ফাটল বা বড় কোনো কিছু নয়। এটি আমরা ঠিক করে ফেলব।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মনির হোসাইন বলেন, এগুলো গভীর কোনো ফাটল নয়। নির্মাণকাজের সময় নানা কারণে এই ধরনের উপরিতলে (সারফেস) ফাটল হয়, এটা স্বাভাবিক। আর এটি অবকাঠামোগত কোনো ফাটল নয়। কাজ শেষ হওয়ার আগে কোথায় কোথায় এই ধরনের ফাটল বা সমস্যা আছে, তা খুঁজে বের করে ঠিক করা হয়। এগুলো নির্মাণকাজেরই অংশ।


মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শেয়ার হস্তান্তরে স্থিতাবস্থার মেয়াদ বাড়ল
মেট্রোরেলের পিলারে ট্রাকের ধাক্কা
আটকে গেল ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ
ছাত্রলীগের কর্মিসভায় মারামারি, মাথা ফাটলো ৩ শিক্ষার্থীর