• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রমজানে চট্টগ্রামে লোডশেডিং থাকছে না!

শানে আলম সজল, চট্টগ্রাম

  ২১ মে ২০১৭, ১৩:২৯

চট্টগ্রামে রমজানে আসন্ন রমজানের রোজায় কোনো লোডশেডিং থাকবে না। ইফতার, সেহরি ও তারাবি নামাযের সময় লোডশেডিং কমাতে চট্টগ্রাম নগরে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নিরাপদ করার কাজ অনেকটা শেষ হয়েছে। জেলাতেও কাজ চলছে। রমজানে বিদ্যুৎ ঘাটতি কমাতে জাতীয় গ্রিড থেকে আরো বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। রমজানে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর লোডশেডিং হবে না বলে জানান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রামের পিডিবি প্রধান প্রকৌশলী (বিতরণ) প্রবীর কুমার সেন আরটিভি অনলাইনকে জানান, “রমজানে সেহরি, ইফতার ও তারাবি নামাযের সময় বিদ্যুৎ দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। চট্টগ্রামে তেমন বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। রমজান মাস উপলক্ষে একটু বাড়তে পারে আবার তারাবি নামাযের সময় অনেক মিল ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ থাকবে। তারপরও জাতীয় গ্রীড থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তাই কোনো লোডশেডিং থাকবে না।”

প্রতিবছর রমজান আসলে দেখা যায় লোডশেডিং চরমে। এবছর রমজানের রোজা গ্রীষ্মকালে হওয়াতে প্রচণ্ড রোদ ও তাপদাহ বাড়ার কারণে রোজা রাখতে অনেকটা কষ্ট হবে। গ্রীষ্মকালে রোজা হওয়াতে রোজার সময় অন্যান্য ঋতুর চেয়ে দিনগুলো কয়েক ঘণ্টা বড় হবে।

গরমের দিরে ঘন ঘন লোডশেডিং তাও যদি রমজান মাসে হয় বিশেষ করে সেহরি, ইফতার ও নামাযে তারাবির সময় তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে নগরবাসীরা। নগরীর একটি সরকারি কলেজের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী আবু জহর কামরুল আরটিভি অনলাইনকে জানান, ‘গরমের দিন আসলে নগরীতে ঘন ঘন লোডশেডিং দেখা দেয়। রমজান মাসে যদি বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন বাড়ানো না হয়। ঘন ঘন লোডশেডিং হয় তাহলে রোজা রাখা অনেক কষ্টসাধ্য হবে।’

একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মো. কামাল হোসেন বলেন, আগে গ্রামে বেশি লোডশেডিং হতো। গরমকাল আসলে এখন শহরেও লোডশেডিং দেখা যায়। রমজান মাসেও যদি লোডশেডিং হয় তাহলে রোজা রেখে কাজকর্ম করা ইবাদত করা অনেকটা কষ্টসাধ্য হবে। তাই রমজান মাস আসার আগে যদি নগরীর লোডশেডিং শুন্য শতাংশে আনা যায় সেদিকে নজর রেখে কাজ করার পরামর্শও দেন তিনি।

চট্টগ্রামে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ৯০০ তেকে ৯৫০ মেগাওয়াট। বর্তমানে ঘাটটি আছে ২৫- ৪০ মেগাওয়াট। তবে মীরসরাই থেকে মহানগর, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার পর্যন্ত মোট ১ হাজার থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামে নগরের ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে।

পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে সরকারি ও বেসরকারি ১৪টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। দৈনিক ৬০০ থেকে ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। জাতীয় গ্রীড থেকে পাওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট।

চট্টগ্রামে পিডিবির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান (জনসংযোগ) আরটিভি অনলাইনকে বলেন, চট্টগ্রাম নগরে লোডশেডিং কমালে ২০১৬ সালে থেকে একটি প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চলবে এই উন্নয়ন প্রজেক্ট।

তিনি আরো বলেন, নগরীতে লোডশেডিং হচ্ছে একথাটি সত্য নয়। অনেকে এই কথা ভুল বলে থাকে। আমাদের চাহিদার মাত্র ৪ শতাংশ বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। তার গরমের দিনে গ্যাসের শঙ্কট ও পানির অভাবের কারণে। চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গ্যাসের চাহিদা ১৩৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের। কিন্ত যোগান পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২৫-৩০ মিলিয়ন ঘনফুটের। এদিকে কাপ্তায় হৃদে পানির গভীরতা কমে যাওয়াতেও বিদ্যুৎ উৎপান কম হচ্ছে। তারপরও নগরীর বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে জাতীয় গ্রিড থেকে ২০০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে।

মনিরুজ্জামান আরো বলেন, চট্টগ্রামে যেগুলো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও ট্রান্সফর্মার রয়েছে তা অনেক পুরনো। বিগত ১ যুগের বেশী সময় ধরে এই সরঞ্জামাদি দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সপ্তাহে তিন-চার দিন করে ঝুকিপূর্ণ লাইনগুলোতে কাজ করার কারণে নগরের কিছু কিছু পয়েন্টে কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ দেয়া যায় না। এটা লোডশেডিং এর মধ্যে পড়ে না বলেও জানান তিনি।

এদিকে চট্টগ্রামের পিডিবি প্রধান প্রকৌশলী (বিতরণ) প্রবীর কুমার সেন আরটিভি অনলাইনকে জানান, 'শনিবার চট্টগ্রামের শিল্পকারখানা, মিল মালিক ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রমজান মাসের বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকদের বলা হয়েছে, তারা যেন অপ্রয়োজনে বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে। যেমন অতিরিক্ত লাইটিং, এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহার। যদি সবাই সচেতন থাকেন তাহলে লোডশেডিং একেবারে হতো না। রমজানে কোনো লোডশেডিং থাকবে না তবে সংযোগ লাইনে সমস্য থাকলে সেটা অন্যকথা।

আর/এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh