শাসন করায় শিক্ষককে হাসপাতালে পাঠাল ছাত্র-অভিভাবক
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বিনয় কৃষ্ণ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে শাসন করায় ওই শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে বেধরক মারপিট করে গুরুতর আহত করেছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে বেধরক মারপিটের শিকার হয়েছেন বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীরাও।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর প্রধানশিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস ও বিদ্যালয়ের ল্যাব অপারেটর সুদীপ অধিকারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ শিক্ষক, যারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, এদিন সকালে মাত্র একটি খাতা হাতে বিদ্যালয়ে আসে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রীতাশ হালদার। কিন্তু সে এ্যাসেম্বলীতে অংশ না নিয়ে পাশেই আড্ডা দিচ্ছিল বিধায় প্রধানশিক্ষক তাকে বকাঝকা করে। এতে ওই শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ হয়। পরে বিকেলে বিদ্যালয় ছুটি হলে পরিকল্পিতভাবে ওই শিক্ষার্থীসহ তার পরিবার ও অভিভাবকরা শতাধিক নারী-পুরুষ দলবদ্ধভাবে বিদ্যালয় অভ্যন্তরে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষককে বেধরক মারপিট শুরু করে।
এ সময় বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে বিক্ষুব্ধরা তাদেরকেও বেধরক মারপিট করে। এতে প্রধান শিক্ষকসহ ১০-১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী আহত হন। পরে খবর পেয়ে কোটালীপাড়া থানার পুলিশ গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদেরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, শিক্ষার্থী প্রীতাশ হালদার অনেকটা বখাটে প্রকৃতির। তার চলফেরা ও কাজকর্মের মধ্যে চরম উগ্রতা রয়েছে। এর আগেও ওই শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে উগ্র ব্যবহার করেছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার জসিম উদ্দীন শেখ জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস ও বিদ্যালয়ের ল্যাব অপারেটর সুদীপ অধিকারীকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকী আহতদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, দুজনেরই মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ আলম জানিয়েছেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দোষীদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে, এ ব্যাপারে এখনো কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি।
মন্তব্য করুন