যে কারণে ছাত্রকে গুলি করলেন শিক্ষক
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে আরাফাত আমিন তমাল নামে এক শিক্ষার্থীকে গুলি করেছেন কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডা. রায়হান শরিফ বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের কুপ্রস্তাব ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন। এ বিষয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি ডা. রায়হান শরিফ কমিউনিটি মেডিসিনের শিক্ষক হওয়ার সত্ত্বেও ফরেনসিক বিভাগে ক্লাস নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া ক্লাস চলাকালীন ছাড়াও প্রায় সময়ই তিনি পিস্তল নিয়ে চলাফেরা করতেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা অন্তত ৩০ জন একসঙ্গে সোমবার দুপুরে ফরেনসিকের ক্লাসে ছিলেন। অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান ক্লাসে বসেই তার ব্যাগে বহন করা রিভলবার লোড করেন। এরপর নানাজনের দিকে তাক করতে থাকে। এক পর্যায়ে রিভলবার থেকে গুলি বের হয়ে তমালের পায়ে লাগে। শিক্ষার্থীরা আহত তমালকে হাসপাতালে নিতে চাইলে তাতেও বাধা দেন শিক্ষক রায়হান। পরে শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে ওই শিক্ষককে ক্লাসরুমে আটকে রেখে তমালকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে ওই পিস্তলসহ নিয়ে যায়।
এক শিক্ষার্থী বলেন, আজ ওই শিক্ষকের ক্লাস নেওয়ার কথা ছিলো না। ফরেনসিকের টপিক ছিল তাতেও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে কিছু ছিলো না। তিনি তমালকে কেন জানি দেখতে পারতেন না। আজ দুপুরেও তমালকে বলেছে, তাকে দেখে নেবে। আমাদের ৩০ জনকে একটা টপিকের জন্য অন্য রুমে নিযে যায়। তারপর অস্ত্র বের করে গুলি চালিয়ে দেয়।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, অনেক আগে থেকেই তমালকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন শিক্ষক রায়হান। এ ছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের ফোনে রাতে ভিডিও কল, কুরুচিপূর্ণ মেসেজ দিতেন তিনি। এ নিয়ে অভিযোগ করলেও কোন সুরাহা হয়নি। উল্টো তার ক্ষোভ বেড়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর।
ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. আব্দুল্লাহ হেল কাফি জানান, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি। অধ্যক্ষ ওপরের মহলকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
অভিযুক্ত ডা. রায়হান শরীফ কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক। আহত তমাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ওই মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বগুড়া পৌর শহরের নাটাই পাড়া ধানসিঁড়ি মহল্লার আবদুল্লা আলামিনের ছেলে।
মন্তব্য করুন