• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ‘গোশত সমিতি’

আরটিভি নিউজ

  ১০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৮
নাটোরে গোশত সমিতি
ছবি : সংগৃহীত

ঈদের আগে অস্থির হয়ে উঠেছে মাংসের বাজার। সারাদেশে গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। নিম্নবিত্তদের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে গরুর মাংস। নিম্ন-মধ্যবিত্তও পড়ছেন দুচিন্তায়, এত দাম দিয়ে গরুর মাংস কেনা কঠিন হয়ে পড়ছে। গরুর মাংস কিনতে গিয়ে ঈদের আনন্দ যেন ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে তাদের। ভাটা পড়ছে ঈদের আনন্দে।

তবে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার আশার আলো ব্যতিক্রমী ‘গোশত সমিতি’। সমিতির মাধ্যমে টাকা সঞ্চয় করে, পশু কিনে গোশতের চাহিদা পূরণ করে এলাকার সাধারণ মানুষ। এতে এককালীন টাকা দিয়ে মাংস কেনার চাপ যেমন কমে। আবার নির্ধারিত দামও অনেক কম পড়ে। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গ্রামের পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এই ‘গোশত সমিতি’।

ফজরের পরই শুরু হয় গরু জবেহ। আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে পাড়া-মহল্লা। রাস্তার পাশে দেখা যায় মানুষের জটলা। জায়গায় জায়গায় সাজানো থাকে গোশতের পসরা। এভাবে গরু কিনে ঈদের পূর্ব মুহূর্তে কম দামে গোশত ভাগাভাগি করে। ‘গোশত সমিতি’ এমন উদ্যোগে খুশি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।

নিম্ন আয়ের বেশ কয়েকজন মিলে একটি সমিতি বা সংগঠন তৈরি করে। যার নাম দেওয়া হয় ‘গোশত সমিতি’। সমিতির সদস্যরা সাপ্তাহিক বা মাসিকভাবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করে। ঈদ, শবে বরাত, শবে কদর, যে কোনো উৎসব এবং গ্রামীণ মেলাকে কেন্দ্র করে সেই সমিতির মাধ্যমে জমাকৃত টাকায় গরু কিনে গোশত ভাগাভাগি করে নেয়া হয়। এতে গোশতের দাম বাজারের তুলনায় অনেক কম হয়। কম দামে ভেজালমুক্ত গোশত পেয়ে সমিতির সকল সদস্যদের মুখে দেখা যায় হাসির ঝিলিক।

গোশত সমিতির আইডিয়া নতুন হলেও ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই সমিতি। বাজারে গরুর গোশতের দাম বেশি হওয়ায় মূলত এই সমিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ পদ্ধতিতে গরিুর গোশতের দাম কম পড়ে। পাশাপাশি নগদ টাকা দেওয়ার চাপ থাকে না। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাড়া-মহল্লায় প্রচলন ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাড়া-মহল্লায় ঘুরে গোশত সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জনা য়ায়, তারা সমিতিতে সাপ্তাহিক অথবা মাসিক হারে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখেন। এভাবে জমাকৃত টাকায় কেনা হয় গরু। ঈদের দু-একদিন আগে ক্রয়কৃত পশু জবাই করে গোশত সমিতির প্রত্যেক সদস্য তা ভাগ করে নেন।

এতে ঈদ উদযাপনে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের আর্থিক চাপ যেমন কমে, তেমনি ঈদের আগে সবার বাড়িতে বাড়তি আনন্দ যোগ হয়। সাধারণত এই সমিতিতে ৩০ থেকে ৭০ জন সদস্য হয়ে থাকে।

গোশত সমিতির সদস্য একজন দিন মজুর রহিম (ছদ্মনাম) জানান, ঈদে ধনী গরীব সব পরিবারেই কম বেশি গরুর গোশতের চাহিদা থাকে। দিনমজুরের কাজ করে একসঙ্গে অনেক টাকায় গোশত কেনা কষ্টসাধ্য। গত বছর সন্তানদের গোশত কিনে খাওয়াতে না পেরে এ বছর সমিতির সদস্য হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সদস্যরা দৈনিক ২০ টাকা হারে মাসে ৬০০ টাকা করে জমা রাখেন। বছর শেষে ঈদের আগে সবার জমাকৃত টাকায় গরু কিনে সমহারে বন্টন করা হয়। তাদের গ্রামে এরকম একাধিক সমিতি আছে। কেউ ১০ টাকা, কেউ ২০ টাকা কেউ ৫০ টাকা কমা রাখেন। যারা ধনী তারাও সমিতির সদস্য । তারা বেশি টাকা জমা করেন। বেশি দাম দিয়ে গরু কেনেন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
প্রশংসা কুড়াচ্ছে ‘গোশত সমিতি’
প্রয়াত শিক্ষকের স্মরণে ছাত্রদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ!  
অতিরিক্ত ঠান্ডায় রেললাইনে ফাটল
X
Fresh