• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

৩৮ বছরে কোন ছুটি না নিয়েই অবসরে শিক্ষক

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ৩১ মে ২০১৭, ১৬:০৫

একজন শিক্ষকের ধ্যান-জ্ঞান থাকে শিক্ষা, শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দেশ।

মানুষকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার ব্রতই প্রকৃত শিক্ষকের কাজ। বাহাজ উদ্দিন ফকির (৬০) তেমনই একজন শিক্ষক।

টাঙ্গাইলের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তিনি।

শিক্ষকতার ৩৮ বছরে তিনি একদিনের জন্যও প্রাপ্য ছুটি ভোগ করেননি। বুধবার এই মহান ব্যক্তির জীবনের শেষ কর্মদিবস। এরপর থেকে বাহাজ উদ্দিনকে আর ছুটি নিয়ে ভাবতেই হবে না।

ত্যাগী ও নিঃস্বার্থ এই মহান শিক্ষক ৩৮ বছরে নিজেকে উজাড় করে দায়িত্ব পালন করেছেন। শুক্রবার ও নির্দিষ্ট ছুটি বাদে প্রতিদিনই তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকেছেন।

এমনকি বাবার মৃত্যু, নিজের বিয়ে, স্ত্রীর অসুস্থতা, সন্তানের জন্ম, পারিবারিক সমস্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ- কোনো কিছুই বাহাজ উদ্দিনের বিদ্যালয়ে আসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

এজন্য বাহাজ উদ্দিনকে তার বিদ্যালয় সম্মানিত করেছে পুরস্কার দিয়েছে। এসব ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

বাহাজ ফকির মধুপুর উপজেলার গোপদ গ্রামে কৃষক পরিবারে ১৯৫৭ সালের ১ জুন জন্ম গ্রহণ করেন। টানাটানির সংসার বলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় টিউশনি শুরু করেন।

পরিবার ও নিজের খরচ যোগাড়ের মাধ্যমে খুব কষ্টে ১৯৭৩ সালে মধুপুর রাণী ভবানী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৭৫ সালে মধুপুর কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৭৭ সালে ধনবাড়ী ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএ পাস করেন তিনি।

১৯৭৯ সালে ২২ বছর বয়সে বাহাজ ফকির তৎকালীন শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ১৯৮৮ সালে বিএড করেন। পরে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে সিপিডি-১ ও সিপিডি-২ প্রশিক্ষণ নেন।

১৯৯০ সালে ঈদের ছুটিতে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গুণারীতলা গ্রামের মরহুম কাদের চেয়ারম্যানের মেয়ে শামসুন্নাহারকে বিয়ে করেন।

বিয়ে হওয়ার পর পারিবারিক আনুষ্ঠানিকতায় বিদ্যালয় চালুর পরের দিন শ্বশুর বাড়িতে অনুষ্ঠান। বিদ্যালয়ের চার ক্লাস পর ছুটি নিয়ে বাহাজ চললেন শ্বশুর বাড়ি। রাত ১২টায় পৌঁছে ভোরে আবার রওনা হয়ে বেলা ১১টায় এসে ক্লাস ধরেছেন।

বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বজলুর রশিদ খান বলেন, বাহাজ উদ্দিন ফকিরের এ ত্যাগ সত্যি বিরল ও অনুসরণ যোগ্য। তার অবদান বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা আজীবন কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh