• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘তিলোত্তমা মুরাদনগর’ গড়তে সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণ চাই : এমপি জাহাঙ্গীর

আরটিভি নিউজ

  ২৭ মার্চ ২০২৪, ২০:২০
ছবি : আরটিভি

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন পদে মুরাদনগরের কৃতি সন্তানরা কাজ করছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন মুরাদনগরের মেধাবী সন্তানরা। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামী পাঁচ বছরে ‘তিলোত্তমা মুরাদনগর’ গড়ে তুলতে চাই।

বুধবার (২৭ মার্চ) বুয়েট কেমিকৌশল বিভাগের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত মতবিনিময় সভা এবং ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এমপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার। এতে মুরাদনগরের কৃতি সন্তান বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বুয়েটের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম খান। সঞ্চালনা করেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রাজ্জাক। মুরাদনগরের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং বর্তমানে নানা সমস্যা ও সম্ভাবনার উপর ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, মুরাদনগর উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক সন্তান বিসিএস ক্যাডার হিসেবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নানা পদে দায়িত্ব পালন করছেন। মুরাদনগরের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলোকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী আকারে বিভক্ত করে কাজ করতে হবে। সহজে বাস্তবায়নযোগ্য কাজগুলোর দিকে মনোযোগী হতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. মো. হেলাল উদ্দিন এনডিসি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বাস্তবায়নাধীন মুরাদনগরের প্রকল্পগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নেয়া প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন এবং তা সঠিকভাবে ও মানসম্মত হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা প্রয়োজন। এজন্য স্থানীয়দের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট ড. মহিদুস সামাদ খান বলেন, মুরাদনগরে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা স্থাপনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বাংলাদেশের তিনটি গ্যাসক্ষেত্র এই এলাকায় হওয়ায় শিল্প কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান এবং দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে রপ্তানি-নির্ভর শিল্পে সরকারি প্রণোদনার দিকে দৃষ্টি দেয়া এবং চীন, জাপানসহ বিভিন্ন বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) এমডি আব্দুল্লাহ নোমান যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের উপর জোর দিয়ে বলেন, মুরাদনগর উপজেলাকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারলে তা শুধু স্থানীয় চাহিদাই মেটাবে না, ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে হওয়ায় খাদ্যপণ্য রপ্তানিতেও ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।

মুরাদনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ড. আহসানুল আলম সরকার কিশোর তার বক্তব্যে মুরাদনগরের আধুনিকায়নে তার বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্মার্ট উপজেলা কমপ্লেক্সের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে, যেখানে থাকবে ফ্রি ওয়াইফাই জোন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়নের জন্য মুরাদনগরে হাই স্পিড ডাটা কানেক্টিভিটি, শেখ রাসেল আইটি ইউনিভার্সিটি স্থাপন, ইপিজেড স্থাপন, এগ্রো বেইজড প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ানো, নারী কর্মসংস্থান, বেকারত্ব নিরসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন এবং বর্জ্য থেকে জ্বালানি তৈরিসহ নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মো. আব্দুল হাকিম খান বলেন, একটি জনপদকে কয়েক হাজার বছর এগিয়ে দিতে পারে একটি বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি মুরাদনগরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংসদ সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস্ কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল হক, গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. নাছিম খান, বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালক (মহাব্যবস্থাপক-প্রকল্প) মো. বোরহান উদ্দিন, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. আমিরুল ইসলাম খান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. গোলাম ফারুক, বুয়েটের অধ্যাপক ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, অধ্যাপক ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক সাজিদ মুহাইমিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ, ঢাকাস্থ মুরাদনগর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ মুরাদনগরের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন, ঐতিহ্যবাহী শ্রীকাইল কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আধুনিকীকরণ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, মাদকমুক্ত সমাজ গঠন, বেকার সমস্যার সমাধান, যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, মুরাদনগরসংলগ্ন প্রস্তাবিত ঢাকা চট্টগ্রাম রেল প্রকল্প বাস্তবায়ন, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা স্থাপন, শিল্পায়ন ও আধুনিক কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে ‘তিলোত্তমা মুরাদনগর’ গড়ার লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কুমিল্লায় সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায়
কুমিল্লায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
কুমিল্লায় বাসচাপায় একই পরিবারের ৪ জন নিহত
সিএনজিচালককে হত্যায় ২ যুবকের মৃত্যুদণ্ড 
X
Fresh