নওগাঁয় চালকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
নওগাঁর আজিজুর রহমান (৫০) নামের এক অটোচার্জার চালকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) দিনব্যাপী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ১১ জানুয়ারি পত্নীতলা উপজেলার সাপাহারগামী পাকা রাস্তার ইটভাটার পাশের জমিতে মরদেহ পড়েছিল। এই ঘটনায় ১২ জানুয়ারি নিহতের জামাই আ. রাজ্জাক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। এবং সেই সঙ্গে ছিনতাই হওয়া অটোচার্জার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার হাজরাবাড়ি ফকিরপাড়া গ্রামের আজহার আলীর ছেলে হাদিউল ইসলাম সজিবুর ওরফে জীবন (৩৫) ও গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর মাঝপাড়া গ্রামের মৃত আফছার মোল্লার ছেলে আশরাফুল ইসলাম আশরাফ (৩৭)।
পুলিশ জানায়, ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে পত্নীতলা বাজার এলাকায় পত্নীতলা-সাপাহারগামী পাকা রাস্তার একটি জমিতে আজিজার রহমান নামে এক অটোচার্জার চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি মহাদেবপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত ছফের আলীর ছেলে। কে বা কারা তাকে হত্যা করে তার অটোচার্জার ছিনতাই করে। এই ঘটনায় নিহতের জামাই আ. রাজ্জাক বাদী হয়ে গত ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হকের দিকনির্দেশনায় তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পত্নীতলা ও মহাদেবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের সমন্বয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফফর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে শনিবার সকালে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানার সাতগাড়া গ্রাম হতে হাদিউল ইসলামকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যমতে বগুড়া জেলার সদর থানার পীরগাছা বাজার থেকে আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ছিনতাই করা অটোচার্জারটি আশরাফুলের নিজ মেকানিকের দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে এক নং আসামি হাদিউল ইসলাম আজিজুরকে হত্যা করে অটোচার্জার ছিনতাইয়ের ঘটনা স্বীকার করেছে।
পত্নীতলা থানার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, হাদিউল ও আশরাফুল এদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে। তারা অটোচার্জার ছিনতাইয়ের অপরাধে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নওগাঁ জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান রোববার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
গাজিউর রহমান বলেন, আজিজুরের মরদেহ উদ্ধারের পর তারা প্রাথমিভাবে নিশ্চিত হন যে, ভিকটিমকে হত্যা করে তার অটোচার্জারটি চুরি করা হয়েছে। এরপর তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের একটি চৌকস টিম হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে। কয়েকদিনের পরিশ্রমে অবশেষে এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন এবং এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়। অটো ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
মন্তব্য করুন